ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে বাংলাদেশি নারীরা
সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকার নগর-জনপদ। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার পরের দিন প্রতিবাদী নারীদের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ পর্যন্ত আর নারীদের থাকেনি। ওয়াশিংটনে ডাকা এ সমাবেশের রেশ ছিল আমেরিকাজুড়ে। আমেরিকার বাইরেও যেমন প্রতিবাদ হয়েছে, তেমনি নিউইয়র্ক থেকে ক্যালিফোর্নিয়া, শিকাগো নগরীতে সমাবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। ক্ষুব্ধ জনতা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিয়েছে বলে বলা হচ্ছে। আমেরিকার ইতিহাসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে এমন সমাবেশ হয়েছিল বলে বলা হচ্ছে।
সব ধর্ম ও অভিবাসীদের চারণভূমি হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্ক নারী বিক্ষোভের নগরীতে পরিণত হয় গতকাল শনিবার সকাল থেকেই। ম্যানহাটনের অ্যাভিনিউ, অলিগলি, সবখানে নানা বয়সী, নানা বর্ণের হাজার হাজার প্রতিবাদী নারী। উত্তাল প্রতিবাদে শামিল হলেন বাংলাদেশি নারীরাও। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ মুসলিম। নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরাম, মানবাধিকার সংগঠন ড্রামসহ বাংলাদেশিরা জড়িত—এমন নাগরিক আন্দোলনের নারী নেত্রীরা নেমেছেন ম্যানহাটনের রাজপথে। ট্রাম্পবিরোধী ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মুহুর্মুহু স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করছেন এসব নারী। তাঁদের কথা—আমরা অজানা আশঙ্কায় ভুগছি, আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, আমরা হুমকির সম্মুখীন হব, আমরা মুসলমান নারীরা ধর্মীয় স্বাধীনতা চাই।
গতকাল সপ্তাহান্তের ছুটির দিনে ব্যক্তিগত আরাম-আয়েশ ফেলে রাজপথে নেমে আসা নারীদের মধ্যে বাংলাদেশি নিউ আমেরিকান উইমেন ফোরামের প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আক্তার একজন। তিনি বলেন, ‘আমি শঙ্কিত। আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে, মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হবে, আমরা সে আশঙ্কায় রাজপথে নেমেছি, প্রতিবাদ করছি।’
ব্রঙ্কস থেকে নারীদের বিক্ষোভে যোগ দিতে আসা স্কুলশিক্ষক হামিদা বানু বলেন, ‘আমরা সোচ্চার আমাদের অধিকার নিয়ে। প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেসব বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাতে নারীদের মর্যাদা হানি হয়েছে। আমরা জানান দিতে চাই, আমেরিকান নারীরা প্রতিবাদী। এই আমেরিকা বিনির্মাণে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। আমরা সমতা চাই, ভিক্ষা চাই না।’
সপ্তাহে পাঁচ দিন ডানকিন ডোনাটসে কাজ করেন জ্যামাইকার ৭১ স্ট্রিটের হালিমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘বাসার কাজ ফেলে ম্যানহাটনে এসেছি প্রতিবাদ করতে। ট্রেন থেকে নেমে অনেক দূর হেঁটে প্রতিবাদে এলেও একটুর জন্য ক্লান্তি আসেনি। কারণ, আমরা আমাদের অধিকারের জন্য সোচ্চার। বর্তমান প্রেসিডেন্ট নারীদের গর্ভপাতের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, নারীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। আমরা বোঝাতে চাই, আমেরিকান বাংলাদেশি নারীরাও সোচ্চার।’
মানবাধিকার সংস্থা ড্রামের হয়ে কাজ করেন নাফিজা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘অবৈধদের বিতাড়নের নামে ট্রাম্প প্রশাসন মায়ের কোল খালি করার চেষ্টা করবে। এখানে বেড় ওঠা সন্তানের মাকে ফেরত পাঠাতে পারে। তাই প্রতিবাদ করে সেটি প্রতিরোধ করা ছাড়া কিছুই করার নেই। আমরা প্রতিবাদ করব, আমরা অধিকার প্রতিষ্ঠা করব সমতার জন্য। লড়ব আমাদের প্রাপ্যের সবটুকুর জন্য।’
নারীদের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত ‘পুরুষতান্ত্রিক আচরণের’ প্রতিবাদ জানাতে এ বিক্ষোভ বলে জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান আমেরিকান নারী আন্দোলনের নেত্রী ব্রতী। তিনি বলেন, নারীরা মনে করছেন, ট্রাম্প সরকারের সময় তাঁদের অধিকার খর্ব হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই তাঁরা রাজপথে নেমেছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন