মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

ছয় কারণে আলোচনা-নির্বাচন চান খালেদা জিয়া!

গণতন্ত্র ফেরাতে এবং জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ছয়টি কারণে বিএনপি সংলাপ ও নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের ষষ্ঠ কাউন্সিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শুধু আমরা নই, প্রায় সকলেই বাংলাদেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার চায়। এজন্য সকলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি নির্বাচন বা সংলাপ চাই না। আমাদের উদ্দেশ্য- দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠা, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা, কারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবে তা নির্ধারণের অধিকার জনগণকে দেওয়া, রাষ্ট্র পরিচালনায় মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, অস্থিরতা ও সংকট থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্থিতিশীল ও সমঝোতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করা।’

‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্লোগানকে ধারণ করে এবারের কাউন্সিল করছে বিএনপি।

খালেদা জিয়া তার বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমানসহ মরহুম জাতীয় নেতাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধে ভারতসহ যেসব বন্ধু রাষ্ট্র সহযোগিতা ও সমর্থন করেছে তাদের ধন্যবাদ জানান বিএনপি প্রধান।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘কীভাবে সকলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে, সে ব্যাপারে সকলের আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটি সমাধানে পৌঁছাতে চাই। তাহলেই দ্বন্দ্ব, সংঘাত থাকবে না এবং আন্দোলনেরও প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা আলোচনা অস্বীকার করে শুধু বলপ্রয়োগের পথ খোলা রেখে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিচ্ছে না।’

বিএনপির নেত্রী আবারো সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশের মালিক জনগণ। তাদের ওপর আস্থা রেখে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো আজ সময়ের দাবি এবং তাতে সকলেরই মঙ্গল।’

প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠন ও বদলের একমাত্র শান্তিপূর্ণ পন্থাই হচ্ছে নির্বাচন। সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেললে সরকার বদলের কোনো বৈধ ও শান্তিপূর্ণ পন্থাই আর খোলা থাকে না। তাতে বলপ্রয়োগ ও অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলের পথই প্রশস্ত হয় এবং শক্তি প্রয়োগে বিশ্বাসী, উগ্রবাদী ও চরমপন্থি শক্তির উত্থানই অনিবার্য হয়ে উঠে।’

বিএনপির দীর্ঘ সংগ্রামের পথে যারা আহত ও নিহত হয়েছেন এবং মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করেছেন, হয়রানির শিকার হয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, নানাভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক সমবেদনা ও সম্মান জ্ঞাপন করে খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই। জনপ্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় সংসদ নেই। সত্যিকারের বৈধ সরকার নেই। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। সুশাসন নেই। সুবিচার ও ন্যায়বিচার নেই। নারীর সম্ভ্রম ও মানবাধিকার আজ বিপন্ন। শিশুরা পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে নিহত ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নেই। আছে শুধু স্বেচ্ছাচার, অনাচার, দুঃশাসন, দুর্নীতি আর চরম নৈরাজ্য।’

জাতিকে বিশৃঙ্খল, বিভক্ত, হতাশ ও দিশেহারা করে ফেলা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘জাতিকে আবারো ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সকল স্তরে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। সঞ্চারিত করতে হবে নতুন আশাবাদ। জনগণকে দিতে হবে পথের দিশা। এ কাউন্সিল থেকে আসতে হবে সেই পথনির্দেশনা।’

মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেবল ঐক্য, শৃঙ্খলা এবং সমন্বিত পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের অভাবে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে, উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। অতীতে বিএনপি ভবিষ্যতমুখী ইতিবাচক রাজনীতির ধারার নেতৃত্ব দিয়েছে। এখনও বিএনপিই শুধু পারে ইতিবাচক সেই সম্মুখপ্রসারী ধারাকে এগিয়ে নিতে।’

স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে বিএনপি আন্দোলন করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি নিজের পরিবারের সদস্যদের কষ্টের কথাও তুলে ধরেন খালেদা জিয়া।

‘সারা দেশে শুধু আমার নেতা-কর্মীরা নন, তাদের পাশাপাশি আমি নিজেও চরম দুঃখ-কষ্ট সয়ে, হামলা, বাড়ি ও অফিস অবরোধ, মিথ্যা মামলা মোকাবিলা করে আপনাদের মাঝেই রয়েছি এবং থাকব। আমি পরিবারের সদস্যদের থেকে বিছিন্ন। আমার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো বিদেশ-বিভূঁইয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করেছে। দীর্ঘ ৭ বছর পর সে আমার কাছে লাশ হয়ে ফিরেছে। আমার বড় ছেলে তারেক রহমানকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। চরম নির্যাতনে পঙ্গু হয়ে এখনও দূরদেশে সে চিকিৎসাধীন’, বলেন খালেদা জিয়া।

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক এসব দুঃখ-বেদনাকে বুকে চেপে আমি এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কল্যাণে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই কঠিন সংগ্রামে আল্লাহর রহমত এবং আপনাদের সহযোগিতাই আমার পাথেয়।’

বিএনপি কঠিন সময় অতিক্রম করলেও অতীতের মতোই আবারো ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় দেশ পরিচালনায় সরকারের ‘ব্যর্থতা’ তুলে ধরেন প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস-দুর্নীতি-লুটপাট আজ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শেয়ারবাজার লুট হয়েছে। ব্যাংকগুলো লুণ্ঠিত হচ্ছে। এখন বিদেশি হ্যাকাররা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ লুণ্ঠনের প্রক্রিয়ায় যোগ দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি, অনাচার ও অপশাসনে লিপ্ত ক্ষমতাসীন সরকার নানা অপকৌশলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করছে। সাংবাদিক, কলামিস্ট, সম্পাদক কেউই আজ নিরাপদ নন। মামলা-হামলা এমন কি হত্যারও শিকার হচ্ছেন তারা।’

কাউন্সিলের দিকনির্দেশনা নিয়ে সারা দেশে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এিনপি চেয়ারপারসন। একই সঙ্গে ‘কেড়ে নেওয়া অধিকার’ ফিরিয়ে আনতে জনগণকে জেগে ওঠার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে বেলা পৌন ১১টার দিকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

এরপর ‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’ শীর্ষক কাউন্সিলের থিম সং গাওয়া হয়। এটি পরিবেশন করে বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃৃতিক সংস্থা- জাসাস।

প্রায় ছয় বছর পর এই কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু করার কথা থাকলেও ভোর থেকেই রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে তারা আসতে শুরু করেন। কাউন্সিলের সফলতা প্রত্যাশা করে নেতা-কর্মীদের টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলা হয় অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশের এলাকা।

কাউন্সিলে বিএনপির নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক

রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক

অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন

  • হাসিনার পতনে জাতির মনোজগত পরিবর্তন হয়েছে, নতুন রাজনীতি হতে হবে স্বচ্ছ: আমীর খসরু
  • বগুড়ায় হাসিনা-কাদেরের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা
  • ১৭ বছর পর সচল হলো আবদুল আউয়াল মিন্টুর ব্যাংক হিসাব
  • বিএনপি ও সমমনা দলের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
  • খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে : এ্যানী
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • বিএনপির আন্দোলন ভুয়া, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আতঙ্কিত: ওবায়দুল কাদের
  • খালেদা জিয়ার ৩ রোগ বড় সংকট : চিকিৎসকরা
  • মুক্তিযুদ্ধের নামে বিএনপি ভাওতাবাজি করে : ওবায়দুল কাদের
  • দেশের মানুষ ঈদ করতে পারেননি
  • বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে রদবদল