খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করে আগেও গণপিটুনি খেয়েছে বদরুল
কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ঠেলে দেওয়াই বদরুলের প্রথম পাশবিকতা নয়, এর আগেও সে খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করে গণপিটুনির শিকার হয়েছে।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লী মনিরগাতি গ্রামের মৃত সৈয়দুর রহমানের ছেলে সে। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র এই বদরুল। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও সে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
নিজ এলাকায় অনেকটা ভাল মানুষের লেবাস পরা বদরুল ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের ঘোপাল এলাকায় খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করতে গিয়ে এলাকাবাসীর গণপিটুনির শিকার হয়। কিন্তু সেসময় চতুর বদরুল এটিকে জামায়াত-শিবিরের হামলা বলে প্রচারণা চালায়। প্রচারণার সফলতা হিসেবে জায়গা করে নেয় শাবির ছাত্র রাজনীতিতে। এ সুযোগে নিজ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধাও নেয় বদরুল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দিনমজুর পরিবারের সন্তান বদরুল চার ভাই এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। চার বছর আগে তার বাবার মৃত্যু হয়। স্থানীয় আলহাজ্ব আয়াজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক ছিল বদরুল। দেশব্যাপী আলোড়ন তোলা রোমহর্শক ঘটনা জানার পর বদরুলকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় মুনিরগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নতুনবাজার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করে বদরুল। গোবিন্দগঞ্জ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ভর্তি হয় শাবিতে। বড় হয়ে চাকরি করে টানা পোড়নের সংসারের হাল ধরবে এই আশায় ছোট ভাইয়েরা বিভিন্নভাবে শ্রম বিক্রি করে তার লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছে।
এদিকে, সন্তানের অপকর্মের সংবাদ শুনে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন বদরুলের বৃদ্ধা মা। কারো সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ না করে বদরুলের খোঁজও নিচ্ছেন না পরিবার ও স্বজনরা। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সুত্র জানায়, সিলেটের হাউসা গ্রামে খাদিজাদের বাড়িতে লজিং থেকে শাবিতে লেখাপড়া করতো বদরুল। তার কুপ্রস্তাবে সায় না দেয়ায় দীর্ঘ সাত-আট বছর ধরে খাদিজার পেছনে লেগে ছিলো সে।
দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বির এ প্রতিবেদককে জানান, শান্ত স্বভাবের বদরুল আগে রাজনীতি করতো না। শুনেছি দুই-তিন বছর আগে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের এক ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সে। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে শাবি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। নৃশংস এই ঘটনায় বদরুলের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে খাদিজার ওপর এমন পৈশাচিক হামলার ঘটনায় কেবল তার নিজ গ্রাম হাউসা নয়, পুরো সিলেটের মানুষ ক্ষুব্দ। দেশবাসী ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পাশবিক এই ঘটনার দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান করেছেন তারা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
দ্বিতীয় দফার বন্যায় সিলেট অঞ্চলে সাত লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি।বিস্তারিত পড়ুন
সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেঞ্চুগঞ্জে দুটি বগি লাইনচ্যুতবিস্তারিত পড়ুন
সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
গত কয়েকদিনের অবিরত হালকা ও ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি এবং ভারতবিস্তারিত পড়ুন