জীবনের শখ, হাতির সাথে ছবি তুলতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু!
সামনে থেকে হাতির পাল দেখার শখ ছিল অনেকদিনের। নিজের ইচ্ছার কথা বহু বার জানিয়েছিলেন পরিচিতদের। তাই শুক্রবার দুপুরে সে শখ মেটানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৮)। কিন্তু ছবি তুলতে গিয়ে হাতির হামলায় গুরুতর জখম হন মেদিনীপুর শহরের ওই কংগ্রেস কাউন্সিলর। মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মেদিনীপুর সদর ব্লকে হাতির তাণ্ডব চলছে। প্রায় দেড়শোটি হাতি চারটি দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। লোকালয় থেকে হাতি তাড়ানো শুরুও করেছে বন দফতর। সেই তাড়া খেয়ে শুক্রবার সকালে হাতির একটি দল কংসাবতী পেরিয়ে মানিকপাড়ায় ঢোকে। এক পরিচিতের মাধ্যমে এ দিন সকালে খবরটা পৌঁছয় কৌস্তভের কাছে। সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি তিনি।
বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তিরিশ কিলোমিটার উজিয়ে আট বন্ধু মিলে মোটরবাইক চেপে রওনা হন মানিকপাড়ার জঙ্গলের উদ্দেশে। তখন সেখানে ভিড় করেছিল গোটা দশেক হাতি। রাস্তা থেকেই হাতির পাল দেখতে পেয়ে মোটরবাইক রেখে জঙ্গলে দৌড় দেন কৌস্তভ ও তাঁর সঙ্গীরা। হাতের মোবাইলে উঠতে থাকে পরের পর ছবি। আচমকা একটা দাঁতাল ঘুরে দাঁড়ায়।
কৌস্তভের সঙ্গী মহম্মদ সইফুলের কথায়, ‘‘হাতিটা ও রকম ভাবে ঘুরে দাঁড়াতেই আমরা দৌ়ড় লাগাই। কৌস্তভদা পালাতে পারেনি। কিছুক্ষণ পরে গ্রামের লোকের কাছে শুনি, হাতিটা না কি কাউকে আছাড় মেরেছে। গিয়ে দেখি, কৌস্তভদা পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।’’
বন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘জংলি হাতির থেকে সব সময় নিরাপদ দূরত্বে থাকা উচিত। অত্যুৎসাহীরা সেটা ভুলে যান। সব সময়ে তাঁদের সরিয়ে দেওয়াও সম্ভব হয় না। সে জন্যই এই দুর্ঘটনা।’’ গুরুতর জখম অবস্থায় কৌস্তভকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকপা়ড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান কৌস্তভ।
ওষুধ ব্যবসায় জড়িত এলাকায় কৌস্তভ বরাবরই পশুপ্রেমী বলে পরিচিত। বাড়িতে তাঁর পোষা কুকুর রয়েছে। বাবা মারা গিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধা মা ছাড়া আর কেউ নেই। বিবাহিতা দিদি বেড়াতে গিয়েছেন গ্যাংটকে। রাত পর্যন্ত কৌস্তভের বাড়িতে মৃত্যুসংবাদ দেননি ঘনিষ্ঠেরা।
ছাত্র পরিষদ কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে হাতেখড়ি কৌস্তভের। ২০১৩ সালের পুর-নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িয়ে জয়ও পান। বিরোধী দলের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। কৌস্তভের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি, সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। দীনেনবাবু বলেন, ‘‘কৌস্তভ অন্য রকমের ছেলে ছিল। সকলের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলত।’’ আর কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘পুজোর দিনে এমন জলজ্যান্ত ছেলেটা আর নেই। ভাবতেই পারছি না!’’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘাতের মাঝেও তেহরানের বায়ুমান ঢাকার চেয়ে ভালো
সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।বিস্তারিত পড়ুন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেবিস্তারিত পড়ুন