গ্রামের মেয়েদের পোশাক নিয়ে প্রাণে বাঁচল ৬ পুলিশ!
ঘন ঘন বোমার শব্দ, প্রচণ্ড চিৎকার, লাঠি হাতে কখনও জনতার দিকে তে়ড়ে যাচ্ছে পুলিশ আর কমব্যাট ফোর্সের যৌথ বাহিনী। কখনও জনতার ছোড়া ইটের থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ব্যস্ত তারা। এই যখন পরিস্থিতি তখন প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে আছে ৬ জন নারী কনস্টেবল। গুলি-বন্দুক-কাঁদানে গ্যাসের সেল তো দূরের কথা, একটি লাঠিও নেই তাদের হাতে। ঘটনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের।
ভাঙড়ের বাদামতলায় পাওয়ার গ্রিড থেকে খানিক দূরে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। আর পেছনে পড়ে থাকা ৬ নারী পুলিশ কর্মী ভাবছেন কীভাবে রক্ষা পাবেন তারা। ইতিমধ্যেই খবর রটে গেছে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন দুই গ্রামবাসী। বাড়ি বাড়ি ঢুকে পুলিশ গ্রামবাসীদের পিটিয়েছে, হুমকি দিয়েছে বলেও খবর ঘুরছে লোকের মুখে মুখে। দফায় দফায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে উত্তাল পরিস্থিতি।
৬ নারী পুলিশ কর্মী বুঝে ফেলেন যে এই পরিস্থিতিতে সহকর্মীদের দিকে এগোনোর চেষ্টা করতে গেলে আরও বিপদ। বাঁচতে গেলে অন্য পথ ধরতে হবে। তখন তারা উল্টো দিকে উড়িয়াপাড়া-গাজিপুরের পথ ধরেন। কখনও হেঁটে, কখনও দৌঁড়ে, কখনও হোঁচট খেয়ে পড়ে আবারও উঠে কোনও মতে ঢুকে পড়েন গ্রামের ভিতরে। আশপাশের পরিস্থিতি দেখে বোঝার চেষ্টা করেন। ওই গ্রামটি তখন কার্যত পুরুষশূন্য। বাড়ির ছেলেরা সকলে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘লড়াই’ করতে ব্যস্ত। একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন সেই ৬ নারী পুলিশ কর্মী। পুলিশ দেখে হতভম্ব বাড়ির মেয়ে-বৌরা। কিন্তু তাদেরকে আরও অবাক করে দিয়ে আশ্রয় চাইলেন সেই পুলিশেরা।
গ্রামের এক নারীর ভাষায়, “ওদের তখন বিধ্বস্ত অবস্থা। পোশাক অগোছালো। শীতের বিকেলেও ঘেমে নেয়ে শেষ। ”
যে পুলিশের বিরুদ্ধে এত রাগ জমেছে গ্রামের লোকের, তাদের মুখে প্রাণভিক্ষার আর্জি শুনে গ্রামের মেয়ে-বৌরা হকচকিয়ে যান। কিন্তু ঠিক করে ফেলেন, পুলিশের উর্দি গায়ে থাকলেও এরা তো আসলে তাদের মতো নারীই। মেয়ে হয়ে মেয়েদের পাশে দাঁড়ানোই এখন কর্তব্য। সেইমতো নারী পুলিশ কর্মীদের পানি দেওয়া হয়। আশ্বাস মেলে, কোনও চিন্তা নেই। এখানে আপনাদের কোনও ক্ষতি কেউ করবে না।
এক নারী কনস্টেবলের মাথায় বুদ্ধি খেলে, নিরাপদে গ্রাম ছাড়তে গেলে পোশাক বদলানো জরুরি। ঠিক হয়, পুলিশের খাকি উর্দি বদলে ফেলবেন সকলে। পাঁচজনের ব্যাগে সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি ছিল। কিন্তু বারুইপুর থানার এক নারী কনস্টেবলের কাছে সাদা পোশাক নেই। তিনি গ্রামের এক নারীকে ডেকে বলেন, “দিদি, আমাকে যা হোক একখানা কাপড় দিতে পারেন। ”
জানা গেছে, বাড়ির বৌ এগিয়ে দেন একটি নাইটি। পোশাক বদলে নেন সকলে। এরপরে গ্রামের মেয়েরাই পথ দেখিয়ে সকলকে এগিয়ে দেন। পরে পুলিশের গাড়ি দেখতে পেয়ে ধড়ে প্রাণ ফেরে ৬ নারী কনস্টেবলের।
রুমা বিবি নামে গ্রামের এক নারী বলেন, “পুলিশ আমাদের মেরেছে-ধরেছে সে কথা ঠিক। কিন্তু গ্রামের মেয়েরা মিলে ঠিক করে, পুলিশের উর্দি পরা হলেও ওই মেয়েদের প্রাণে বাঁচাতেই হবে। ”
গ্রামের নারীরা এই সৌজন্যটুকু না দেখালে মঙ্গলবার সুস্থ ভাবে ফেরা তাঁদের পক্ষে সহজ ছিল না, মানছেন নারী কনস্টেবলেরা। পাশাপাশি পুরুষ সহকর্মীদের ব্যবহারে ক্ষুণ্ণ তারা। এক নারী কনস্টেবলের কথায়, “আমরা যে নিরস্ত্র অবস্থায় পিছনে পড়ে আছি, বিপদের সময়ে সে কথা কেউ ভাবলই না। দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সে কথা জানিয়েছি। ”
সূত্র: আনন্দবাজার
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন