বাংলাদেশে ছিটমহলের মানুষকে রাখতে জবরদস্তির অভিযোগ
বাংলাদেশ এবং ভারতের ছিটমহলগুলো বিনিময় হতে আর মাত্র একদিন বাকী। এই ছিটমহল বিনিময়ের জের ধরে সেখানকার হাজার হাজার মানুষের নাগরিত্বও পাল্টে যাবে আগামীকাল মধ্যরাতের পর। কিন্তু বাংলাদেশের ভেতরের একটি ভারতীয় ছিটমহলের কিছু মানুষ অভিযোগ করেছেন যে, তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে বাংলাদেশের নাগরিক বানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ এবং ভারত, উভয় দেশই রাজী হয়েছিল যে ছিটমহলবাসীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী যে কোন দেশের নাগরিকত্ব বেছে নেয়ার সুযোগ পাবেন। এজন্যে ছিটমহলবাসীদের মধ্যে জরিপ চালিয়ে তাদের মতামতও জানতে চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ভূখন্ডের মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল থেকে ৯শ ৭৯ জন ভারতের নাগরিকত্ব চেয়েছিলেন। বাকিরা বাংলাদেশেই থাকতে চান বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
কিন্তু দাশিয়ারছড়া ছিটমহলের বেশ কিছু মানুষ বলছেন, ভয়-ভীতির মুখে তারা স্বাধীনভাবে নাগরিকত্ব বেছে নিতে পারেননি। জোর করেই তাদের বাংলাদেশের নাগরিক বানানো হয়েছে। তাই ছিটমহল বিনিময়ের একদিন আগেও তাদরে মধ্যে কাজ করছে এক অজানা আশংকা।
আবু বক্কর সিদ্দিক দাশিয়ারছড়া ছিটমহলের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভারতের দিল্লিতে কাজ করেন। দুইমেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে নিয়ে তাই ভারতের নাগরিক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন তার নাম রয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকের তালিকায়। ভারতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকার পরও তাকে থেকে যেতে হয়েছে বাংলাদেশে।
“আমাদেরকে নানা রকম কথা বলা হয়েছে। ভারতে গেলে তিন বছর পর্যন্ত বন্দী হয়ে থাকা লাগবে। এই ভয়ে আমরা পরে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার জন্য নাম দিছি”, বললেন তিনি। কুড়িগ্রামের সবচেয়ে বড় এই ছিটমহল থেকে ২৮৪ জন ভারতে যা্ওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছেন। বাকিরা এখানেই থাকতে চান বলে প্রশাসন জানাচ্ছে। বলরাম বর্মনের নাম সেই বাংলাদেশের তালিকাতেই রয়েছে।
“আমাদের ভয় দেখানো হয়েছে যে ইন্ডিয়ার জন্য নাম লেখালে আমাদের জমি খাস করা হবে। বাড়ী দখল করা হবে। রাতে ঘুমাতে দেবে না।” তিনি জানান, ছিটমহলের লোক এমনকি প্রশাসন পর্যন্ত তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়েছে।
“ফুলবাড়ীর প্রশাসনের লোকেরা হুমকি দিয়েছে যে নাম লেখালে পিঠের চামড়া থাকবে না। তখন আমি চিন্তাভাবনা করে বাংলাদেশের পক্ষেই নাম লেখালাম। আমার মন চেয়েছিল ইন্ডিয়ায় যেতে। কিন্তু জুলুমের ভয়ে আমি বাংলাদেশে থেকে গেলাম।”
মফিজউদ্দীন কাজ করেন দিল্লিতে। ইটের ভাটায়। তার তিন সন্তানের জন্মও সেখানে। ভারতে যাওয়ার জন্য নাম লেখাতে এসে দেখেন তার নাম বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে ফেলা হয়েছে।
“আমার পরিবার এখনো দিল্লিতে। ১৬ তারিখে আমি দিল্লি থেকে আসি। এসে দেখি আমার নামে কে যেন টিপসই দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমি তো ভারতে যেতে চাই,” বললেন তিনি। এই ছিটমহলের বাসিন্দারা দাবি করছেন এই্ দাশিয়ারছড়া ছিটমহল থেকেই এভাবে অন্তত দেড় হাজার মানুষকে বাংলাদেশের তালিকায় নাম লেথানো হয়েছে।
আর একদিন পরেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হতে যাচ্ছে আনুষ্ঠানিক ছিটমহল বিনিময়। তবে যারা ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তালিকায় নাম লিখিয়েছেন তারা এখনো নিশ্চিত হন আগামিকালের পর তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন