গৃহবধূকে নির্যাতন, অপরাধ প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম
মেহেরপুর প্রতিবন্ধী শিশুদের যখন স্বাভাবিক শিশুর মতো করেই আদর যত্মে গড়ে তোলার জন্য সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে তখন মেহেরপুরে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম দেয়ার অপরাধে শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে মমতাজ বেগম (৩০) নামে এক মাকে।
শুধু নির্যাতনই করা হয়নি, প্রতিবন্ধী শিশুটির চিকিৎসার খরচ না দেয়ায় মমতাজ বেগম তার গরীব বাবার সীমিত সামর্থ দিয়ে শিশুটির চিকিৎসার চেষ্টা করেন। তবে এক পর্যায়ে অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসা। এমন পরিস্থিতিতে অবুঝ শিশুকে নিয়ে অথৈ সাগরে পড়ে যান অসহায় মা মমতাজ।
প্রতিবন্ধী শিশু ও তার মায়ের প্রতি অমানবিক এই নির্যাতনের ঘটনায় গোটা এলাকায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এরপর বাধ্য হয়ে মা মমতাজ বেগম নির্যাতনকারী শ্বশুর-শাশড়ির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
মামলা দায়ের পরে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) রাতে পুলিশ মমতাজ বেগমের শ্বশুর মকবুল হোসেন (৫৫) ও শাশুড়ি সাবিনা বেগমকে (৫০) তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। মামলার অপর আসামি মমতাজের দেবর আদম আলী পলাতক রয়েছে।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি অতি অমানবিক। গৃহবধূর মামলায় তার শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের। গ্রেপ্তারকৃত মকবুল হোসেন কাজিপুর গ্রামের নাজির হোসেনের ছেলে ও সাবিনা বেগম তার স্ত্রী। আর নির্যাতনের শিকার মমতাজ বেগম গাংনীর বেতবাড়ীয়া গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি মকবুল হোসেনের ছেলে সেলিম রেজার সঙ্গে মমতাজের বিয়ে হয়। প্রথম তিন বছর দাম্পত্য জীবন ভালো কেটেছে। এরপর সেলিমের বাবা-মার কুপ্ররোচণায় তাদের সুখের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। এর মধ্যেই মমতার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে শিশু সন্তান ( ৬)। তবে জন্মের পর দেখা যায় শিশুটি শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। এ সন্তান জন্মের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির রোষানলে পড়েন মমতাজ। শিশুটির প্রতিবন্ধী হওয়ার জন্য তাকে দায়ি করা হয়।
আজ থেকে প্রায় ১৪ মাস আগে ওমানে শ্রমিক হিসেবে পাড়ি জমায় মমতাজের স্বামী সেলিম। জামাইয়ের বিদেশে যাওয়ার টাকাও দেন মমতাজের গরিব বাবা। তবে ওমানে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন সেলিম। শ্বশুর-শাশুড়ির পরামর্শে মমতাজ ও তার একমাত্র সন্তানের খোঁজ-খবর নেয়াও বন্ধ করে দেয় স্বামী।
মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমার বাবার পরিবার গরিব। তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে সন্তানের চিকিৎসা চলছিল। তবে অর্থের অভাবে তাও বন্ধ হয়ে যায়। সন্তানের চিকিৎসা না করাতে স্বামীর পরিবার থেকে বারবার চাপ দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু আমি তো মা, সবাই তাকে ঘৃণা করলেও আমি তো তা করতে পারি না।’ স্বামীর পরিবারে বন্দি জীবনের দুর্দশা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মমতাজ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন