চূড়ান্ত দলে ডাক পেয়ে আপ্লুত মোসাদ্দেক
সেদিন ১৮ সেপ্টেম্বর। রবিবার। ঈদের পর প্রথম অনুশীলন বাংলাদেশ দলের। বিসিবির একাডেমি ভবন থেকে সাড়ে তিনটা নাগাদ স্পোর্টসব্যাগ নিয়ে স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছিলেন মোসাদ্দেক। দেখা হতেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, ‘ওয়েটিং ফর এ গুড নিউজ।’ মোসাদ্দেকও হাত বাড়িয়ে হাসতে হাসতে আলতো করে বলে গেলেন, ‘থ্যাংক ইউ।’
চারদিন পরের কথা। ২২ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার। চূড়ান্ত দলে অনুমিতভাবে সেই ‘গুড নিউজ’টা শুনলেন মোসাদ্দেক। একই জায়গায় আজও দেখা হলো। সেদিনের মোসাদ্দেক আর এই মোসাদ্দেকে বিস্তর তফাৎ। মুখ লাল। সেদিন হ্যান্ডশেকের সময় হাত ছিল ঠাণ্ডা। আজ গরম। হয়তো উত্তেজনার ফসল। কেমন লাগছে? প্রশ্ন করতেই মোসাদ্দেকের অল্প কথায় উত্তর, ‘অনেক ভালো। মাঠে নিজের সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করবো।’ মোসাদ্দেক আর বেশি কিছু বললেন না। বিসিবি থেকে নাকি নিষেধ আছে। মিনিট পাঁচেক আগে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেছিলেন। মোসাদ্দেকও কিছু বলতে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। কিন্তু মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম বিসিবির ফ্লোর থেকে হাঁক দিলেন, ‘ওকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। কথা বললে সমস্যা ওরই হবে।’ মোসাদ্দেক বিসিবির নির্দেশ মেনে আর কথা না বললেও চেহারায় ঠিকই ফুটে উঠছিল আবেগের ঢেউ।
এর আগেও জাতীয় দলের চূড়ান্ত দলে ছিলেন এই তরুণ অলরাউন্ডার। জিম্বাবুয়ে সিরিজে। টি-টোয়েন্টিতে একটা ম্যাচে মাঠেও নেমেছিলেন। কিন্তু সেটা ছিল পরীক্ষামূলক। নির্বাচকদের দৃষ্টিতে মোসাদ্দেক এখন অনেক পরিণত। তাকে ধারাবাহিকভাবে দলে চান কর্তারা।
‘মোসাদ্দেক গত দুই বছর ধরে লঙ্গার ভার্সনসহ ঘরোয়া ক্রিকেটের সব টুর্নামেন্টে দারুণ করছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলেছে। আমাদের মনে হচ্ছে জাতীয় দলের জন্য সে প্রস্তুত।’ দল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে বলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু।
দুই বছর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় মোসাদ্দেকের। এর মধ্যে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন! দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্য কারো এই রেকর্ড নেই। গত বছর এই কীর্তি গড়েন মোসাদ্দেক। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় লিগে রংপুরের বিপক্ষে খেলে ছিলেন ২৫০ রানের ইনিংস, এরপর চট্টগ্রামের বিপক্ষে ২৮৭। সিলেটের বিপক্ষে বরিশালের হয়ে অপরাজিত ২০০। গড় ৭০.৮০! এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আরো পরিণত মোসাদ্দেককে দেখা গেছে। আবাহনীর হয়ে ছয় নম্বরে ব্যাট করেন। বিপদের সময় কচি কাঁধে ভারি ওজন বহন করে দলকে একাধিকবার টেনেছেন। ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টে এক পর্যায়ে তার গড় ছিল ৮৬.২০! শেষ পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ৭৭.৭৫ গড়ে ৬২২ রান নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করেন। দেশি কোচ সারওয়ার ইমরান থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্গান কিংবদন্তি ক্রিকেটার সাঙ্গাকারা বিভিন্ন সময়ে মোসাদ্দেকের প্রশংসা করেছেন। জাতীয় দলের সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচেও সাবলীল ব্যাট করতে দেখা গেছে।
এবার পালা আসল মঞ্চে!
আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাসির হোসেন, তাইজুল ইসলাম, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন