জিকা ভাইরাস: সন্তান সুস্থ হবেতো?
ব্রাজিলে জিকা সংক্রমণে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৪৫জন শিশু মাইক্রোসেফালি বা অপরিপক্ক মস্তিস্ক নিয়ে জন্ম নিয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ আরও চার হাজার দুইশো কেইসের নমুনা পরীক্ষা করে দেখছে। চেষ্টা চলছে জিকা ভাইরাসের সাথে মাইক্রোসেফালির সম্পর্ক বোঝার। এসব কিছুর মাঝে ব্যাপক উদ্বেগে রয়েছে ব্রাজিলের গর্ভবতী মায়েরা। তার সন্তানটি সুস্থ হবে তো? ব্রাজিলের কামপিনা গ্রানজে এলাকার একটি হাসপাতালে একজন মা এসেছেন তাঁর সন্তানটি কেমন আছে তা পরীক্ষা করে দেখতে। উদ্বিগ্ন মাকে গর্ভের শিশুর হৃদস্পন্দন শুনিয়েছেন ডাক্তার। গর্ভের শিশুটি এখন ৩৫ সপ্তাহ পার করছে। স্ক্যানিংয়ে দেখা গেলো গর্ভের শিশুটি কন্যাশিশু। শিশুর শক্তিশালী হৃদস্পন্দন শুনে দুশ্চিন্তার মধ্যেও মুখে একটু হাসি ফুটে উঠলো মা এডনা মেনদোসার। গর্ভধারণের দুইমাসের মাথায় জিকা আক্রান্ত হয়েছিলেন এডনা। সবকিছু এতদিন পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিলো। কিন্তু এখন ডাক্তার বলছেন আল্ট্রাসাউন্ডে শিশুর মাথা খানিকটা ছোট দেখা যাচ্ছে।
ডাক্তার বলছেন, এটা এমন একটা খবর যা ব্রাজিলের গর্ভবতী মায়েদের কেউ শুনতে চাননা। ব্রাজিলে যেসব গর্ভবতী নারী জিকা আক্রান্ত হয়েছেন বা হচ্ছেন তাদের কামপিনা গ্রানজে এলাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য। হাসপাতালে ভিড় করছেন অনেক গর্ভবতী নারী। এখানেই পরীক্ষার পর হয়তো কারো মুখে হাসি ফুটবে। আর কেউ মনে ভয় নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। এক বিকেলেই ১৭ জন নারীকে পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে এডনাই একমাত্র যে মাইক্রোসেফালি আতঙ্ক নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। জিকা আক্রান্ত এডনা বলেন এর পরেরবার স্ক্যান করতে আসার সময় হয়তো খানিকটা শান্ত বোধ করবো। কিন্ত এখন বুকের মধ্যে দুরুদুরু করছে। খুবই দুশ্চিন্তায় আছি।
ডাক্তার আদ্রিয়ানা মেলোকে বলা হয় একজন পাইওনিয়ার যিনিই প্রথম জিকা ভাইরাসের সাথে মাইক্রোসেফালির সম্পর্ক ধরতে পারেন। একটি সুস্থ শিশু এবং মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত শিশুর মাথার স্ক্যান দেখিয়ে তিনি বলেছেন দুটোর মধ্যে তফাৎটা আসলে কী। আমরা নানা ধরনের কেস পাচ্ছি। কখোনো শুধু ছোট মাথা পাওয়া যাচ্ছে অথবা ছোট ক্যলসিফিকেশন পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কিছু কেইস আছে যেগুলো আরো গুরুতর। যাতে দেখা যাচ্ছে শিশুটির কোন মস্তিষ্কই তৈরি হয়নি, ভেতরে তরল পদার্থ এবং তার মাথার হাড় ও পেশী পরিপক্কতা পায়নি-বলেন ডাক্তার আদ্রিয়ানা মেলো। এই হাসপাতালে মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত শিশুদের জন্য একটি আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে।
আক্রান্ত শিশুদের মায়েরা এখানে একত্রে বসে গল্প করেন। যেন তারা অনেক দিনের পুরোনো বন্ধু। এখানে আসা একজন মা আলেসান্দ্রা আমোরিম বলছেন এই সন্তানকে তিনি জীবন দিয়ে ভালবাসবেন। আমার চার মেয়ে। ঈশ্বরের কাছে একটা ছেলে চেয়েছিলাম। সে আমাকে যে শিশুটি পাঠিয়েছে সে একটি বিশেষ শিশু। আমিও সেভাবেই তাকে যত্ন করবো। পৃথিবীতে এমন কোন শক্তি নেই যা আমাকে এই শিশুর ভবিষ্যত নিশ্চিত করা থেকে দুরে রাখবে। সেই এখন আমার জীবন। মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত শিশুদের এই মায়েদের জীবন পুরোটাই বদলে গেছে। আর এডনা মেনদোসার মতো গর্ভবতী নারীরাও অপেক্ষা করছেন কোন এক কঠিন সময়ের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন