জেলে বসে সোর্স আসলামকে হত্যার ছক কষেন রহিমা
যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ এলাকায় ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ হিসেবেই পরিচিত রহিমা বেগম। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, প্রতি মাসে তিনি অন্তত এক কোটি টাকার মাদক বিক্রি করেন। সেই রহিমাকে হেরোইনসহ পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়েছিলেন সোর্স আসলাম শিকদার। এটাই ছিল তার অপরাধ। এ কারণে জেলে বসেই তাকে হত্যার ছক কষেন রহিমা।
জামিনে বের হওয়ার পর তিনি স্বামীসহ অন্যদের দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এলাকার বাসায় আসলামকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতার ১১ জনের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য ও তাদের পাঁচজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে ডিবি।
আজ বুধবার এক জাতীয় দৈনিকের খবরে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর রাতে দনিয়া কবরস্থান রোডের বাসা থেকে ৫৫ বছর বয়সী আসলামের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিজের ঘরে কাঁথা জড়ানো অবস্থায় তার লাশটি পড়ে ছিল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাইনুল ইসলাম বলেন, রহিমা বেগম এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী। তার স্বামী হযরত আলীসহ কয়েকজন সরাসরি হত্যায় অংশ নেয়। বাকিরা বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অন্তত সাতজনের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত ইয়াবা ও হেরোইন বিক্রি করেন রহিমা। তার অধীনে রয়েছে মাদক বিক্রির একটি বড় নেটওয়ার্ক। যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গেণ্ডারিয়া, দয়াগঞ্জ, মীরহাজিরবাগসহ বেশ কিছু এলাকা তার নিয়ন্ত্রণে। তার কাছ থেকে ইয়াবা-হেরোইন কিনে খুচরা বিক্রি করে অনেকে। মাদক ব্যবসা থেকে আয় করা বিপুল অঙ্কের টাকার ভাগ পায় স্থানীয় প্রভাবশালীরাও। এ কারণে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হলেও তাকে ধরা সহজ ছিল না। ঘটনার তদন্তে নেমে অন্য আসামিদের গ্রেফতারের পর হত্যায় রহিমার সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এর পর থেকে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিল। দীর্ঘ চেষ্টার পর সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার কথা স্বীকার করলেও তিনি আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। তবে এরই মধ্যে এ ঘটনায় পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হলো রহিমার স্বামী হযরত আলী, তার সহযোগী জহির, গিয়াস উদ্দিন গেসু, ছয় ইঞ্চি সুমন ও আরমান।
বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারের পর দেওয়া জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করে, রহিমার পরিকল্পনা অনুযায়ী হযরতের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। তারা গুলি করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
এরপর লাশ কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে রেখে বের হয়ে যায়। এ ছাড়া কফিল উদ্দিন ওরফে কপ্পুর হত্যায় সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হলেও তিনি জবানবন্দি দেননি। গ্রেফতার অন্যদের মধ্যে রয়েছে দীন ইসলাম দেলা ওরফে রুটি খাওয়া দেলা, মনির হোসেন, মনিরুল ইসলাম রবিন ও বেবী।
তদন্ত সূত্র জানায়, আসলাম নিজেও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন। রহিমার সঙ্গেও তার ভালো যোগাযোগ ছিল এক সময়। তবে পরে কোনো বিষয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে আসলাম তাকে ধরিয়ে দেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রহিমা। প্রতিশোধ নিতে তিনি জেল থেকে বেরিয়েই এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। এর মধ্য দিয়ে তিনি মাদক ব্যবসার পথ নির্বিঘ্ন করারও চেষ্টা চালান।
তদন্তে হত্যারহস্য উদ্ঘাটিত হওয়ায় শিগগিরই মামলাটির চার্জশিট দেওয়া হবে জানালেন ডিবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন