ক্যামেরায় যেভাবে ধরা পড়ল হেলিকপ্টারের বিধ্বস্ত হবার দৃশ্য (ভিডিও সহ)
যু্ক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন স্টেটের রাজধানী ম্যাডিসন থেকে হাওয়াই স্টেটে ভ্রমণরত পর্যটক শন উইনরিচ এক লোমহর্ষক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত পার্ল হারবারের ছবি তুলার সময় আকাশ থেকে একটি হেলিকপ্টারের পানিতে আছড়ে পরা এবং বিধ্বস্ত হওয়ার পুরো সময়টার ভিডিও ধারণ করেন তিনি। দুর্ঘটনাটিতে ৫ আরোহীর কারও মৃত্যু না হওয়ায় ভীতি জাগানিয়া ক্ষণটুকু বিষাদময় হয়নি।
প্রতিদিন হাজারো পর্যটককে আকৃষ্ট করা স্থানটির দিকে হেলিকপ্টারটিকে এগিয়ে আসতে এবং ক্রমেই নিচু হয়ে পানির দিকে পতিত হতে দেখে ভিডিও করা শুরু করেন তিনি। তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম, যাই হোক এটি একটি অসাধারণ ভিডিও হবে কিন্তু হঠাৎ করেই তা আকাশ থেকে পানিতে বিধ্বস্ত হয়।
বিধ্বস্ত হওয়ার পরে তিনজন বয়স্ক মানুষের মাথা পানির উপরে উঠে পরে এবং চতুর্থজনের মাথা ভেসে উঠে। উইনরিচ শুনতে পান পঞ্চমজন হেলিকপ্টারে আটকা পরেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনকে হেলিকপ্টার থেকে বেড়িয়ে আসতে এবং তীরের দিকে সাঁতরে আসতে দেখেন উইনরিচ।
তীর থেকে ২০ ফিট দুরে পর্যটক কেন্দ্রের লনের কাছেই বিধ্বস্ত হওয়া আকাশযানটিতে আরোহী পাঁচজনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হনলুলুতে চিকিৎসকেরা ১৬ বছর বয়সী গুরুতর আহত আরোহীকে চিকিৎসা করছেন। একজন মহিলা (৪৫) এবং পুরুষকে (৫০) স্থিতিশীল অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও পাইলটসহ অন্য দুজনের অবস্থা তাৎক্ষণিভাবে জানা যায়নি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর জাপানের আক্রমণে ১ হাজার ১৭৭ জন নাবিক এবং মেরিনের নিহত সদস্যদের সম্মানে স্মৃতিসৌধ এবং পার্ল হারবারের পর্যটক কেন্দ্রের কাছে বৃহস্পতিবার সকালে দ্য বেল ২০৬ এয়ারক্রাফট বিধ্বস্ত হয় এবং ডুবে যায় বলে নিশ্চিত করেন ইউএস নেভির মুখপাত্র আগ্নেস তাউইয়ান।
হনলুলু জরুরি সেবা বিভাগের মুখপাত্র শেন এনরাইট বলেন, আমরা আরোহীদের উদ্ধার করার জন্য আশেপাশের নিরুদ্যোগ দর্শকদের পানিতে নামতে বলেছিলাম। ট্যুর গাইড ক্রিস গার্ডেনার পর্যটক কেন্দ্রে থাকার সময়ে বিধ্বস্ত হওয়ার শব্দ শুনতে পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে পানিতে ঝাপিয়ে পরেন।
তার বয়ানে, এছাড়াও একজন নেভির নাবিক, একজন ফেডারেল পুলিশ অফিসার এবং অপর আরেকজন ডুবতে থাকা হেলিকপ্টারের কাছে যান। সেখানে তারা সিটবেল্টে আটকে থাকা এক কিশোর যাত্রীকে ছুরির সাহায্যে মুক্ত করেন। সহজাত প্রবৃত্তিতেই গার্ডেনার দুর্ঘটনাগ্রস্তদের উদ্ধারে ঝাপিয়ে পরেছিলেন জানিয়ে বলেন, পানিতে ছড়িয়ে পরা ফুয়েলে তার চোখ এখনও জ্বলছে।
উইনরিচের মেয়ে জাসটিস বলেন, তিনি হেলিকপ্টারটিকে পানিতে নিমিষেই ডুবে যেতে দেখেন। “এটা খুব স্বাভাবিকভাবেই আসছিলো। কোন ধরণের অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করিনি। এটা এভাবেই পানির নিকটবর্তী হচ্ছিলো এবং নিচে চলে যায়। মানুষের এত কাছে হেলিকপ্টারকে দেখে তিনি বিস্মিতও হয়েছিলেন। পানির দিকে ধেয়ে আসতে থাকলে তিনি হেলিকপ্টারটির পেছন থেকে কালো মত কিছু বের হতে দেখছিলেন এবং তা মৃদুভাবে কাপছিলো।
ফেডারেল রেকর্ডে দেখা যায় হেলিকপ্টারটি হাওয়াই, কাইলুয়ার জেফারি গেবহার্ডের নামে রেজিস্টার করা। তাৎক্ষণিকভাবে তার মন্তব্য জানা যায় নি। নেভির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, হেলিকপ্টারটি জেনেসিস এভিয়েশনের। এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় হাওয়াই দ্বিপপুঞ্জের অন্যতম ওয়াহুতে পর্যটক পরিবহন করে তারা। গেবহার্ড ১৯৯৯ সাল থেকে জেনেসিসে রয়েছেন।
ফেডারেল এভিয়েশন প্রশাসনের তদন্ত দল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড তদন্ত কর্মকর্তা শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
এই বছর ওয়াহুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার দ্বিতীয় উদাহরণ বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি। জানুয়ারির ১৪ তারিখে দুইটি সামরিক হেলিকপ্টার সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জন হাওয়াই ভিত্তিক মেরিন নিহত হন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন