জঙ্গিবাদ ঠেকান, নইলে অন্ধকার যুগ: নেতাদের প্রধানমন্ত্রী
জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আইপিইউ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জঙ্গিবাদ না ঠেকাতে পারলে আবার অন্ধকার যুগে ফিরে যেতে হবে।
শনিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ইন্টারপার্লামেন্টারিয়ান ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে শেখ হাসিনা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব নতুন এক উপদ্রবের মুখোমুখী হয়েছে। সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। মানুষের শান্তি বিনষ্ট করছে। জঙ্গিবাদ আজ কোন নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমাদের সবাইকে ঐক্যদ্ধভাবে এ সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। তা না হলে আমরা আবার অন্ধকার যুগে ফিরে যাব।’
বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে পরিত্রাণের জন্য যে সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন ফোরামে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব আজ এগিয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বৈশ্বিক ক্ষুধার ক্ষেত্রেও। তবুও, বিশ্বের প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোর এক বিরাট সংখ্যক শিশু পুষ্টির অভাবে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। অসুখে-বিসুখে চিকিৎসা সুবিধাবঞ্চিত তারা। সুযোগ পাচ্ছে না বিদ্যালয়ে যাওয়ার। অথচ প্রাচুর্যে ভরা এই বিশ্বে মানবজাতির বেঁচে থাকার সব ধরনের রসদ বিদ্যমান। একটু সহানুভূতি, সহযোগিতা, পরস্পরের প্রতি মমতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ বিশ্বকে এক নিমিষেই ক্ষুধামুক্ত করতে পারে।’
এক হাজার চারশ প্রতিনিধির অংশগ্রহগণে এবারের পাঁচদিনব্যাপী আইপিইউ সম্মেলনে ৫৩টি দেশের স্পিকার, ২০৯টি দেশের ডেপুটি স্পিকার এবং নারী সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে রোমে অনুষ্ঠিত আইপিইউ কাউন্সিলে অংশ নিয়ে সংস্থায় যোগ দেয়।
কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসের চৌধুরী, আইপিইউ মহাসচিব মার্টিন চুনগুংও বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সহকারি আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিরেস্লাভ ইয়ানকা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গ্যুতারেজের বাণী পড়ে শোনান।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন, গণতন্ত্রের সফল অভিযাত্রা ও সুদূরপ্রসারি উন্নত, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাগুলো আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এদিন আইপিইউ ওয়েব টেলিভিশন উদ্বোধন করেন এবং দিবসটি স্মরণে ডাক টিকেট ও খাম অবমুক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রথমবারের মত ১৭১টি সদস্য দেশের সংসদীয় সংগঠন আইপিইউ’র এ ধরনের বৃহৎ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ঐতিহাসিক ঢাকা নগরীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য এটি সত্যিই একটি তাৎপর্যময় ঘটনা। আমি বাংলাদেশের জনগণ এবং নিজের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারী সকলকে উষ্ণ অভিনন্দন ও স্বাগত জানাচ্ছি। আমি আশা করি বাংলাদেশে আপনাদের অবস্থান আনন্দদায়ক এবং ফলপ্রসূ হবে আমাদের এই সম্মেলন।’
তিনি বলেন, আইপিইউ’র সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আমরা গভীরভাবে সম্মান করি। আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত। আমরা গণতন্ত্রকে শুধু একটি ব্যবস্থা হিসেবে দেখি না বরং গণতন্ত্রকে মানুষের সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বাহন হিসেবে গণ্য করি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনৈতিক মিশনের সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথি, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং অংশ গ্রহণকারী দেশগুলোর স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন