ঘুরে দাঁড়াতে লড়ছেন রানা প্লাজার জখম শ্রমিকরা
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হযরতপুর গ্রামের মেঘলা বেগম স্বামী আব্দুল বাতেনসহ কাজ করতেন রানা প্লাজার পোশাক কারখানায়। ভবন ধসে স্বামী আব্দুল বাতেন প্রাণ হারান। মেঘলা হয়ে যান গুরুতর জখম।
সারা শরীরে জখমের অসংখ্য দাগ আর যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন মেঘলা বেগম। ক্ষতিপূরণের যে কয়টি টাকা পেয়েছিলেন, তা চিকিৎসায় ব্যয় ও আড়াই বিঘা আবাদী জমি বন্দক নিয়েছিলেন। গত বছর একটি এনজিও এক মাসের সেলাই প্রশিক্ষণ, ২৫ হাজার টাকা ও একটি সেলাই মেশিন দিয়েছে। বন্দকি জমির ফসল এবং বাড়িতে বসে সেলাই করে যে আয় হয়, তা দিয়ে চলছে তার ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রাম।
মেঘলা বেগম মোবাইল ফোনে জানান, সেলাই মেশিন দিয়ে তার মাসে আয় হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। সারা শরীরে এখনো ব্যথা। তাই বেশি কাজ করতে পারেন না। বেশি কাজ করতে পারলে বেশি আয় হতো।
মেঘলা বেগমের চাচাত বোন মালেক মিয়ার কন্যা মারুফা জানান, সাভারের রানা প্লাজা ধসে তিনিও গুরুতর জখম হন। এখন জীবন জীবিকার টানে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করছেন।
রানা প্লাজা ধসে পঙ্গু হয়ে যাওয়া মরিয়ম বেগম জানালেন, তার এই জীবন আর ভালো লাগে না। চলতে পারেন না। বসতে পারেন না। নিজে হাতে খেতেও পারেন না।
সাভারের ভবন ধসে আহত হয়েছিলেন মিঠাপুকুরের আব্দুল লতিফ। ৯৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। তা চিকিৎসাতেই শেষ হয়ে গেছে। তারপরেও জীবন সংগ্রামে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ছোট খাট কাজের মাধ্যমে। এদের মতো আহত অনেকেই সেই দিনের দুর্ঘটনার ধকল সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
নিহত দুলালী বেগমের বাবা মতিয়ার জানান, প্রাথমিক অবস্থায় কিছু সহযোগিতা পেয়েছিলেন। এখন কেউ তাদের পরিবারের খোঁজ নেয় না। প্রায় একই কথা বললেন, নিহত আরজিনা বেগমের বাবা সোহরাব হোসেন।
পেটের তাগিদে রাজধানীতে গিয়ে রানা প্লাজা ধসে জখম শ্রমিকরা এবং নিহতদের পরিবারগুলো দুই বেলা দুই মুঠো ভাতের জন্য লড়ছেন। চার বছর আগে এই দিনে সাভারের রানা প্লাজা নামক ভবন ধসে সেখানে পোশাক কারখানায় কর্মরত রংপুরের অর্ধশতাধিক শ্রমিক প্রাণ হারান।
এদের মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মতিয়ারের স্ত্রী কন্যা দুলালী বেগম, বাদশা মিয়ার কন্যা লাইজু ওরফে রাবেয়া, সোহরাব হোসেনের কন্যা আরজিনা বেগম, আবুল কাশেমের স্ত্রী গুলশান আরা বেগম, হামিদা বেগম, সুজন মিয়ার ছেলে বুলু মিয়া, মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে নেওয়াজ শরিফ, নেহজুল ইসলামের স্ত্রী শ্যামলী বেগম, আনছার আলীর ছেলে মোরশেদুল ইসলাম, ইউসুফ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, সবুজ মিয়ার স্ত্রী রাবেয়া আক্তার, জাহেদুলের স্ত্রী মোহছিনা বেগম, শওকত আলীর কন্যা লিপি খাতুন, আয়নাল হকের স্ত্রী গোলাপী বেগমসহ অনেকে সেই দিন প্রাণ হারান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা।বিস্তারিত পড়ুন
আইসিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন, ধারণ করা যাবে বিচার প্রক্রিয়ার অডিও-ভিডিও
‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনবিস্তারিত পড়ুন