শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর সন্তোষপুরের বানররা!

গাছের মগডালে কিংবা মাটিতে নেমে এসে বানরগুলো চিৎকার চেঁচামেচি করছে। দর্শনার্থীদের হাতে খাবার দেখলেই আবার দল বেঁধে খাবারের জন্য লাফালাফি করছে। ‘বানর অভয়ারণ্য হিসাবে’ পরিচিত ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামে এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। বুঝতে অসুবিধা হয় না ক্ষুধার যন্ত্রণায় বানরগুলোর এ দুর্দশা। অনেকদিন ধরেই গ্রামের বানরগুলো ভুগছে চরম খাদ্য সঙ্কটে।

প্রকৃতির অন্যতম এ প্রাণী দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষেরা খাদ্য হিসেবে মুড়ি, পাউরুটি, বিস্কুট ও বাদাম নিয়ে আসছে। এসবের পাশাপাশি বনবিটের কর্মকর্তাদের দেয়া খাবারে দিন পার করছে প্রকৃতির অনন্য সম্পদ এখানকার বানরগুলো।

ময়মনসিংহের দক্ষিণে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম এলাকার নাওগাঁও ইউনিয়নের অতি জনপ্রিয় একটি জনপদের নাম সন্তোষপুর। যা সন্তোষপুর বনবিট ও রাবার প্রকল্প এলাকা নামে সকলের কাছে অতি পরিচিত স্থান। বনাঞ্চল এলাকাসহ রাবার প্রকল্পের সবুজের প্রাকৃতিক লীলাভূমি যে কাউকেই মুগ্ধ করে।

এখানে বিভিন্ন প্রজাতির দৃষ্টিনন্দন বানরের দেখা পাওয়া যায়। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথিকের ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে যায় বানরের দৌড়ঝাঁপে।

আবার ঝামেলাও কম পোহাতে হয় না বানর দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীসহ স্থানীয় জনসাধারণের। রাস্তায় কোনো পথিকের দেখা পাওয়া মানেই তাদের চোখে যেন খাবার হাতে কোনো দেবদূতের আবির্ভাব!

এ অবস্থায় সকলের কাছে একটি প্রশ্নই জেগে উঠছে-বনাঞ্চলের এই ক্ষুধার্ত বানরগুলো খাবারের জন্য যাবে কোথায়? সম্প্রতি রাবার প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার ভেতরে যাওয়ার পর সন্তোষপুর বনবিট অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক ক্ষুধার্ত বানরের করুণ দৃশ্য।

বানরগুলো সবাই একত্রে জড়ো হয়ে অফিসের সামনে লাফালাফি করছে খাবারের জন্য।

সেসময় বানর দেখতে আসা বিভিন্ন এলাকার শিশুসহ যুবক-যুবতী ছিল, তারা আসার সময় বানরের জন্য খাদ্য হিসেবে মুড়ি, পাউরুটি, বিস্কুট ও বাদামসহ অন্যান্য শুকনো খাবার নিয়ে এসেছে। হাত বাড়িয়ে এসব খাবার দিলে তখন সহসাই বানরগুলো তাদের কাছে এসে সঙ্গ দেয়। দেখলে মনে হয় এসব মানুষগুলো বানরের হাজার বছরের চেনা ও পরিচিত মুখ।

বনবিট অফিসকে ঘিরে থাকা এসব বানরের দিকে তাকালেই বুঝা যায়, তারা কত না কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। অফিসের রান্নার কাজের বুয়াকে বিভিন্ন গাছের ফল কেটে বানরগুলোকে খাবার দিতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ এ বানরগুলোকে তাড়াও করছে। তাড়া খেয়ে বানরগুলো আরও জোরে চিৎকার করে তাদের দিকে লাফিয়ে আসে।

আরেকটু সামনে এগুতেই দেখা যায়, আরেকজন খালি গায়ে লাঠি হাতে বসে আছে, আর তাকে ঘিরে বসে আছে ২০ থেকে ২৫ টি ছোট বড় বানর।

বনবিট অফিস রুমের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, বিট কর্মকর্তার থাকার চৌকির উপরে বানর, মাচার উপরে, টেবিলের উপরে, চৌকির তলায় ক্ষুধার্ত বানরগুলো খাবারের সন্ধান চালাচ্ছে।

স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, অনেকে বেড়াতে আসলে বানরগুলো খাবারের জন্য তাদের ঘিরে ফেলে। সবাই বুঝে ফেলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। ওরা আচর ও কামড় দিবে না। তার কাছে বানরগুলোর খাবারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশে পাশের বাড়িগুলো থেকে এই সব ক্ষুধার্ত বানরগুলোর কথা বলে মৌসুমওয়ারি আনারস, শষা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন খাবার নিয়ে এসে এদের খাবারের ব্যাবস্থা করা হয়ে থাকে।

এছাড়াও স্থানীয় নাওগাও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকসহ এলাকার বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য এনে এদের খাবার দেয়া হয়। কিন্তু তাতেও এদের খাদ্যের চাহিদা মোটেও পূরন হয় না। কারণ এখানে বানরের সংখা অনেক।

প্রতি বছর বাচ্চা প্রসব করে ১৫ থেকে ২০ টি বানর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেড়শ’র বেশি বানর রয়েছে বলে তিনি জানান।

অসহায় ও ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরানো এ বানরগুলো যখন আর কোনো কুল খুঁজে পায় না, তখন তারা আশপাশের এলাকার বাড়িগুলোতে খাদ্যের জন্য তা-ব চালাতে বাধ্য হয়। তখন রান্না ঘরে ঢুকে রান্না করার বিভিন্ন শাক সবজী চুরি করে নিয়ে আসে। মাঝে মধ্যে কোনো গৃহস্থের নজরে পড়লে বানরগুলোকে সইতে হয় নিপীড়ন-অত্যাচার।

কেউ লাঠি, দা, শাবল দিয়ে আঘাত করে থাকে। প্রায়ই বানরগুলো আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তাক্ত অবস্থায় বনবিট অফিস প্রাঙ্গনে ফিরে আসে। তখন এ করুণ দৃশ্য দেখে অনেকেই অশ্রুসিক্ত হন বলে জানান।

সূত্র জানায়, বছর তিনেক আগে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বানরের দুটি বাচ্চা মারা যায়। বন সম্পদ রক্ষায় নিয়োজিত কর্মকর্তারা আরও জানান, আমাদের বেডরুমে বানরগুলোর জন্য কাপড়-চোপড় রাখতে পারি না। ওদের খাবার না দিলেই বিভিন্ন সময়ে রুমের ভিতর মলমুত্র ত্যাগ করে। তার পরও সহ্য করতে হয়। কারণ ওদেরও আছে জীবন, আছে ওদের পেটে ক্ষুধার যন্ত্রণা। এ ছাড়াও সমগ্র বনাঞ্চল ঘুড়ে একটি ফলজ গাছ খুঁজে পাওয়া ভীষণ ভার।

জানতে চাইলে সেেন্তাষপুর বিট কর্মকর্তা আরজু মিয়া জানান, আমাদের এখানে ৩ থেকে ৪’শ বানর রয়েছে। এ বানরগুলো ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মজু বানরগুলোর খাওয়ানোর জন্য ১’শ বস্তা চাল দিয়েছেন। কিন্তু এতো বিশাল পরিমাণ বানরের জন্য এ চাল যথেষ্ট নয়।’ তাই সরকারিভাবে বানরগুলোর প্রয়োজনমত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় বুধবার (১৯ জুন) সকালে ক্ষেতের আইল কাটাকেবিস্তারিত পড়ুন

ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর

সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন

ময়মনসিংহে ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষে জনসচেতনামূলক সভা 

ভূমি সংক্রান্ত সকল অনলাইন সেবার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে “স্মার্টবিস্তারিত পড়ুন

  • ময়মনসিংহের এমপি শান্ত দলীয় বিরোধে পদত্যাগের ঘোষণা 
  • গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
  • ময়মনসিংহের অবৈধ সম্পর্কের পরিণতিতে ভাবী দেবরের বিয়ে !!
  • ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
  • ময়মনসিংহে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবক নিহত
  • ময়মনসিংহে লিচু দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা
  • গার্মেন্টসকর্মী ধর্ষণের দায়ে দু’জনের যাবজ্জীবন
  • এক কলাগাছে শতাধিক মোচা
  • ময়মনসিংহে ইমামকে কুপিয়েছে মাদ্রাসার ছাত্ররা
  • ময়মনসিংহে আহত ইমামের ঢামেকে অপারেশন চলছে
  • অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে জোর করে গর্ভপাত, অভিযোগ ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে
  • ময়মনসিংহে প্রথম মহিলা কামিল মাদ্রাসা