চীনা পণ্যে উচ্চহারে মাসুল ধার্যের হুমকি দিলেন ট্রাম্প
চীনের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানিতে শাস্তিমূলক ট্যারিফ আরোপেরও হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের পর শুক্রবার নতুন বাণিজ্য কৌশল সম্পর্কেও ধারণা দেন ট্রাম্প। এতে তিনি মার্কিন নাগরিকদের চাকরির সুরক্ষার ওপর জোর দেন। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন ট্রাম্প। এক কথায় অন্যান্য দেশের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন ঘোষণাকে ট্রাম্পযুগে নাটকীয় পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখছে চীন। এমনটাই বলছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমস। পত্রিকাটি লিখেছে, ট্রাম্প হয়তো বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট স্বার্থ নিয়ে তার বিদেশ নীতিকে সাজাবেন। ভাবাদর্শ বা রাজনৈতিক মূল্যবোধকে নিষ্প্রভ করেই হয়তো তিনি এটা করবেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমটির সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘চার বছরকে সামনে রেখেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে সংঘাত এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যে উত্তেজনার বিষয়টি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প প্রশাসন নিঃসন্দেহে তার সদর দরজা এবং বিশ্বজুড়ে অগ্ন্যুৎপাত তৈরি করবে। এখন চীনের পালা কখন আসে সেটা দেখার প্রতীক্ষা। ’
ট্রাম্পের অভিষেকের প্রাক্কালে অবশ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সুরেই কথা বলেছে চীনা সরকার এবং দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র হুয়া চানিং। তিনি বলেন, ‘বিরোধিতা বা শত্রুতার চেয়ে উভয় পক্ষেরই বরং উচিত বন্ধু ও অংশীদার হয়ে থাকার চেষ্টা করা। ’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বন্ধুত্বের কথা বললেও বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। চীনের অভ্যন্তরীণ সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ট্রাম্পের অভিষেক বক্তব্য সরাসরি প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশটির নেতাদের আশঙ্কা ছিল, ট্রাম্প হয়তো তার ভাষণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের আক্রমণ করে বসতে পারেন।
ট্রাম্পের অভিষেকের পর অবশ্য হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেসব দেশ বাণিজ্য চুক্তি ভঙ্গ করছে এবং আমেরিকান কর্মীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিবৃতিতে নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (নাফটা)-এর কথাও উঠে আসে। ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো’কে নিয়ে এ সংগঠন যাত্রা শুরু করেছিল। তবে বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রাম্প আরেকটি চুক্তিতে আবদ্ধ হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র স্বাক্ষর করলেও ওয়াশিংটন এখনও চুক্তিটি অনুসমর্থন করেনি। এশিয়ার ক্রমবর্ধমান শক্তি চীনকে মোকাবিলায় এটা ছিল ওবামা প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বুনিয়াদ। ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন অবস্থানে উদ্বিগ্ন এ চুক্তির প্রবক্তারা। কারণ বহু আলোচনার পর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এখন চুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়লে সেটা বরং এ অঞ্চলে চীনের অর্থনীতিকেই আরও সমৃদ্ধ করবে।
বৃহস্পতিবার চীন বলেছে, দুই দেশ আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য সংক্রান্ত যে কোন বিষয় নিষ্পত্তি করতে পারে। তবে চীনের একটি পত্রিকা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ট্রাম্পের যে কোন বাণিজ্য যুদ্ধের প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে মার্কিন বাণিজ্য খাত। নির্বাচনি প্রচারণাকালেও টিপিপি’র সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের নিরাপত্তার জন্য সেসব দেশগুলোকে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করা উচিত।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন