টিআইবিকে ৩ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিলেন সুরঞ্জিত
জাতীয় সংসদ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য টিআইবিকে ক্ষমা চাইতে তিন দিন সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
সোমবার সন্ধ্যায় দশম সংসদের অষ্টম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ সময়সীমা বেঁধে দেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, টিআইবিকে তিন দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নিয়ে করা সকল মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। এছাড়া আর কখনো জাতীয় সংসদ ও সংবিধান সম্পর্কে কথা না বলার অঙ্গীকার করতে হবে। অন্যথায় সংসদ যদি সংস্থাটিকে সাসপেন্ড করে সে বিষয়ে কিছু করার থাকবে না বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘এই সংসদ থেকে আমি তাকে (ইফতেখারুজ্জামান) আবারও তিন দিনের সময় দিতে চাই। অবিলম্বে তিনি ক্ষমা চাইবেন। জীবনেও কোন দিন সংবিধান এবং পার্লামেন্ট সম্পর্কে কথা বলবেন না-এই অঙ্গীকার করলেই কেবল আমরা মেনে নেব।’
তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ এনজিও বান্ধব দেশ। এনজিও বান্ধব অর্থ এই না, কথায় কথায় পার্লামেন্টকে, সংবিধানকে অবজ্ঞা করবেন।জনগণকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবেন।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে যে ফরেন ডোনেশন আসে এর ১৫ শতাংশ এনজিওর মাধ্যমে খরচ হয়। তার জন্য রাষ্ট্রকে লাগবে, সরকারকে লাগবে ও তাদেরকেও লাগবে। কিন্তু দেশের সংবিধান ও পার্লামেন্টকে অবজ্ঞা করে কেউ যদি কথা বলে তাহলে সেই এনজিও এবং টিআইবিকেও রাখা হবে না। এটা কর্তৃত্বহীন হয়ে যাবে।’
সুরঞ্জিত বলেন, এই আইনটি পাস করার আগে যদি তাদের অবস্থানে পরিবর্তন না হয় তাহলে এই অপরাধে পার্লামেন্ট যদি এই টিআইবিকে সাসপেন্ড করে দেয় আমার কিছু করার নাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রীরও কিছু করার নাই কারণ আইন প্রণয়নের ক্ষমতা এই পার্লামেন্টের।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ফরেন ডোনেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী তারা একটি দায়বদ্ধ সংস্থা। ফরেন ডোনেশন অ্যাক্ট সংশোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রস্তাব এসেছে। এটা এখন আমার কমিটিতে আছে। আর আমার ঘুমানোর উপায় নাই। সব বিদেশি-দেশি এনজিওরা মিটিং করার জন্য পাগল হয়ে গেছে। বিদেশি অ্যাম্বাসেডররাও। যেহেতু এটা বিদেশি সম্পর্কযুক্ত সেহেতু আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী সাহেবকে সঙ্গে রেখে আমি আগেও তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। এমনকি সর্বজন শ্রদ্ধেয় আমাদের ব্র্যাকের ফজলে হাসান আবেদ সাহেব পর্যন্ত আমার এখানে এসেছেন। তাদের পক্ষে এই ইফতেখারুজ্জামান আমার সঙ্গে চার বার কথা বলেছেন। তখন আমি বলেছি, আপনাদের আমি কমিটিতে ডাকবো, আপনারা কমিটিতে এসে কথা বলুন।
ইফতেখারুজ্জামানের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সংসদীয় কমিটি হচ্ছে ছোট সংসদ। সেই পার্লামেন্টে এসে যদি আপনি কথা বলে থাকেন, আবার কিভাবে বলছেন, এই পার্লামেন্টে পুতুল নাচ হয়? তাহলে আপনারা কি বাদর নাচ নেচে গেছেন? আপনারা এসে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা কি বাদর নাচের অর্ন্তগত?
প্রবীণ এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই সংবিধান কাগজ না। সংবিধান এবং পার্লামেন্ট সিনোনিম। এই সংবিধান পার্লামেন্ট তৈরি করেছে। পার্লামেন্ট না থাকলে জনগণ রিপাবলিক থাকে না। সেই রিপাবলিকের আটিক্যাল ৭ অনুযায়ী এই পার্লামেন্ট। এই পার্লামেন্টকে আপনি বলছেন পুতুল নাচ? একটি সার্বভৌম পার্লামেন্ট? ইউ আর ডিফাইন্ড দ্য পিপল।
আলোচনার সূত্রপাত করেন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, মাঈন উদ্দিন খান বাদল, রুস্তম আলী ফরাজী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সার্বিক বিবেচনায় জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ ও বিরোধী দলকে ‘কথিত বিরোধী দল’ বলে মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভারতের সঙ্গে গোপন চুক্তি প্রকাশের আহ্বান হাসনাতের
আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ভারতের সব গোপন চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশেরবিস্তারিত পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেবিস্তারিত পড়ুন
দেশবাসীকে সংযম দেখানোর আহ্বান তারেক রহমানের
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনারবিস্তারিত পড়ুন