তিন হাজার গাছ সাবাড় ‘গ্রাম্য মাতবরের নির্দেশে’
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের এক মাতবরের নির্দেশে কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি গ্রাম্য এক বৈঠকে এ জন্য ২০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে কৃষকদের নির্দেশ দেন মাতবর মজিবর রহমান। এর পর থেকে মাঠের সব জাতের গাছ কাটার হিড়িক পড়ে যায়।
এ ব্যাপারে জেলা ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, গাছ কেটে ছায়ামুক্ত মাঠ করার ঘোষণা কেউ দিতে পারে না। তাঁর ভাষায়, এভাবে বৃক্ষ নিধন করা হলে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য শৈলকুপা উপজেলা বন বিভাগীয় কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি এলাকা পরিদর্শন শেষে খবরের সত্যতা পান শৈলকুপা বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম। তিনি জানান, তদন্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে গাছ কাটার নির্দেশদাতারা সটকে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন তিনি এবং গাছ কাটার নির্দেশদাতা মজিবর রহমান ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুর রাজ্জাকের বাড়িতে যান। এ সময় কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি বলে জানান শৈলকুপা বন বিভাগীয় কর্মকর্তা।
এদিকে কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ স্থানীয় সীমান্ত বাজারে লক্ষ্মীপুর গ্রামের লোকজনকে ডেকে জড়ো করা হয়। গাছ কাটার জন্য বৈঠক হয়। বৈঠকে সভপতিত্ব করেন মাতবর মজিবর রহমান। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাক, গোলাম মোস্তফা। বৈঠক থেকে মাঠের সব গাছ কেটে সাবাড় করার জন্য কৃষকদের ২০ দিন সময় দেওয়া হয়।
গ্রামবাসী জানান, ফসলের জমি আগাছামুক্ত করার অজুহাতে মাঠের সব গাছ কাটার নির্দেশ দেন গ্রামের মাতবররা। ছায়া ও পাতামুক্ত ক্ষেত করতে এ নির্দেশ ছিল। মাঠের গাছগুলো মানুষের উপকার করছিল। খালের পাড়ে যেসব গাছ ছিল, তা-ও কেটে ফেলতে বাধ্য করা হয়।
নাম প্রকাশ না করে এক কৃষক বলেন, চরের মাঠ বলে পরিচিত এ মাঠের বেশির ভাগ জমি উঁচু। নিচু জায়গায় ধান চাষ হয়। বাকি জমিতে কলা, কচুর চাষ হয়। অথচ গাছ কাটার পর কৃষকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটি গাছও থাকল থাকল না।
সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১ থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় তিন হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাতবর মজিবর রহমানের সঙ্গেও কথা বলা হয়। তাঁর দাবি, চাষিরা স্থানীয় সীমান্ত বাজারে জড়ো হয়ে যার যার গাছ কেটে নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি বলেন, ‘আমি গ্রামের মুরব্বি হওয়ার কারণে সবার মতামতের ভিত্তিতে গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছি। এতে করে কোনো বেআইনি কাজ হয়েছে বলে মনে করি না।’
ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাক দাবি করেন, তিনি গাছ কাটার নির্দেশ দেওয়া ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তিনি বিষয়টি জানেন বলে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম বলেন, যার যার গাছ সেই কাটছে। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। তবে আগে খবর পেলে গাছগুলো কাটা সম্ভব হতো না বলে জানান তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড শাহীনকে ধরতে ডিবির পরিকল্পনা
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ধারণা, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমবিস্তারিত পড়ুন
তৃতীয়বার আনারকে মনোনয়ন দিয়েছি জনপ্রিয়তা দেখে: কাদের
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) স্বর্ণ চোরাচালানকারীবিস্তারিত পড়ুন
মাস্টারমাইন্ড শাহীনের অগাধ রহস্য
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতের কলকাতায় হত্যাকাণ্ডেবিস্তারিত পড়ুন