কোহলি নয়, প্রয়োজন রাব্বির মানসিকতা
নিউজিল্যান্ড সিরিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টেও পঞ্চম দিনে ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যর্থতায় আরেকটি সম্ভাব্য টেস্ট ড্র করার সু্যোগ হারিয়ে পরাজয় বরণ করে নিল বাংলাদেশ দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট এবং হায়দরাবাদ টেস্ট, পিচ ও কন্ডিশনের পরিবর্তন হলেও দুটি ম্যাচেই পঞ্চম ও শেষ দিনে বাংলদেশের সামনে ছিল একই সমীকরণ – মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থেকে জয়ের সমান ড্র আদায় করে নেয়া।
যেখানে এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের খোলসবন্দী করে ফেলেন এবং রানের হিসাব ভুলে শুধু বল খেলার হিসেব কষেন, সেখানে আমাদের ব্যাটসম্যানরা আগ্রাসী ব্যাটিং করে প্রতিপক্ষকে নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। কখনো তেড়েফুঁড়ে খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছেন, আবার কখনো বোকার মত প্রতিপক্ষের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন। আক্রমণই সেরা রক্ষন – এই মূলমন্ত্রেই যেন বিশ্বাসী আমাদের ব্যাটসম্যানরা। ম্যাচ যায়, সিরিজ যায়, তবে আমাদের ব্যাটসম্যানররা আর ভুল থেকে শিক্ষা নেননা।
এবার আসা যাক গতকাল নিজেদের ‘বেসিক’ বিরোধী ব্যাটিংয়ের সপক্ষে দলনায়ক মুশফিকুর রহিমের মন্তব্য প্রসঞে। প্রথম ইনিংসে অসাধারণ এক ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াইয়ে থাকা অবস্থায় অধিনায়ক নিজেই উচ্চাভিলাষী এক শট খেলে উইকেট বিসর্জন দিয়ে এসেছেন। পঞ্চম দিনে সবার আশংকা ছিল সাকিবকে নিয়ে যিনি অনেকটা ধারাবাহিকভাবে বাজে শট খেলে আউট হচ্ছিলেন।
তবে এদিন সাকিব আউট হয়েছেন দিনের সেরা বলে। তবে স্বভাববিরুদ্ধ এক শট খেলতে গিয়ে সাকিবের ভুলটা করলেন মুশফিক। ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মারার পর চতুর্থ বলেও বাউন্ডারি মারতে গিয়ে অশ্বিনের বলে আউট হলেন তিনি। ধারাভাষ্যকক্ষে বিস্ময়, একি শট খেললেন মুশফিক! তবে বিস্ময়ের বাকি ছিল আরো। ১৪ মাস এবং ১১ ইনিংস খেলার পর অর্ধশত রানের দেখা পাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল তিনি হয়ে উঠতে পারেন আরেক ডু প্লেসিস। তবে তার আর হলো কই?
প্রায় ঘন্টা তিনেক সময় উইকেটে কাটিয়ে দেয়ার পরও ইশান্ত শর্মার নিরীহ এক বাউন্সারে আগ্রাসী ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন লং লেগে। প্রশ্ন জাগে আসলেই কি আমাদের ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছিলেন নাকি নিজেদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে নেমেছিলেন? ম্যাচ শেষে এই প্রশ্নের জবাবে নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে মুশফিকুর রহিম জানালেন শুধু ডিফেন্ড করে ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব হতোনা।
তবে, আরো বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে বললেন বাংলাদেশ দলে বিরাট কোহলির মত কোন ব্যাটসম্যান তো নেই যে বেসিক মেনে খেলেও এই ম্যাচ ড্র করা সম্ভব হত! এই যুক্তিও কি মেনে নেওয়ার মত? ১২০ ওভার খেলে ম্যাচ ড্র করতে আপনার যদি বিরাট কোহলির মত খেলোয়াড় লাগে তবে ১৭ বছর ধরে টেস্ট খেলার শিক্ষাটা কি আমাদের?
আপনি যখন ম্যাচ বাঁচাতে নামবেন, তখন সব ভুলে আপনি শুধু ডিফেন্ডই করবেন, যা করতে কোহলির প্রয়োজন হয়না। প্রয়োজন শুধু মানসিকতার যা এই দলে কেবল একজনই দেখাতে পেরেছেন। আরও মজার ব্যাপার হল তিনি কোনো স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান নন।
তবে এটই একই সাথে হতাশার বিষয়। দলের ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান কামরুল ইসলাম রাব্বি সাধারণ বেসিক মেনেই অশ্বিন-জাদেজার স্পিন এবং যাদব-শর্মাদের পেস-তাণ্ডব সামলে খেলে ফেললেন ৭০ টি বল। আর রান? মাত্র ৩! এজন্য রাব্বিকে তো কোহলি হতে হয়নি। তিনি শুধু মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন। কিন্তু হায়, তিনি তো ব্যাটসম্যান নন!
রাব্বি যেভাবে ব্যাট করেছেন, স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের একজনও যদি সেভাবে ব্যাট করতেন, অনায়াসে ম্যাচটি ড্র করতে পারতো বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ দল ম্যাচ হেরেছে ২৫ ওভার বাকি থাকতে। বলের হিসেবে সেটি ১৫০। অন্যদিকে রাব্বি এবং আরেক টেল এন্ডার মিরাজ মিলেই খেলেছেন ১৩১ বল। টপ কিংবা মিডল অর্ডারে দুজন ব্যাটসম্যানও সমানসংখক বল খেলতে পারলেই ম্যাচটি ড্র করে ফেলত বাংলাদেশ। সেটা হয়নি।
হয়নি দলে কোহলির মত ব্যাটসম্যান নেই বলে নয়, হয়নি আমাদের ব্যাটসম্যানদের মানসিকতার অভাবে। কোহলির মাঝে যে মানসিক দৃড়তা রয়েছে তা পরিলক্ষিত হয়েছে বোলার রাব্বির ব্যাটে। সুতরাং পরিবর্তন আনুন মানসিকতায়, নিজেরাই হয়ে উঠবেন কোহলি।-খেলাধুলা
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন