গর্ভধারণের নির্মম বর্ণনা দিলেন সেই মা
নিজের বাচ্চাটি দেখেই আঁতকে উঠছেন সেই মা। চিৎকার করে বলেছেন, এ বাচ্চা আমার নয়। শিশুটির বয়স দুদিন হলেও বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন না তিনি।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পিতৃপরিচয়হীন এ শিশুটির জন্ম দেন খাদিজা নামের এ মা। সন্তান প্রসবের দুদিন পর গর্ভধারণের নির্মম বর্ণনা দিলেন তিনি।
শুক্রবার গভীর রাতে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের নিজমাওহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন এই তরুণী। রাতেই স্কুলের উন্মুক্ত বারান্দায় নবজাতকের ওপর শেয়াল হানা দেয়। তখন শেয়ালকে তাড়া করে নবজাতককে রক্ষা করে একটি কুকুর।
শনিবার ভোরে স্থানীয় বাসিন্দা মো. লাল মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান নবজাতক একটি শিশু ও প্রসূতি মা স্কুলের ফ্লোরে পড়ে রয়েছেন। রক্ত শুকিয়ে ফ্লোর লাল হয়ে গেছে। এ দৃশ্য দেখে চিৎকার করতে থাকেন লাল মিয়া। তার চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশী উকিলের মা। তিনি নবজাতক শিশুটির নাড়ি কেটে কোলে তুলে নেন। তিনি প্রসূতি ও নবজাতককে নিজ বাড়ি নিয়ে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেন তিনি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রোববার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রমিজ উদ্দিন স্বপন। তিনি শিশুটির জন্য দুধ, নতুন পোশাক ও ওই তরুণী মায়ের জন্য ওষুধসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনে দেন।
স্কুলের বারান্দায় নবজাতককে শিয়ালের হানা থেকে রক্ষা করায় ওই কুকুরকে নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠছে। কুকুরটির মনিব সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফুল মিয়া।
এদিকে রোববার বিকেলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন গৌরীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রইছ উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নবজাতক ও মাকে চিকিৎসা, আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহযোগিতা দেন।
ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবিবাহিত ওই তরুণী পেশায় ভিক্ষুক। ভিক্ষা করতে গিয়ে একাধিবার নরপশুদের দ্বারা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে গর্ভধারণ করেছেন। তার দাবি, বিষয়টি জানাজানি হলে পরিবারের লোকজন তাকে হত্যার চেষ্টা করে।
নিজের গলায় একটি কালো দাগ দেখিয়ে তিনি বলেন, পেটের আকৃতি বড় হয়ে যাওয়ায় তার ভাবি গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। যার চিহ্ন এখনও রয়েছে। এ জন্য বাড়ি থেকে পালিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া ওই তরুণী নিজের নাম খাদিজা ও বাড়ি মুক্তাগাছা বলে জানিয়েছেন। তবে গ্রামের নাম সঠিকভাবে বলছেন না।
তিনি জানান, তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর গত চার বছর আগে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য ভিক্ষাবৃত্তিতে নামেন।
তরুণী তার পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিলে বলেন, সিলেটে ভিক্ষা করতে গিয়ে প্রথম নির্যাতনের শিকার হন। সেখানে চার তরুণ একটি বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে তাকে গণধর্ষণ করে। এরপর বেশ কয়েকবার নির্যাতনের শিকার হন তিনি, যার ফলে গর্ভধারণ করেন।
তিনি বলেন, ওই অবস্থায় বাড়িতে গেলে বিয়ের আগে গর্ভধারণ করায় তার এক ভাবি তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। পরে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন তিনি। এরপর শুরু হয় তার ভাসমান জীবন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় বুধবার (১৯ জুন) সকালে ক্ষেতের আইল কাটাকেবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষে জনসচেতনামূলক সভা
ভূমি সংক্রান্ত সকল অনলাইন সেবার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে “স্মার্টবিস্তারিত পড়ুন