বুধবার, নভেম্বর ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

বানের পানিতে ডুবে নিখোঁজ ৭

জামালপুরে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণের জন্য হাহাকার

জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জের পাঁচ লক্ষাধিক বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে স্কুল ও কলেজ ছাত্রসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

ইসলামপুরের গঙ্গাপাড়া গ্রাম থেকে নৌকাযোগে আজ বুধবার সকালে ইসলামপুরের নোয়ারপাড়া, চিনাডুলি, সাপধরী, কুলকান্দি, বেলগাছা, ইসলামপুর সদর ও পাথশী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। অধিকাংশ গ্রামে ঘরের চাল পর্যন্ত পানি হয়েছে। এসব ইউনিয়নের পানিবন্দি মানুষগুলো নিজ বাড়ির পাশে রাস্তায় বাঁশের টং পেতে অর্ধাহারে অনাহারে সময় কাটাচ্ছেন। একইদিন দুপুরে ইসলামপুরের সাপধরী ইউনিয়নের জোরডোবা, কাসারীডোবা, চর শিশুয়া ও চেঙ্গানিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে ওইসব গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘরের চাল পর্যন্ত বন্যার পানি বইছে। সাপধরী ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার মানুষ মণ্ডলপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নেওয়া চান মিয়া প্রামাণিক, মোস্তাফিজুর, বুদু মণ্ডল ও সিদ্দিক প্রামাণিকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তাদের প্রত্যেকের বাড়িঘরে তিন ফুট থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত পানি হওয়ায় তারা বাড়িঘর ছেড়ে ওই প্রকল্পে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে প্রত্যেকের মাঝে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করায় তাদের মাঝে ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে।

একই দিন বিকেলে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের মশামারী, হাড়গিলা, করিতাইড়, তাড়তাপাড়া, উলিয়া ও সোনামুখি গ্রামসমূহে গিয়ে দেখা গেছে ওইসব গ্রামের পানিবন্দি মানুষগুলো নিজ বাড়িঘরের কাছে উলিয়া-মাহমুদপুর সড়কের জিন্নাখালি ব্রিজ, করির তাইর ব্রিজ ও উলিয়া পাইলিংঘাটে গরু-বাছুর নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের কারও বাড়িতেই রান্না করে খাবার ব্যবস্থা নেই।
ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের বলিয়াদহ গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ গবাদি পশু ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বলিয়াদহ ব্রিজের উপর আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে আশ্রয় নেওয়া আব্দুর রউফ মণ্ডল, মেজর আলী ও সোনা মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, “চার দিন ধরে এখানে আশ্রয় নিয়ে মরার দশা হইছে। বাড়িঘরসহ চারদিকে পানি আর পানি। ভাত রান্না করে খেতে পারি না। গরুগুলোকেও ঘাস খাওয়াতে পারছি না। কেউ আমাদের খোঁজও নেয়নি। গরু-বাছুরের সাথেই পোলাপানকে নিয়ে আমাদেরকেও এই ব্রিজের উপরে না খেয়ে মরতে হচ্ছে। ”

ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম জানান, তার ইউনিয়নের শিংভাঙ্গা, বামনা, গিলাবাড়ি, বলিয়াদহ গ্রামের সহস্রাধিক বাড়িঘরে ছয় ফুট পর্যন্ত পানি হওয়ায় ওইসব বাড়িঘরে কোনও মানুষ নাই। ওই এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি বানের পানির তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে। ওইসব বাড়িঘরের মানুষগুলো বিভিন্ন ব্রিজ ও উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েও পানিবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন।

ইসলামপুরের পাথর্শী ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুল জানান, তার ইউনিয়নের শ্বশারিয়াবাড়ি, মুরাদাবাদ, পাথর্শী, জারুলতলা, হাড়িয়াবাড়ী ও মুখশিমলা গ্রামসমূহের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে। বন্যার কারণে মুরাদাবাদ গ্রামের পাঁচটি পাকা বাড়ি ধসে পড়েছে এবং শতাধিক বাড়িঘর বন্যার তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে। এই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ মলমগঞ্জ হাইস্কুল, হাড়িয়াবাড়ী হাইস্কুল, মলমগঞ্জ কলেজ এলাকার বিভিন্ন উঁচু রাস্তা ও ব্রিজের উপর আশ্রয় নিয়েছে।

বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, তার ইউনিয়নে মন্নিয়া, শিলদহ, সিন্দুরতলী,বরুল, জারুলতলা, মাঝপাড়া, ধনতলা ও ঘোনাপাড়া গ্রামসমূহের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এ ইউনিয়নে মন্নিয়া, শিলদহ, সিন্দুরতলী ও বরুল গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর যমুনার তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে।

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম এহছানুল মামুন জানান, ইসলামপুরের সাতটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪৮ হাজার পরিবারের এক লাখ ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এসব পানিবন্দিদের মাঝে ২৭ মেট্রিকটন চাল ও ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইসলামপুরের ১৮টি স্থানে খিচুড়ি রান্না করে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।

এদিকে, জামালপুরের মেলান্দহে বন্যার পানিতে ডুবে পাঁচজন এবং বকশীগঞ্জে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মেলান্দহ পৌর এলাকার নলবাড়িয়া গ্রামের ময়না মিয়ার স্কুল পড়ুয়া ছেলে সজিব মিয়া (১৪) এবং নাগেরপাড় গ্রামের জিল্লুর রহমান (১৪) নামের দুই বন্ধু বন্যার পানি দেখতে রাস্তায় গেলে বুধবার সকাল ১০টায় পানির স্রোতে ভেসে যায় তারা। এ সময় ভালুকা গ্রামের লাল মিয়া (৪০) তাদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান। সজিব ও জিল্লুর উমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র। এ ছাড়া একই দিন সকালে মেলান্দহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের আটবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক আজিবন মোল্লা নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

এর আগের দিন মেলান্দহ উপজেলার কুলিয়া গ্রামের কমল শেখ (২১) নামের একজন কলেজ ছাত্র বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। তিনি কুলিয়া গ্রামের পাগু শেখের ছেলে। তিনি মেলান্দহ আলেয়া আজম কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মেলান্দহ থানার ওসি মাজহারুল করিম ঘটনাগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে, বকশিগঞ্জ উপজেলার ধুমালীপাড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে মোজাম্মেল হক (১৬) নামের এক প্রতিবন্ধী বন্যার পানিতে গোসল করতে গিয়ে আজ বুধবার সকালে পানিতে ডুবে মারা গেছে। একই উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের গাজীরপাড়া গ্রামের হুয়ারুল গাজীর ছেলে ইলিয়াছ গাজী (১৬) বাঁশের সাঁকো থেকে কাটাখালি খালে পড়ে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। বকশিগঞ্জ থানার ওসি আসলাম হোসেন বিষয়গুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন

  • কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
  • সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
  • সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টি
  • রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর আত্মহত্যা
  • ছুটি শেষে কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর
  • নোয়াখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ
  • নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন
  • সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
  • সবুজবাগে পরিবেশমন্ত্রীর সেলাই মেশিন বিতরণ