জঙ্গি জাহিদুলের জাল পরিচয়পত্র যাচাই করেনি পুলিশ
রূপনগরে জঙ্গিদের প্রশিক্ষক জাহিদুল ইসলাম ওই বাড়িটি ভাড়া নেয়ার আগে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি বাড়ির মালিকের কাছে জমা দিয়েছিলেন। বাড়ির মালিক ওই ফটোকপি স্থানীয় থানায় জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তা তখন যাচাই বাছাই করেনি।
গত ২ সেপ্টেম্বর ওই বাড়িতে চালানো অভিযানে নিহতের পর জাহিদুলের পরিচয় জানা যায়। কিন্তু তিনি বাড়ির মালিকের কাছে যে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়েছিলেন তাতে নাম ছিল জাহাঙ্গীর হোসেন। বলেছিলেন, তার ডাক নাম মুরাদ।
গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার পর তদন্তে জানা যায়, একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জঙ্গিদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাকে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর গত শুক্রবার রাতে তার অবস্থান জানতে পেরে রূপনগরের ওই বাড়িতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। চার কর্মকর্তা জখম হলেও পুলিশ হত্যা করতে সক্ষম হয় কথিত মুরাদকে।
অভিযানের পর জঙ্গি প্রশিক্ষকের নাম মুরাদ বলেই প্রচার হয়। কিন্তু পুলিশ জানতো, এটা তার আসল নাম নয়। তাই পরদিন তার আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সাভারে থাকা তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে জানা যায়, তার নাম জাহিদুল ইসলাম। তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।
আড়াই বছর আগে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার পর গত বছর চাকরি ছাড়েন জাহিদুল। আর গত এপ্রিল থেকে তিনি পরিবারসহ নিখোঁজ হন। এই পর্যায়ে তিনি নাম পাল্টে ফেলেন। আর ১ জুলাই রূপনগরের ওই বাসা ভাড়া নেন জাহিদুল। তবে ভিন্ন পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিতে তিনি একটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র বানান ।
হলি আর্টিজানে হামলার পরই পুলিশ বাড়ির মালিকদেরকে ভাড়াটেদের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে স্থানীয় থানায় সেগুলো জমা দিতে কঠোর নির্দেশনা জারি করে। ভাড়াটেদের পরিচয়পত্র না রাখায় কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়ির মালিক এবং নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানার বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর্টিজানে হামলাকারীরাও যে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল তার মালিককেও এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু রূপনগরের ঘটনাটির পর জানা যায়, বাড়ির মালিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিলেও তা যাচাইবাছাই করে না পুলিশ। তাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামই যে জাহাঙ্গীর হোসেন মুরাদ নামে বাড়ি ভাড়া করেছিল সেটা জানতে পারেনি পুলিশ।
জাহাঙ্গীর হোসেনের নামে জমা দেয়া জাহিদুলের পরিচয়পত্রটি আগের যাচাই বাছাই করলে তাকে ধরা সহজ হতো সেটি স্বীকার করেছেন বাহিনীটিরই একাধিক কর্মকর্তা। তাহলে এটা কেন যাচাইবাছাই করা হয়নি, জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘এতদিন আমাদের কাছে সফটওয়ার ছিল না। তাই তার পরিচয়পত্রটি যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ ছিল না এতদিন। তবে রমনা মডেল থানায় এই সফটওয়ারের উদ্ধোধন হয়েছে। এখন থেকে পুলিশ সবার তথ্য যাচাই বাছাই করতে পারবে।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভা-ারে প্রবেশের ব্যবস্থা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে কোনো পরিচয়পত্র তাৎক্ষণিক যাচাই করতে পারবে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে সব ঘটনাতেই তাৎক্ষণিক পরিচয়পত্রের সঠিকতা যাচাই করতে পারছে না পুলিশ।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা কিছু তথ্য আমরা যাচাই বাছাই করেছি। তবে সব তথ্য যাচাই করা সম্ভব নয়। যাদেরকে সন্দেহ হবে তাদের তথ্য যাচাই বাছাই করা হবে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন