চিকিৎসা শেষ না হতেই সাঁওতালদের নিয়ে গেল পুলিশ
চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই দুই সাঁওতালকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছে পুলিশ। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হামলায় আহত ওই দুজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল সোমবারই হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁদের হাতকড়া খুলে দিয়েছিল পুলিশ।
পরিবারের লোকজন জানান, অসুস্থ দুজনকে গাইবান্ধা থানাহাজতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া গ্রামের চরন সরেন ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার কুমারপাড়া গ্রামের বিমল কিসেনের জন্য হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেয় পুলিশ। পরে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের একটি টিম সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তাদের কোথায় নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে পুলিশের কোনো সদস্যই কোনো উত্তর দেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং এরা সেই মামলায় গ্রেপ্তার বলেই পুলিশি প্রহরায় গাইবান্ধা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার জানান, দুই আসামিকে আজ আদালতে হাজির করা হবে। সে কারণেই তাদের রংপুর থেকে গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে, চিকিৎসা শেষ না হতেই বা সুস্থ না হতেই দুই আসামিকে পুলিশ জোর করে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বা কর্মকর্তা।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক চিকিৎসক জানান, চরন সরেন ও বিমল কিসেন এখনো সুস্থ নন। তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্রও দেওয়া হয়নি। পুলিশই তাদের ভর্তি করেছিল, আজ পুলিশই তাঁদের নিয়ে গেল।
এর আগে গতকাল সোমবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হামলায় আহত সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তিনজনকে হাতকড়া খুলে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। গতকাল সকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে রিট আবেদন করলে আদালত এ নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে হাতকড়া পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত। এ সময়ের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ও গাইবান্ধার এসপিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত রোববার জাতীয় একটি দৈনিকে তিন সাঁওতালকে হাতকড়া পরিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এ ধরনের একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদটি সংযুক্ত করে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এ রিট আবেদনটি করেন। ওই তিন সাঁওতাল হলেন বিমল কিস্কু, ডিজেন টুডু ও চরন সরেন।
এদের মধ্যে চোখের চিকিৎসার জন্য ডিজেন টুডুকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বাস করা প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সাঁওতাল আহত হন। মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে। এ ঘটনায় আহত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বেঁধে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে রিটটি দায়ের করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন