গ্রেপ্তার হয়ে জেলখাটা বলিউড তারকাদের মধ্যে একজন
বলিউড মানেই খবর। তা সে ভালো কাজের জন্য হোক কিংবা মন্দ কাজের জন্য। রুপালি পর্দায় যাঁদের ঘিরে নানা জল্পনা উঁকিঝুঁকি মারে আম-আদমির অন্তরে, বাস্তবে তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ। শুধু বলিউড মানেই বিনোদনের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নয়। ফ্ল্যাশ আলোর নিচেও রয়েছে রকমারি অপরাধের নিকষ অন্ধকার। বলিউডের অনেক তারকাকেই নানা অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। তা সে ধর্ষণ থেকে শুরু করে গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ মেরে ফেলা। এমন নানা অভিযোগে বলিউডের বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী, এমনকি ক্যামেরার পেছনে থাকা নামজাদা সেলিব্রেটিরাও জেলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। কথায় বলে, পাপ ছাড়ে না বাপকে। ফলে নিজেদের কৃতকর্মের দোষে নানা সময়ে কোমরে দড়ি পড়েছে বলিউডের বিভিন্ন সেলিব্রেটির। সেই বলিউড সেলিব্রেটিদের নানা অপরাধের সাতকাহন নিয়ে সাজানো এই প্রতিবেদন।
ইন্দ্র কুমার : জেলের ঘানি টানতে হয়েছে বলিউডের এই অভিনেতাকে। ২৩ বছরের এক মডেলকে ধর্ষণ ও মারধর করার অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ইন্দর কুমারকে। ওই মডেলের অভিযোগ অনুযায়ী, ছবিতে ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান ইন্দ্র। তারপর বাড়ির মধ্যে একটি ঘরে দুদিন আটকে রাখা হয় তাঁকে। আর সেই সময় ওই মডেলকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ইন্দ্র কুমার। পাশাপাশি ওই মডেলের ওপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এমনকি পুলিশি রিপোর্টে ওই মডেলের শরীরে একাধিক পোড়া দাগ ও ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়। যদিও ইন্দ্র দাবি করেছিলেন, তিনি নাকি ওই মডেলের সম্মতি নিয়েই তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই সাফাইয়ে কাজ হয়নি। পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই অভিনেতাকে, পুলিশি গারদেই ঢুকতে হয় তাঁকে।
সঞ্জয় দত্ত : কারাবাসের হাত থেকে অনেক চেষ্টা করেও নিষ্কৃতি মেলেনি বলিউডের এই মুন্না ভাইয়ের। বলিউডের প্রথম শ্রেণির এই অভিনেতা বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে যেমন আইনের চোখে ফেঁসে যান, তেমনি ১৯৯৩ সালে মুম্বাই বিস্ফোরণে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে সঞ্জয় দত্তের বিরুদ্ধে। যে দুই অভিযোগের সাঁড়াশি জাঁতাকলে ফেঁসে গিয়ে কারাভোগ অনিবার্য হয়ে ওঠে সঞ্জয় দত্তের। বর্তমানে পুনের ইয়েরওয়াড়া সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। যদিও প্যারোলে মাঝেমধ্যেই বেশ কিছুদিনের জন্য জেলের বাইরে থাকেন সঞ্জয়।
পুরু রাজকুমার : বলিউডের প্রয়াত অভিনেতা রাজকুমারের ছেলে পুরু রাজকুমার। বেশ কিছু ছবিতে নামডাকও হয়েছিল তাঁর। কিন্তু অপরাধের ভূত তাঁকেও তাড়া করেছে একসময়ে, যার জেরে আইনি ফ্যাসাদে পড়ে গারদবাসের হাত থেকে রেহাই পাননি তিনিও। সালমান খানের অনেক আগেই পুরু রাজকুমার গাড়ি চালাতে গিয়ে আটজন পথচারীকে চাপা দেন। এর মধ্যে মারা যান তিনজন। এর পরেই পুলিশ পুরু রাজকুমারকে গ্রেপ্তার করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃতের পরিবারকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে শেষমেশ কেস তুলে নিতে বাধ্য করেন পুরু রাজকুমার। ফলে আইনের ফাঁক গলে নিজের বুদ্ধিমত্তার জেরে কোনোমতে ছাড়া পেয়ে যান তিনি।
রাজপাল যাদব : বলিউডের এই কমেডিয়ানকেও নেহাত ভাগ্যের ফেরে কারাবাস করতে হয়েছিল একটা সময়ে। যদিও তাঁর কারাবাসের মেয়াদ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অল্পদিনেই জামিন পেয়ে যান তিনি। জানা যায়, একটি মামলায় আদালতের কাছে ভুল তথ্য পেশ করার অভিযোগে রাজপাল যাদবকে কপালের ফেরে জেলে ঢুকতে হয়েছিল। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে জেল হেফাজত হয়েছিল তাঁর। যদিও মাত্র ১০ দিন জেল খাটার পর জামিন পেয়ে যান রাজপাল।
মনিকা বেদি : কথায় বলে, সঙ্গ দোষে নাকি রঙ্গ ধরে! বলিউড অভিনেত্রী মনিকা বেদির ক্ষেত্রেও ঘটনাটা অনেকটাই সেই রকম। এক গ্যাংস্টারের বান্ধবী হয়ে জেনে হোক বা না জেনেই হোক, আইনি জটাজালে আটকে গিয়েছিলেন তিনি। ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে পর্তুগালে ঢোকার অপরাধে পর্তুগালে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। যদিও মনিকা নিজে সেই ভুয়া পাসপোর্টের কথা জানতেন না বলেই দাবি করেছিলেন। কিন্তু তাতেও রক্ষে মেলেনি মনিকার। তাঁর কাছ থেকে ভুয়া পাসপোর্ট উদ্ধার হওয়ায় আড়াই বছরের জন্য জেলে যেতে হয় তাঁকে।
আদিত্য পাঞ্চোলি : হোটেলের এক বাউন্সারকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগে পুলিশি হেফাজতে ঢুকতে হয় আদিত্য পাঞ্চোলিকেও। চলতি বছরের গত মার্চ মাসে মুম্বাইয়ের জুহুর কাছে এক হোটেলে এক ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটান তিনি। অভিযোগ, ওই হোটেলের ডিজে সিস্টেমে মন পছন্দ গান না বাজানোর কারণে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন আদিত্য। আর তারপরেই বেধড়ক মারধর করেন ওই হোটেলের এক বাউন্সারকে। এর পরেই পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে আদিত্য পাঞ্চোলিকে। যদিও গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান এই অভিনেতা।
শাইনি আহুজা : ধর্ষণের মতো জঘন্য অভিযোগের দায়ে জেলে যেতে হয় এই সেলিব্রেটিকেও। পুলিশ রেকর্ড অনুযায়ী, ২০০৯ সালে বাড়ির এক পরিচারিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে শাইনির বিরুদ্ধে। জঘন্যতম এই কাজের জন্য সাত বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন আদালত। পরে অবশ্য জামিন পেয়ে যান তিনি।
মধুর ভান্ডারকর : বলিউডের এই খ্যাতনামা চিত্রপরিচালকও ধর্ষণের দায়ে ফেঁসে যান। অভিযোগ, ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল অবধি নাকি তিনি প্রীতি জৈন নামে এক স্ট্রাগলিং অভিনেত্রীকে মোট ১৬ বার ধর্ষণ করেছিলেন, যার জেরে গারদে ঢুকতে হয় তাঁকেও। তবে টানা নয় বছর ধরে এই কেসের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করেন মধুর ভান্ডারকর। অবশেষে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মধুরের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
জন আব্রাহাম : জেলভোগের আদেশনামা জোটে এই বলিউডি অভিনেতার কপালেও। ২০০৬ সালে মুম্বাইতে নিজের বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় দুই পথচারীকে ধাক্কা মারেন তিনি। ঘটনায় গুরুতর জখম হন দুই পথচারী। সেই ঘটনায় একটানা ছয় বছর ধরে কেস চলে আদালতে। দীর্ঘদিন কেস চলার পর ১৫ দিনের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন আদালত। যদিও তার আগেই আগাম জামিন পেয়ে যান জন আব্রাহাম।
ফারদিন খান : নেশা করতে গিয়েই গারদে ঢুকতে হয় এই বলিউড অভিনেতাকে। অভিযোগ, ২০০১ সালে মাদক কিনতে যাওয়ার সময় হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই পুলিশ পাকড়াও করে তাঁকে। এরপর সোজা তাঁর স্থান হয় পুলিশি লকআপে। যদিও পাঁচ দিনের কারাবাসের মাথায় জামিন পেয়ে যান তিনি।
সাইফ আলী খান : একদিকে হরিণ মারা কেস, আর অন্যদিকে হোটেলের এক কর্মীকে মেরে নাক ভেঙে দেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার হতে হয় এই বলিউড অভিনেতাকেও। প্রথমে ১৯৯৮ সালে কৃষ্ণসার হরিণ মারার অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর ২০১২ সালে মুম্বাইয়ের এক হোটেলের রেস্তোরাঁয় ইকবাল শর্মা নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে মারামারি বাধে তাঁর। আর সেই মারামারিতে ওই ব্যক্তিকে রীতিমতো ঘুষি মেরে নাক ভেঙে দেন সাইফ আলী খান। এর জেরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৫ নম্বর ধারায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে জামিন পেয়ে যান সাইফ আলী খান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন