গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে বাংলাদেশ
আগের দিনের তুলনায় গ্যালারি সরব। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্ষণে ক্ষণে সেই পুরোনো চিৎকার-হই-হুল্লোড়। গোলমুখে বল নিয়ে বাংলাদেশের কেউ ছুটলেই দর্শকদের আনন্দমুখর উল্লাস ধ্বনি ভেসে আসছিল থেকে থেকে। দর্শকরা বাংলাদেশ নিয়ে তৃপ্ত হলেও গোল দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যদিও একাধিক সুযোগও ছিল গোলের। পেয়েছিল দুই দলই। কিন্তু আসল কাজ কোনো দলই করে দেখাতে পারেনি। হয়তো সেখানে শতভাগ দেওয়ার প্রয়োজনও ছিল না। কারণ জয়-পরাজয় হলেও সেমিফাইনালে যাওয়া কোনো সমস্যা ছিল না। টার্গেট ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। সেই লড়াইয়ে জিতেছে বাংলাদেশ।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। তবে মাঠে নামার আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত ছিল বাংলাদেশের। এমনকি সমীকরণ বিবেচনায় হারলেও। ফলে নির্ভার ম্যাচে কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি মামুনুলরা। তবে শুধু বাংলাদেশ নয়; নেপালেরও চেষ্টা ছিল গোল করার। কোনো গোল হয়নি। ড্র করে ৫ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। আর সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল বিবেচনায় রানার্স-আপ হয়ে নেপালও সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চলতি আসরে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার আগেই শ্রীলঙ্কার কাছে ২-১ গোলে হেরে মালয়েশিয়ার বিদায়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ এবং প্রতিপক্ষ নেপালের। নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে শুক্রবার নেপালের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে উঠেছে বাংলাদেশ।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ম্যাচের শুরুতেই দুর্দান্ত বাংলাদেশকে দেখেছে দর্শকরা। এবং প্রথম দিকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশই। কিন্তু সময় বাড়তেই ম্যাচে ফিরে এসেছে সফরকারী নেপাল। আর শেষ হিসাবটা সফরকারীদের পক্ষেই সাফাই গাইবে। বলের নিয়ন্ত্রণ নেপালের বেশি ছিল ৫২%। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের ৪৮%।
২১ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তা থেকে গোল আদায় করতে পারেনি। তবে বিরতির পর ৪৯তম মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্টের অসাধারণ একটি শটটি গতিহীন হওয়ায় নেপালের গোলরক্ষক সহজেই রুখে দিয়েছেন। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে নেপালের গোলবারের বাঁ-প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে প্রবেশ করে হেমন্ত দারুণ এক থ্রু বাড়িয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন রনির উদ্দেশ্যে। কিন্তু প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি রনি। বলা যায় এটাই ছিল বাংলাদেশের নিশ্চিত গোলের সুযোগ। বাংলাদেশের আক্রমণের পাল্টা জবাবও দিয়েছে নেপাল ম্যাচের ৬১ মিনিটে। এক কাউন্টার এ্যাটাক থেকে গোলের দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল নেপাল। বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে নেওয়া অঞ্জনের জোরাল শটটি গোলবারের অল্প বাইরে দিয়ে চলে গিয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশ বেশ এলে বেলে খেলেছে। ফলে মাঝমাঠ পুরোটাই নেপালের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। ৬৫ মিনিটে বিরাজের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক। সোহেল রানার ৭৪ মিনিটে তার নেওয়া শটটি গোলবারের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। একটি বিতর্কিত ফাউলের সিদ্ধান্তে ৭৫ মিনিটে দুই দলের ফুটবলারদের মাঝে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে তা দ্রুতই নিষ্পত্তি হয়েছে। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে মামুনুল পাল্টা আক্রমণের সূচনা করেছেন। বল দিয়েছিলেন মোনায়েম রাজুকে। রাজু থেকে বল পেয়েছিলেন শাখাওয়াত রনি। কিন্তু অল্পের জন্য তার দুরন্ত গতির শটটি গোলপোস্টের সামান্য উপর দিয়ে বাইরে চলে গিয়েছে। ৮৭ মিনিটে লম্বা থ্রো থেকে জামাল ভূঁইয়া নেপালের ডি-বক্সে বল পেয়ে জোরাল শট নিয়েছিলেন। তার শটটি নেপালের গোলরক্ষক প্রথম অবস্থায় নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও দ্বিতীয় চেষ্টায় তা লুফে নিয়েছেন। ম্যাচের বাকি সময়েও কোনো গোল হয়নি। পয়েন্ট ভাগাভাগির সুবাদে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
প্রথম ম্যাচে ৪-২ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছিল বাংলাদেশ জাতীয় দল। দ্বিতীয় ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র করেছে মালয়েশিয়ার সঙ্গে। বাংলাদেশ ‘এ’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে খেলবে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ দলের সঙ্গে। শনিবার শেষ হচ্ছে গ্রুপপর্বের খেলা। সেখানেই নির্ধারিত হবে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। ওই গ্রুপ থেকে সম্ভাবনার ক্ষীণ বাতি জ্বালিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক দলও।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন