ঝুঁকিতে ফরিদপুরের সেই নবজাতক
স্বাভাবিক অবস্থায় একটি শিশু ১০ মাস ১০ দিন মাতৃগর্ভে থাকার পর ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু ফরিদপুর সদর উপজেলায় দাফনের আগে কেঁদে দেওয়া শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয় ৫ মাস ২২ দিনে।
অসময়ে জন্ম নেওয়া শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকরা। পরে ভাগ্যগুণে বেঁচে যাওয়া শিশুটির অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা করা হচ্ছে।
শিশুটিকে বর্তমানে ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এই হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা শিশুটির চিকিৎসাসেবা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ফরিদপুর শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা ক্রিকেটার নাজমুল হুদা (২৬) ও গৃহিণী নাজনীন আক্তার পপি (২৩) দম্পতির প্রথম সন্তান এই মেয়েশিশুটি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে তার ভূমিষ্ঠ হওয়া কথা ছিল। কিন্তু তার অনেক আগে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দেড় ঘণ্টা পর তাকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা দেন। পরে সকাল ৬টার দিকে শহরের আলীপুর কবরস্থানে দাফন করার সময় শিশুটি কেঁদে ওঠে।
নবজাতকের দাদা মো. আবুল কালাম মিয়া বলেন, ‘আমরা ওর নাম রেখেছিলাম গালিবা হায়াত।’
‘ডাক্তাররা আমাদের শিশুটিকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের আর্থিক অবস্থা আর ওর শারীরিক যে অবস্থা, তাতে ফরিদপুর থেকে ঢাকা যাত্রা করা কঠিন।’
শিশুটিকে মৃত ঘোষণার ঘটনায় জাহেদ মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছে। আজ শনিবার তদন্ত দল বিভিন্ন জনের সাক্ষাৎকার নেবে।
জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য শওকত আলী জাহিদ বলেন, ‘ওই ঘটনাটি তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
চিকিৎসকদের ভাষ্য
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহেদ মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সজল কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা এখানে চিকিৎসার কোনো রকম ত্রুটি করছি না। তার পরও বাচ্চাটি যেহেতু অনেক আগেই ভূমিষ্ট হয়েছে, সমস্যাটি এখানেই। কারণ তার অনেক অর্গান (অঙ্গপ্রত্যঙ্গ) ঠিক মতো তৈরি হয়নি। আমাদের এখানে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে তা দিয়ে এর চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব নয়।’
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ খোন্দকার মো. আবদুল্লাহ হিস সায়াদ বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তির পর আমি তিনবার শিশুটিকে দেখেছি। যে বয়সে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তাতে বেঁচে থাকা কষ্টকর। তবে শিশুটিকে নবজাতকদের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া গেলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।’
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন অরুণ কান্তি বিশ্বাস বলেন, ওই শিশুটির চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ খোন্দকার মো. আবদুল্লাহ হিস সায়াদকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফরিদপুরে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ধর্ষণকারী আটক
ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়া বাজার এলাকায় সাত বছরেরবিস্তারিত পড়ুন
ফরিদপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
ফরিদপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণেরবিস্তারিত পড়ুন
নদীতে ডুবে প্রাণ গেল চার শিশুর
ফরিদপুরের নগরকান্দায় কুমার নদে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজবিস্তারিত পড়ুন