চীনকে ঘিরে ফেলছে ভারত!
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধভাব বিরাজমান থাকায় নতুন বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা। দক্ষিণ চীন সাগরে ইতিমধ্যে মার্কিন ডেস্ট্রয়ার পাহারা দিয়ে যাচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে বাধ্য, চীনের অভিসন্ধি পূরণে মূল বাধা আমেরিকাই। কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীরবে কৌশল সাজিয়ে চীনের পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে ভারত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমত ভারত মহাসাগরে চীনের প্রবেশপথকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে আসছে ভারত। দ্বিতীয় পন্থা হিসেবে আমেরিকা-জাপান-ভারত সামরিক অক্ষ তৈরি করে চীনের নাকের ডগায় নৌ-যুদ্ধের মহড়া শুরু করা। তৃতীয় পন্থা হিসেবে অস্ট্রলিয়া, সিঙ্গাপুর-সহ চীন সাগরের আশপাশে থাকা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করে চীনের জলসীমাকে সব দিক দিয়ে ঘিরে ফেলছে ভারত।
ভারত যে ভাবে ঘুঁটি সাজিয়ে ফেলেছে, তাতে শি চিনফিং-এর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরাই এমনটা মনে করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ভিয়েতনামের দক্ষিণ প্রান্তে নৌঘাঁটি বানিয়ে চীনকে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছে ভারত।
চীনের পণ্যবাহী জাহাজ বা যুদ্ধজাহাজকে ভারত মহাসাগরে ঢুকতে হলে মালাক্কা প্রণালী হয়েই ঢুকতে হয়। এই জলপথ ভিয়েতনামের জলসীমার গা দিয়েই গিয়েছে। ভিয়েতনাম সরকারের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে ঠিক সেখানেই ভারতীয় নৌবাহিনী ঘাঁটি গেড়েছে। প্রতি বছর নৌবহরের আকার বাড়াতে বাড়াতে ভিয়েতনামের বন্দরে এখন ভারী উপস্থিতি ভারতীয় নৌসেনার।
পরিস্থিতি কখনও উত্তপ্ত হলে ভিয়েতনামের জলসীমা ঘেঁষে চীনা জাহাজের যাতায়াত প্রায় অসম্ভব করে তুলতে পারে ভারত। এই বিষয়ে বেজিং এখন বেশ চিন্তিত।
ভিয়েতনামের জলসীমায় তথা চীন সাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীর উপস্থিতি বাড়তে দেখে নয়াদিল্লিকে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেজিং। কিন্তু, নয়াদিল্লি তাতে কর্ণপাত করেনি। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ‘লুক ইস্ট’ নীতি বদলে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি ঘোষণা করেছেন। সেই নীতি অনুসারে চীনের হুমকির তোয়াক্কা না করে দিন দিন ভিয়েতনামের বন্দরে ভারতীয় নৌবহরের আকার বেড়েই চলেছে।
তার সঙ্গে ভিয়েতনামের সেনাকে অত্যাধুনিক সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে দু’দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করা হচ্ছে। ভিয়েতনামকে ভারত আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করছে বলেও সূত্রের খবর।
ভারত-আমেরিকা-জাপান নৌ-মহড়া চীনের মাথাব্যাথার আর এক বড় কারণ। বিশ্বের তিন বৃহৎ শক্তি চিনের জলসীমা ঘেঁষে নৌবহর নিয়ে যাতায়াত করছে, হাতে হাত মিলিয়ে যুদ্ধের মহড়া দিয়ে শক্তি প্রদর্শন করছে। এই পরিস্থিতি চীনের পক্ষে মোটেই সুখকর নয়।
এখানেই থামেনি ভারত। চীন সাগরের বুকে বা তার কাছাকাছি অবস্থিত যে সব দেশের সঙ্গে চীনের উল্লেখযোগ্য সুসম্পর্ক নেই, তাদের সঙ্গে সরাসরি সামরিক জোট বেঁধেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুর এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরে অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরের নৌবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে ভারতীয় নৌবাহিনী। যে কোনও সমস্যায় পরস্পরের সহায়তায় ছুটে আসার জন্য এই তিন দেশের নৌবাহিনী প্রস্তুত।
সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে বোঝা যাচ্ছে, ভারত মহাসাগরে চীনের প্রবেশপথে পাহারা বসিয়ে আর চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমে ভিয়েতনাম, দক্ষিণে সিঙ্গাপুর, আরও দক্ষিণে অস্ট্রেলিয়া এবং পূর্বে জাপানের সঙ্গে সামরিক জোট গড়ে চীনের জলসীমাকে ধীরে ধীরে সব দিক থেকে যে ভাবে ঘিরে ফেলেছে নয়াদিল্লি, সেই জাল কেটে বেরনোর পথ এখন খুঁজে পাচ্ছে না বেজিং।
ভারত আস্ফালন না করে ধীরে ও নীরবে কাজ হাসিল করেছে। এখন ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর আর চীন সাগরে মহড়া চলছে বছর বছর। বেজিং এই সব সামরিক অক্ষ নিয়ে মাঝেমধ্যে চড়া বিবৃতি দিচ্ছে ঠিকই। তবে পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে, বেজিং নাকি তা ভালই বুঝতে পারছে!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন