গভীর সমুদ্রবন্দরসহ মেগা প্রকল্পে চীনের বড় বিনিয়োগ আসছে

বাংলাদেশে গভীর সমুদ্রবন্দরসহ যে কোনো মেগা প্রকল্পে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অবকাঠামো, যোগাযোগ ও অন্যান্য খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে চায় সরকার। এজন্য চীনের সঙ্গে আসন্ন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সভায় (জেইসি) দেশটির বিনিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে এটিই প্রথম জেইসি সভা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইআরডি জানায়, আগামী ২২ আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে চীন বাংলাদেশের যৌথ এ সভা। বৈঠকে চীনের বাণিজ্যবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার গাও ইয়ান চীনের প্রতিনিধি দলের নের্তৃত্ব দেবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষে ইআরডির সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন নেতৃত্ব দেবেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সমাপনী বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিশ্ব পরাশক্তি হিসেবে চীনের আবির্ভাবের আকাঙ্ক্ষা এবং ভূরাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা হিসেবে এ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী চীন। বাংলাদেশও অবকাঠামো খাতে দুর্বলতা কাটাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। এ জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের আগ্রহ সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগসহ কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ নিশ্চিত হয়েছে। যোগাযোগ অবকাঠামোসহ বেশ কিছু প্রকল্পেও অর্থায়ন প্রক্রিয়া চলমান। দেশটির বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় এবারের বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ইআরডির কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইআরডির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, চীনের সঙ্গে এই প্রথম বৈঠক নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী ইআরডি। আশা করছি, এ বিষয়ে ভালো কিছু একটা অর্জন করা সম্ভব হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি হয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক যথেষ্ট জোরদার হয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের একটি বিনিয়োগ প্রস্তাব ইতোমধ্যে দিয়েছে দেশটি। ওই প্রস্তাব থেকে বেশ কয়টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে। আগামী অক্টোবরে এ সফর হতে পারে বলে জানা গেছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, এ মুহূর্তে চীনের সঙ্গে প্রধানত তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। এর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করা।
তিনি বলেন, আমাদের বাস্তবায়ন কাজে বিলম্ব হয় এ কারণে নির্ধারিত অঞ্চল স্থাপনের কাজ যদি চীন করে তাহলে এটি অনেক দ্রুত হবে। একই সঙ্গে তাদের দেশে পিছিয়ে পড়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান দ্রুত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জোনে স্থানান্তর করার বিষয়ও চীনকে ভাবতে হবে।
তিনি আরো বলেন, চীন পাকিস্তানকে সম্প্রতি ৫৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ বিলিয়ন ডলারই অবকাঠামো খাতে। ফলে বাংলাদেশেরও চীনের কাছে অবকাঠামো খাতে বড় বিনিয়োগের দাবি করা উচিত।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চীন থেকে বড় অংকের পণ্য আমদানি করে। প্রধান আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে- টেক্সটাইল, যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, সার, টায়ার, লৌহ ও ইস্পাত, সয়াবিন তেল, পাম অয়েল ও গম।
অন্যদিকে চীন বাংলাদেশ থেকে চামড়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, চা, তৈরি পোশাক এবং মৎস্যজাতীয় পণ্য আমদানি করে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

গোলাম পরওয়ার: নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে মহাদুর্যোগ নেমে আসবে
অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ না হলে জাতির জন্যবিস্তারিত পড়ুন

আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র
আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারবিস্তারিত পড়ুন

শুক্রাণু দান করা শতাধিক সন্তানকে সম্পদের সমান ভাগ দেবেন টেলিগ্রাম প্রতিষ্ঠাতা
দান করা শুক্রাণু থেকে যেসব সন্তানের জন্ম হয়েছে সেসব সন্তানকেওবিস্তারিত পড়ুন