ট্যাটু যেমন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে আপনার সম্পর্কে
ট্যাটু অঙ্কনের শখ শুধু ছেলেদের নয়, থাকতে পারে মেয়েদেরও। শরীরে এই স্থায়ী অলঙ্করণপ্রিয় নারীরা সাধারণভাবে সাহসী এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে প্রতিপন্ন হতে পারে। কিন্তু যখন বিষয়টি সঙ্গী নির্বাচনের বা নারীর ব্যক্তিত্ব মূল্যায়ণের তখন ট্যাটু কি আলাদা কোন প্রভাব ফেলে, প্রকাশ করে ভিন্ন কোন মত? এই বিষয়ে ডা. ভিনিতা মেহতা তুলে ধরেছেন আরেকটি গবেষণা। প্রথম পর্বের পর লেখার ২য় পর্বে জানব সেই বিষয়ে-
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে পুরুষেরা নারীর কিছু বিশেষ শারীরিক ইঙ্গিতের প্রতি স্পর্শকাতর, বিশেষ করে কোমরের নীচ থেকে হিপের অংশ, স্তনের আকৃতি, প্রসাধনীর কার্যকরি ব্যবহার, লাল রঙের পোশাক পরা ইত্যাদি যা কিনা যৌন বার্তা বহন করে। কিন্তু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ Nicolas Guéguen তার গবেষণায় ভিন্ন একটি বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি মনে করেন, পুরুষেরা নারীর যৌন আগ্রহ নিয়ে অতিরঞ্জিত ধারণা পোষণ করে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তারা নারীর আচরণকে যতটা যৌনতাকেন্দ্রিক মনে করেন আদতে তা নয়।
Guéguen লক্ষ্য করেন, যেসব নারীর শরীরে ট্যাটু রয়েছে তারা উল্লেখযোগ্য হারে পুরুষের কম মনোযোগ পেয়ে থাকেন। ফ্রান্সে ১২ শতাংশ নারীরা তাদের শরীরে ট্যাটু অঙ্কন করে থেকেন। যুক্তরাষ্ট্রে এই পরিসংখ্যান ২৩ শতাংশ।
Guéguen এর মতামতের সমর্থনে পাওয়া যায় আরও অনেক গবেষণা যেখানে দেখা যায়, ট্যাটু পুরুষের চোখে নারীকে নিয়ে এসেছে নেতিবাচক অবস্থানে। একটি গবেষণায় একজন ২৪ বছর বয়সী নারীর ছবি তুলে ধরা হয়। কিছু পুরুষকে ট্যাটু অঙ্কিত ছবি দেওয়া হয়। নারীটির হাতে আঁকা ছিল ড্রাগনের কালো ট্যাটু। আর অন্য আরেকটি পুরুষ দলের কাছে ট্যাটুবিহীন ছবি দেওয়া হয়। উভয় দলকে বলা হয় নারীটির ব্যক্তিত্বকে রেটিং করতে।
Guéguen লক্ষ্য করেন পুরুষেরা ট্যাটু অঙ্কিত নারীকে কম আকর্ষণীয় মনে করছেন। একই সাথে তাদেরকে এলোমেলো ব্যক্তিত্বেরও মনে করছেন।
কিন্তু বাস্তবেই কি তাই? Guéguen ফ্রান্সের ট্যাটু অঙ্কিত নারীদের উপর একটি গবেষণা করেন। তিনি দেখেন, তারা তুলনামূলক কম বয়স থেকেই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। কিন্তু গবেষণায় এটি পরিষ্কার হয় নি যে, এসব নারীরা কি বেশী আবেদনময়ী নাকি তারা নিজেরাও বিশেষভাবে যৌনক্রিয়ায় আগ্রহী!
আরও ভালভাবে বিষয়টি জানতে তিনি আরও ২টি গবেষণা পরিচালনা করেন। একদল লাল বিকিনি পরা নারীদের বলা হয় বিভিন্ন বীচে যেতে এবং এমন একটি জায়গায় অবস্থান করতে যেখানে অনেক তরুণের সমারোহ থাকবে। তাদের অনেকের শরীরেই লাগানো হয় অস্থায়ী ট্যাটু। ট্যাটুগুলো জনপ্রিয় ট্যাটু হিসেবে জরিপে পাওয়া শীর্ষ অবস্থানের। তাদেরকে বলা হয় বই পড়তে বা শুয়ে কোন কাজ করতে।
ফলাফল ছিল আগের সব গবেষণার উল্টো। দেখা গেছে, ট্যাটু লাগানো নারীরা পুরুষদের মনোযোগ পেয়েছেন ২৩.৬৭ শতাংশ। সেই একই নারীরা ট্যাটুবিহীন অবস্থায় মনোযোগ পেয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ। ট্যাটু লাগানো নারীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী পুরুষেরা অপেক্ষাকৃত কম সময় নিয়েছেন। ট্যাটুবিহীনদের তুলনায় এই পার্থক্য ১১ মিনিটের।
২য় গবেষণায় কাজ দেওয়া হয় পুরুষদের। তাদের বলা হয়, অপরিচিত যুবকদের ইন্টারভিউ নিতে। যুবকদের বলা হবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জরীপের কাজে এই ইন্টারভিউটি নেওয়া হচ্ছে। বীচে শুয়ে থাকে মেয়েটির দিকে দেখিয়ে প্রশ্ন করা হবে। যেমন- নারীটিকে ভালভাবে দেখুন। এরপর বলুন তার সাথে আপনি বন্ধুত্ব বা প্রেম করবেন কিনা, করলেও সেটা কতটা দ্রুত করতে পারবেন? তাদের উত্তরগুলোকে ৯ টি স্কেলে বিচার করা হয় এবং ট্যাটু সহ আর ট্যাটু ছাড়া ২২০টি করে মোট ৪৪০টি ট্রায়াল নেওয়া হয়।
ফলাফলে কিন্তু পাল্লা ভারি ছিল শরীরে ট্যাটু খচিত নারীদেরই। তাদের আকর্ষণ ক্ষমতা যে অন্যদের চেয়ে বেশী এ ব্যাপারে আর কোন সন্দেহই রইল না। সাহসী, অধিক সহ্যক্ষমতা সম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যবান নারী হিসেবেও তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তুলনামূলক বেশী।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন