বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

জঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র মতবিরোধ!

[বাংলাদেশে ইসলামপন্থী উগ্র সংগঠনগুলোর তৎপরতা নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে যে বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস গতকাল ৩০ অক্টোবর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনটি আজ ৩১ অক্টোবর শনিবার পত্রিকাটির ছাপা সংস্করণে ‘অ্যা রিফট ইমার্জেস ইন অ্যাফোর্টস টু কুয়েল টেরোরিজম ইন সাউস এশিয়া’ শিরোনামে স্থান পেয়েছে।

আমাদের কণ্ঠস্বর-এর পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটির অনুবাদ প্রকাশিত হলো।]

ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর সঙ্গে জড়িত জঙ্গি সংগঠনগুলো বাংলাদেশের ভেতরে কাজকর্ম চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন তথ্য বাংলাদেশ সরকারকে গত মাসে জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।

এর পর ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি অস্বাভাবিক হামলা ও হুমকির ঘটনা ঘটে। এতে প্রমাণিত হয়েছে যে, ওই সতর্কবার্তা ছিল সঠিক। ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় ইতালীয় সাহায্য সংস্থার এক কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর দেশের উত্তরাঞ্চলে গুলি করে খুন করা হয় এক জাপানী কৃষিবিদকে। গত শনিবার [২৩ অক্টোবর ২০১৩ দিবাগত রাতে] শিয়া মুসলমানদের এক বিরাট জমায়েতে পুলিশি বেষ্টনীর মধ্যেই বোমা হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলে এক কিশোর নিহত হয় এবং আহত হয় আরো বহু মানুষ।

প্রতিটি ঘটনার পর ইসলামিক স্টেট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে এর দায় স্বীকার করে।

কিন্তু জঙ্গি হামলা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সতর্কবার্তা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি সন্দেহ প্রকাশ করেন। এমনকি যখন বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলো দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলা হতে পারে বলে সতর্ক থাকতে বলছিল সে সময়ও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ইসলামিক স্টেট বা আইএস বাংলাদেশে নেই বলে বারবার দাবি করছিলেন। তাঁরা বলছিলেন, ইরাক যুদ্ধের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে অতীতে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে এখনো তাই করছে।

সবই বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র  

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব হামলার ঘটনাকে তাঁর সরকারের সুনাম নষ্ট করতে বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র বলে বর্ণনা করেন। নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, গত বুধবার [২৮ অক্টোবর] তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। আমি একটি কথা বলতে চাই, দুটি বোমা বা পাঁচটি ডিম ছুঁড়ে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করা যাবে না। যাঁরা এমন কথা ভাবছেন তাঁরা ভুল করছেন।’

বাংলাদেশ ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সংযোগ না থাকা বাংলাদেশের নাগরিক ও এই দেশে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের বিভ্রান্ত করছে। সেইসাথে দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলছে। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের উত্থান বিধ্বংসী হতে পারে। যা ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের ভেতরে কিছু চরমপন্থী দল বেড়ে উঠছে, এদের কয়েকটির সঙ্গে আবার বিরোধী দলেরও যোগসাজশ রয়েছে। বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছরের গণতন্ত্রের পরে এ বছর আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে চরমপন্থা। যারা এ বছর ইসলামের ভিত্তির বিরুদ্ধে কথা বলতেন এমন চার বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছে। একই সময়ে বিদেশি নিরাপত্তা সংস্থাগুলো লন্ডন, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য শহরে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির বিষয়ে জানতে পারে যারা ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধও করছেন আবার সদস্য সংগ্রহও করছেন।

এসব চরমপন্থী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যকার যোগাযোগ ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশের জন্য নতুন বিপদ ডেকে আনতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউইয়র্ক টাইমসকে বাংলাদেশের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, ‘ইসলামিক স্টেটের হামলাবিষয়ক দাবিকে আমরা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এটি পুরো বিশ্বে কীভাবে বিস্তার লাভ করছে সেটাও আমরা দেখছি।’

এখন পর্যন্ত ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে আংশিক তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। এখন পর্যন্ত ইসলামিক স্টেটকে অনুসরণ করার দায়ে ৩০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী এবং ভালো পরিবারের সন্তান। যারা যুদ্ধ করার জন্য আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। এ ছাড়া আইএসের জন্য সদস্য সংগ্রহ করে এমন একজন লন্ডনভিত্তির নিয়োগকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম।

ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আলী রীয়াজ নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, তিনি ‘ভীষণ সন্দিহান’ যে, এই প্রধান জিহাদি দলটির ‘সাংগঠনিক উপস্থিতি’ বাংলাদেশে আছে কি না তা নিয়ে। তবে তিনি এটাও বলেন যে, দেশের মাটিতে গড়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠনগুলো আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘যদি সুযোগ পাওয়া যায় এবং পথ খুঁজে পায় তাহলে স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনগুলো যেকোনো সময় বাংলাদেশে আইএসের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পরিণত হতে পারে।’

গত মাসের সতর্কবাতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাংলাদেশি ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের সম্পর্ক রয়েছে। যদিও তারা জঙ্গিবাদবিরাধী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে।

প্রায় এক মাস আগে, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত ফাইভ আইস অ্যালায়েন্সের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য পায় যে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। গত ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়া তার নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ওপর সতর্কবার্তা জারি করে। সেখানে বলা হয়, ‘নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের ওপর জঙ্গি হামলা করা হতে পারে।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে টেস্ট ম্যাচ খেলতে ঢাকায় আসার সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ক্রিকেট দল।

বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণে বার্ষিক পার্টি ‘গ্লিটার বল’কে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পার্টিতে এলভিস প্রিসলি, মৎস্যকন্যা বা স্টার ট্রেক ছবির চরিত্রগুলোর মতো সাজ-পোশাক পরে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা এই পার্টিতে অংশ নেন। সম্ভাব্য এই হামলার বিষয়ে ব্রিটেন ও মার্কিন দূতাবাসও একই ধরনের সতর্কবার্তা জারি করে।

তাভেলাকে হত্যার আগেই তথ্য দেওয়া হয় শেখ হাসিনাকে

জঙ্গিবাদ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভয়কে গত ২৭ সেপ্টেম্বর নাকচ করে দেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সময়ই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে নিজেদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানান মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে এই সতর্কবার্তাকে হতাশাব্যঞ্জক ও অমীমাংসিত বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তাঁর সফরসঙ্গী ও উপদেষ্টা গওহর রিজভী এ কথা জানান। গওহর রিজভী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো ‘ব্যবস্থা নেওয়ার মতো কোনো তথ্য’ দেয়নি এবং কোত্থেকে এসব কথ্য পেয়েছে তাও জানায়নি।

এক সাক্ষাৎকারে গওহর রিজভী বলেন, ‘তথ্য আদান-প্রদানে আমাদের অনেক পুরনো ইতিহাস রয়েছে। কেন এই সময় আপনারা এক পক্ষীয় বক্তব্য দিচ্ছেন এবং  তথ্য আদান-প্রদান করছেন না?’

শেখ হাসিনার এই উপদেষ্টা আরো বলেন যে, অতীতেও মার্কিনিদের তাদের দেওয়া তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিশ্বের কাছে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। ইরাকের কাছে বিধ্বংসী অস্ত্র আছে— এমন ভ্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। সাক্ষাৎকারো রিজভী প্রথমে জানান, ২৫ বা ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জানানো হয়েছিল। পরে তিনি জানান ২৮ সেপ্টেম্বরই এ কথা জানানো হয়।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জগিং করার সময় ঢাকার কূটনৈতিক জোনে ইতালীয় ত্রাণকর্মী চেসারে তাবেলাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর কয়েকঘণ্টা পরই হত্যার দায় স্বীকার করে মোবাইল মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম এবং সন্দেহভাজন টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বার্তা পাঠায় ইসলামিক স্টেট বলে জানায় ইসলামিক প্রচারণা নিরীক্ষণ করা সাইট গোয়েন্দা সংস্থা।

বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই বার্তা সঠিক নয়। একই কথা তারা বলে জাপানি নাগরিককে হত্যা ও শিয়া জমায়েতে বোমা হামলার পরও।

বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের অবস্থানের সম্ভাব্যতা আছে তা ধরে নেওয়াকে হঠকারিতা বলেও মন্তব্য করেন গওহর রিজভী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে বেসামাল করতে বিরোধী দল এই প্রচারণা চালাচ্ছে।

গওহর রিজভী বলেন, “হয়তো কেউ ভেবে থাকতে পারে যে সরকার তো শুধু সুনাম কামাচ্ছে, এবার কিছু ঝামেলা করা যাক। … এ সরকার অনেক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। সেদিন ছিল তাঁর [শেখ হাসিনার] জন্মদিন। যখন তিনি তাঁর বক্তব্য দেবেন, তখনই এই ঘটনা ঘটেছে।’

ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, এই সতর্কবার্তা অনেক দেরিতে এসেছিল। ফলে তাবেলার মৃত্যু প্রতিহত করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘ঘটনার আগেই তাদের উচিত ছিল আমাদের সাথে নির্ভরযোগ্য তথ্য ভাগাভাগি করে নেওয়া। যদি তারা সেটা করত তাহলে হয়তো এই হত্যাকাণ্ড ঠেকানো যেত।’

বাংলাদেশের এই সমালোচনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ন্যান্সি ভ্যানহর্ন। এমনকি গোয়েন্দা তথ্যের অপব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশেরও কোনো সমালোচনা করেননি তিনি। ন্যান্সি বলেন, ‘বিদেশি দেশগুলোর সরকার তাদের কাছে থাকা তথ্য বাংলাদেশের সঙ্গে আদান-প্রদান করেছে। তবে জঙ্গি আক্রমণকে চিনতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ, যেটা আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশে দেখলাম। এই চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত।’

ইউনিভার্সিটি অব হাইডেলবার্গের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সেগফ্রাইড ও উলফ বলেন, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বাংলাদেশ থেকে পাওয়া সংবেদনশীল তথ্য অপব্যবহারের ভয়ে দিতে সম্মত হয় না। দেশটি চরম রাজনৈতিক মেরুকরণের খপ্পরে পড়ে আছে এবং সেখানে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব ও কোন্দল রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তাছাড়া, বাংলাদেশের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গভীর অনাস্থা তৈরি হওয়ায় এবং ১৯৭৫ সালে বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পেছনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার হাত আছে এমন সন্দেহের কিছু ব্যক্তিগত উপাদান থাকায় শেখ হাসিনারও মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ওপর অনাস্থা আছে। সাম্প্রতিক সময় ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে তার দলের জয়ের পর ওয়াশিংটনের শীতল প্রতিক্রিয়ায় হতাশ ছিলেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ওপর থেকে জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণেও কিছুটা হতাশ তিনি।

‘দুই ফোঁটা পানি মানে বৃষ্টি নয়’

তবে শেখ হাসিনার এই সংশয়বাদকে সমর্থন করেছে কিছু দেশ। ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার এ নিকোলাভ পরামর্শ দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা হুমকির পরিমাণকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করছে। দুই বিদেশিকে হত্যা ঘটনার পর তিনি বলেন, ‘দুই ফোঁটা পানি মানে বৃষ্টি নয়।’

এসব ঘটনার এক মাস পর, প্রাথমিক আতঙ্ক কেটে যাওয়ার পর ঢাকার বিপণিবিতান ও পাঁচতারা হোটেলগুলোতে আবারও বিদেশি নাগরিকদের দেখা যেতে শুরু করেছে। কিন্তু তাঁরা রাস্তায় হাঁটছেন না, মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেলে চড়েও যাতায়াত করছেন না। দেশটির অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি পোশাক রপ্তানি শিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাধারণত শীত মৌসুমের পোশাকের রপ্তানির আদেশ দিতে যেসব বিদেশি ক্রেতাদের সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল তাঁদের অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন।

বাংলাদেশে বসবাসরত কূটনীতিকরা এই হুমকিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। একজন জ্যেষ্ঠ পশ্চিমা কূটনীতিক নাম না প্রকাশের শর্তে নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, অতিরিক্ত হুমকি বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশিদের ওপর স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তিনি বলেন, ‘এটা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বোতলের দৈত্য তার বোতলে ফিরে যাচ্ছে না। এটার পরিবর্তন হচ্ছে না।’

জঙ্গি কার্যকলাপের কারণে এরইমধ্যে যেসব বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উদ্বেগকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

বাংলাদেশি সাংবাদিককে হুমকি

গত মাসে বাংলাদেশের বিশিষ্ট দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানকে তার মোবাইল ফোনে মেসেজের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়। চীনের উইঘুরের ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন নিয়ে একটি নিবন্ধ লেখারপর এই হুমকি পান তিনি। এ বিষয়ে নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেন, ‘যেভাবে এই সরকার দেশে ইসলামিক স্টেটের অস্তিত্ব নেই বলে প্রচার চালাচ্ছে তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

মোবাইল ফোনে পাঠানো ওই হুমকিতে বলা হয়, ‘ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখা বন্ধ করুন। তা না হলে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে দোজখে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা এখানে আছি।’

এর দুই সপ্তাহ পরে রিকশায় চড়ে যাওয়ার সময় একজন অচেনা ব্যক্তি তার গতিরোধ করে এবং বন্দুক দিয়ে ভয় দেখায়। তিনি দ্রুত পাশের একটি চকলেটের দোকানে পালিয়ে যান। যখন তিনি এসব বিষয়ে পুলিশের কাছে সাহায্য চাইতে যান, তখন পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে রিকশায় চড়তে নিষেধ করে দেন। এরপর থেকে টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ঘটনাটি জানার পর তাঁর পত্রিকার সম্পাদকের পরামর্শে কর্মস্থলে আসার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন পথ ব্যবহার করছেন বলেও জানান মিজানুর রহমান খান।

এই সাংবাদিক বলেন, ‘সত্যিকারের বিপদ বোঝার জন্য আমরা খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছি। সরকারের পক্ষ থেকে কিছুই শুনতে পাচ্ছি না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও কিছু জানানো হচ্ছে না। হুমকিটা কি বিষয়ে ছিল, এ বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া কী এবং কেন তারা সহযোগিতা করছে না সে বিষয়েও আমরা কিছুই জানতে পারছি না।’

অনুবাদ : সিরাজুম মুনিরা

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

নুর ইস্যুতে রনি: তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু হবে না

পটুয়াখালী-৩ আসনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের নুরকে সাংগঠনিকবিস্তারিত পড়ুন

বুধবার ফের অবরোধের ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা

অধিভুক্তি বাতিল করে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করতেবিস্তারিত পড়ুন

৩৮তম বিসিএসের ফল কোটামুক্ত প্রকাশ করতে হাইকোর্টের রুল

৩৮তম বিসিএসের ফল কোটামুক্তভাবে পুনর্মূল্যায়ন করে প্রকাশ করতে রুল জারিবিস্তারিত পড়ুন

  • নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির প্রধান হচ্ছেন যিনি
  • ২০ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
  • ধানমন্ডিতে প্রকাশ্যে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনতাই
  • চালের আমদানি শুল্ক মওকুফের সুপারিশ
  • নাহিদ: বিজয় অর্জন না হলে সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দিয়ে রেখেছিলাম
  • জামায়াত আমির: ভোটের ময়দানে ফিরে আসার নৈতিক অধিকার নেই আওয়ামী লীগের
  • গাজায় এক বছরের যুদ্ধে ৪৩,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত
  • প্রথমবারের মতো জনসভায় বিজয়
  • পটুয়াখালীতে নুরের পক্ষে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে বিএনপির নির্দেশ
  • শিল্প কারখানায় ফের গ্যাস সংযোগের সম্ভাবনা, সুখবর নেই গৃহস্থালিতে
  • কাজে যোগ না দেওয়া পুলিশ সদস্যদের পাসপোর্ট বাতিল হচ্ছে
  • প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং: কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার