ক্রিকেটার সন্তানকে সন্ত্রাস ভাড়া করে রাস্তায় ফেলে পেটালো জন্মদাতা বাবা!
বাংলা সিনেমায় ভিলেনদের সেই নিষ্ঠুরতাকেও রীতিমত হার মানালো এই গল্প! জন্মদাতা বাবা যে কিনা হাজারো বিপদের মাঝে সন্তানকে আগলে রাখবে, সেটা না করে উল্টো সে নিজেই সন্ত্রাস লেলিয়ে দিয়ে সন্তানকে মার খাওয়ালো! আবার চাঁদা চেয়ে হুমকি দিলো! চোখ কপালে ওঠার মত কথা শোনালেও ঠিক এমনটাই ঘটেছে। এমন জঘন্য ঘটনার শিকার আর কেউ নন, বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপে মাঠ মাতানো ক্রিকেটার সালেহ আহমেদ শাওন। যাকে কিনা হোম অব ক্রিকেটের দর্শকরা শাওন গাজী নামেই চেনে।
গেলো যুব বিশ্বকাপে মেহেদি হাসান মিরাজের সতীর্থ ছিলেন এই শাওন। জাতীয় লিগ খেলতে তিনি যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই এমন হামলার শিকার হন তিনি।
গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে তাঁর নিজ গ্রাম পটুয়াখালীর খালিশপুরে এমন হামলার শিকার হন তিনি। রনি, রফিক, রুবেল, সৌরভ ও নূর আলম মিলে মারধর করেছে শাওনকে। তাঁর মাথায় ইট দিয়েও আঘাত করে সন্ত্রাসীরা।
এর পেছেনে রয়েছেন শাওনের বাবা মতি গাজী। এ ব্যাপারে তরুণ এই ক্রিকেটার বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছেন আমার বাবা মতি গাজী। এর কারণ হচ্ছে, এখন আমি ক্রিকেট খেলে কিছু টাকা আয় করছি, তা আমার বাবার নজরে পড়েছে। আর এই টাকায় ভাগ বসাতে চাইছেন তিনি। তাঁর কথায় রাজি হচ্ছি না বলেই সন্ত্রাস লেলিয়ে দিয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়েছেন।’
অথচ এই বাবাই নাকি শাওনদের খোঁজ খবর নিতেন না। এ সম্পর্কে তরুণ এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আমার মাকে রেখে চলে গেছেন। আমরা বড় হয়েছি মামা বাড়িতে। আমার এই অবস্থানে আসার পেছনে তাঁর কোনো অবদান ছিল না। অথচ এখন আমার রোজগারে ভাগ বসাতে চাইছেন তিনি।’
সন্ত্রাসীদের কাছেই জানতে পারেন তাঁর বাবা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ব্যাপারে শাওন বলেন, ‘এর আগেও কয়েকবার আমার ওপর এমন হামলা চালিয়েছেন আমার বাবা। কিন্তু বাবা বলে কাউকে কিছু বলিনি, শত হোক আমার জন্মদাতা তো। হয়তো এক সময় বুঝতে পারবেন এমনটা আশা করেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শাওন বলেন, ‘আসন্ন প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি আমি। পারিশ্রমিকের একটা অংশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তা হয়তো এলাকার মানুষজন জেনে যায়। তাই সন্ত্রাসীরা আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করি। এর পরই তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। পরে জেনেছি এর পেছনে আমার বাবা জড়িত রয়েছেন। আমি এর বিচার দাবি করছি।’
তবে ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা এখনো ভুলতে পারছেন না। শাওন জানালেন, ‘ওদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সত্যি বলতে কী যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তারা এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। যে কারণে মামলা করতে বেশ ঝামেলা হয়েছে। আমার পরিবারের মানুষদের রাত ১১টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রাখে পুলিশ। শুরুতে মামলা নিতে চায় নি। আমি তখন হাসপাতালের বেডে। এসময় মিডিয়া আর বিসিবিতে জানালাম। এরপরই মামলা নেয়। এখন পর্যন্ত দুই জনকে পুলিশ গ্রেফতার করছে।’
ঘটনা পেছনে ফেলে ২০ ডিসেম্বর থেকে ফের শুরু হওয়া জাতীয় লিগে চোখ রাখছেন এখন শাওন গাজী। বলছিলেন, ‘আমি সব ভুলে ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে চাই। দেশকে অনেক কিছুই দেয়ার আছে আমার। কিন্তু ওই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তিও দাবী করছি। আর আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন কোন মানুষের সঙ্গেই না হয়।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন