জ্বালানি তেলের দাম কমছে না?
অর্থমন্ত্রী জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের আভাস এর আগে দিলেও তা যে হচ্ছে না, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায়। বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেছেন, “আপনারা তো এই দামে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। কারও তো অসুবিধা হওয়ার কথা না।”
তেলের দাম না কমিয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ আরও কমিয়ে আনার পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের সময় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সেই হারে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিশ্ব বাজারে গত এক বছর ধরে জ্বালানি তেলের দরপতন চললেও ভর্তুকির লোকসান থেকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে তুলতে দাম অপরিবর্তিত রাখে সরকার। তবে গত সপ্তাহে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, সেপ্টেম্বরে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের পরিকল্পনা সরকারের আছে।
কিন্তু পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বুধবার এক অনুষ্ঠানে তেলের দাম না কমানোর পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, আবারও যে কোনও মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে। এখন কমিয়ে দিলে তখন আবার সরকারকে তেলের দাম বাড়াতে হবে। সরকারের পক্ষে এভাবে ঘন ঘন তেলের দাম পরিবর্তন করা কঠিন কাজ।
বাংলাদেশে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে সেখানে তেলের দাম কমানোর বিষয়টি আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ বললেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে গেছে, দেশের বাজারে কেন তেলের দাম কমানো হয় না।”
বিদেশ থেকে বেশি দামে তেল কিনে দেশের বাজারে ভর্তুকি দিয়ে কম দামে বিক্রি করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম বেড়েছে, আমাদের কিন্তু ওই দামেই কিনতে হয়েছে। আর, এখানে আমরা দিয়েছি কম দামে।… ফলাফল হচ্ছে, ৩৮ হাজার কোটি টাকার লায়াবিলিটিস।”
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় সরকার এখন কিছু ‘অর্থ উপার্জন’ করতে পারছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা ব্যবসায়ী নেতাদের বলেন, “তেলের দামটা কমার ফলে যেটা হচ্ছে, আমরা কিছুটা অর্থ উপার্জন করতে পারছি। ধীরে ধীরে আমরা দায় দেনাটা শোধ দিতে পারছি।”
তারপরও বিপিসির ২৯ হাজার কোটি টাকা পুঞ্জীভূত লোকসান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত খুব বেশি হয় নাই। মাত্র আট হাজার কোটি টাকার মতো আমি শোধ দিতে পেরেছি।”
শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, “এই লায়াবিলিটিসটা কেন কাঁধে রাখব?” অবশ্য পুঞ্জীভূত লোকসানের এই অর্থ ব্যবসায়ীরা ‘দিয়ে দিলে’ সরকার তেলের দামও কমিয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যদি দিয়ে দেন, সবাই মিলে.. আমরা সাথে সাথে তেলের দাম কমিয়ে দেব।”
ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোর পক্ষেও অনুষ্ঠানে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সুদ হার একটা লিমিটে আনা হয়েছে। চেষ্টা করব, সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে।” মুসলিম দেশগুলোতে হালাল মাংস রপ্তানির জন্য ব্যবসায়ীদের আরও উদ্যোগী হতে তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।
গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস ও মৎস্য আহরণের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ী নেতাদের বলেন, “গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে আগ্রহী হতে হবে।”
দেশের অভ্যন্তরে নতুন বাজার সৃষ্টির জন্যও ব্যবসায়ীদের কাজ করতে বলেন তিনি। “শুধু রপ্তানি নয়, অভ্যন্তরীণ বাজার সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যত বাড়বে, অভ্যন্তরীণ বাজার তত বাড়বে।”
সবাইকে আয়কর দিতে উৎসাহ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ট্যাক্স দিলে তো আপনাদের কাজেই লাগে। আপনারা যখন ইনসেনটিভ চান, তখন কোথা থেকে দেব?” এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবুল মতলুব আহমদ ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিক ওয়েস্টবিস্তারিত পড়ুন
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভবিস্তারিত পড়ুন
যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদেরবিস্তারিত পড়ুন