জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা
খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ, পরবর্তী শুনানি ২৫ এপ্রিল
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ২৫ এপ্রিল নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।
আজ রোববার ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার এ সব আদেশ দেন।
এর আগে সকালে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। প্রথমে আদালতে তাঁর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া তদন্ত কর্মকর্তার পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তা নাকচ করে দেন। এখন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তদন্ত কর্মকর্তাকে আবারও জেরা করার আবেদন করলে তাও খারিজ হয়ে যায়।
খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, আবদুর রেজাক খান।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল।
শুনানির পর ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমরা আজ শুনানির শুরুতে তিনটি আবেদন করেছিলাম। প্রথমটি ছিল ফৌজদারি কার্যবিধি ১৭২ ধারা অনুযায়ী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেস ডায়েরি (সিডি) দেখে দেখে সাক্ষ্য দিতে পারেন না। শুধু আইনজীবী সিডি দেখার সুযোগ দেখার পান। আমরা এ ক্ষেত্রে আবেদন করেছি। কিন্তু আমাদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। কিন্তু দুদকের কর্মকর্তাকে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪০ ধারা অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন করেছিলাম। উচ্চ আদালত থেকে ২০০৫ সালে এই তদন্ত কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এ কারণে তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া যেহেতু অবৈধ, সেহেতু তাঁকে পুনরায় জেরা করার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করেছেন। তবে উচ্চ আদালতে আবেদন করার সময় চাইলে আদালত এক সপ্তাহের সময় দেন।’
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা অনুযায়ী আজ খালেদা জিয়ার তাঁর আত্মপক্ষের সমর্থনে বক্তব্য দেওয়া কথা ছিল এবং মামলার যুক্তি তর্ক শুরু হওযার কথা ছিল। কিন্তু আসামি পক্ষ তিনটি আবেদন করেছিল। তাদের দুটি আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। শুধু সময়ের আবেদনটি মঞ্জুর করা হয়েছে। তাঁরা মামলার প্রত্যেক শুনানিতে নতুন নতুন আবেদন নিয়ে এসে সময় নষ্ট করছেন। আমরা আশা করি, ২৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেবেন এবং মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।’
শুনানির সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আলম উপস্থিত ছিলেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তৎকালীন সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন তিনি।
গত বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন