ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার যেসব কারণে চাপে

দায়িত্ব নেওয়ার ৯ মাসের মাথায় শান্তিতে নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ভয়ানক চাপের মুখে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধান উপদেষ্টা নাকি পদত্যাগের বিষয়ও বিবেচনা করছেন। কেন তিনি এবং তার অন্তর্বর্তী সরকার এত অল্প সময়ে এমন অবস্থায়?
পদত্যাগ করতে চান- এমন কথা অবশ্য ড. ইউনূস নিজে বলেননি, এমন দাবি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের।
প্রশ্ন হলো, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবার মতামতের ভিত্তিতে গঠিত এই সরকার কেন এত প্রবল চাপের মুখে পড়লো? সরকারের উপদেষ্টাদের নিরপক্ষেতা নিয়েই বা কেন প্রশ্ন উঠলো? সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর, বিশেষ করে বিএনপিরই কেন এখন এত দূরত্ব?
সর্বশেষ বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ নেওয়ার ব্যবস্থার দাবিতে বিএনপি সপ্তাহ খানেক আগে আন্দোলনের মাঠে নামে। বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল মাঠে নামে তাদের নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে। তাতে অচল হয়ে পড়ে গুলিস্তান, মৎস্যভবন ও শাহবাগ এলাকা। ইশরাকের আন্দোলন থেকেই বিএনপি দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করে। পরে তারা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের পদত্যাগও দাবি করে। এরপরই নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের দিন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকারের তিন উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল এবং ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদকে “বিএনপিপন্থি” বলে তাদের পদত্যাগ দাবি করে।
বিশ্লেষক, রাজনৈতিক নেতা, অর্থনীতিবিদ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, গত ৯ মাসে সরকারের সার্বিক পারফরম্যান্স বিবেচনা করলেই ইউনূস সরকারের চাপে পড়ার কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে। তারা মনে করেন, এর বাইরে অধ্যাপক ইউনূসের ব্যাপারে “কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট”-এর অভিযোগও উঠছে। সব মিলিয়ে একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় সরকার যে এনসিপিকে আলাদা চোখে দেখে তা-ও অনেকের কাছে আরও স্পষ্ট হয়ে গেছে। প্রফেসর ইউনূস এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করলেও আর কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেননি।
প্রধান উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠকের পর নাহিদ ইসলামই দাবি করেন, “কাজের পরিবেশ না থাকলে তিনি (ড. ইউনূস ) থাকবেন কেন? তিনি পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন।” এ বিষয়ে সরকারের দিক থেকে কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য আসেনি।
সামনে আসছে যেসব বিষয়
বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক নেতারা কয়েকটি বিষয়কে এই অবস্থার জন্য সামনে নিয়ে আসেন-
১. নির্বাচন ও সংস্কারের জন্য কোনো রোডম্যাপ না দেওয়া এবং সেরকম কোনো পদক্ষেপও দৃশ্যমান না হওয়া।
২. অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ও খারাপ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হওয়া।
৩. এনসিপিকে অন্যরকম গুরুত্ব দেওয়া।
৪. “কাজের সীমা”র বাইরে গিয়ে রাখাইনের সঙ্গে করিডোর বিষয়টি সামনে নিয়ে আসা এবং সবার সঙ্গে কথা না বলে চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের দেওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে যাওয়া।
৫. বিতর্কিত ব্যক্তিকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা করা ও উপদেষ্টাদের একটি অংশের অদক্ষতা।
৬. রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত না নেওয়া।
৮. ড. ইউনূসের “ব্যক্তিস্বার্থ সংশ্লিষ্ট” কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন।
এসব মিলিয়েই সরকারের প্রতি আস্থার সংকট ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট, এনসিপি এবং অন্যান্য
গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২৫% থেকে কমিয়ে ১০% করা হয়েছে সরকারের মালিকানা। এছাড়া গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় নামে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এসবের পাশাপাশি ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর ২০২৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতিও দেওয়া হয়েছে। আদালত সুয়োমোটো সিদ্ধান্তে ৬৬৬ কোটি টাকা কর পরিশোধের শেখ হাসিনা সরকারের সময়ের রায় প্রত্যাহার করেছে। প্রশ্ন আছে স্টারলিংকের ব্যবসা নিয়েও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ-উর-রহমান মনে করেন, “লাইসেন্স নেওয়া, কর মওকুফ করাসহ আরও অনেক দৃষ্টিকটু কাজ হয়েছে। আসলে তার (ড. ইউনূস) পাশে এখন এক গ্রুপ ভিড়েছে, যারা নানা ধরনের ব্যবসা করতে চাইছে। তাদের একটি অংশ এতদিন দেশের বাইরে ছিলেন, এখন দেশে এসেছেন।”
তিনি বলেন, “আসলে শুরু থেকেই যেটা হয়েছে, এই সরকার তরুণদের দলকে গুরুত্ব দিয়েছে। ইউনূস সাহেব প্রথমে তাদের তাকে নিয়োগকর্তা বলার পরই থেমে যাওয়া উচিত ছিল। সবার সরকার হওয়া দরকার ছিল (অন্তর্বর্তী সরকারের), তা হয়নি। আর ওই দলের (এনসিপি) সদস্যদের নানা অন্যায্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে। মব ভায়োলেন্স হয়েছে, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আর সর্বশেষ যেটা হলো, বৃহস্পতিবার রাতে প্রফেসর ইউনূস এনসিপির নাহিদ ইসলামের সঙ্গে কথা বললেন। কিন্তু অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে কথা বললেন না। এতেই তার এনসিপির প্রতি পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট।”
আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বেসরকারি সংস্থা খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রোকসানা খন্দকার বলেন, “এটা তো স্পষ্ট যে, এনসিপি কিছু দাবি করলে সরকার মেনে নেয়। অন্যরা দাবি করলে সরকার সেটা মানে না।”
তার কথা, “আসলে সরকারের অগ্রাধিকার ছিল সংস্কার ও নির্বাচন। কিন্তু গত ৯ মাসে কোনো ধরনের সংস্কার করেনি তারা। নির্বাচনেরও কোনো প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না। উল্টো এনসিপি এখন এই সরকারেরই গঠন করা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবি করছে। আসলে নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে তারা সময়ক্ষেপণ করতে চাইছে, যা রাজনৈতি দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করছে।”
তিনি বলেন, “সরকার এমন এমন বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেছে, যা তাদের কাজের মধ্যে পড়ে না। আর এসব নিয়ে রাজনৈকি দলও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলছে না। ফলে সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। একটি দলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তৈরি হচ্ছে নানা সংকট। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। মব ভায়েলেন্স এখনও আছে। মামলা ও জামিনের ক্ষেত্রে চুজ অ্যান্ড পিক দেখতে পাচ্ছি আমরা।”
তার কথা, “সরকার এই পর্যন্ত যে সময় পেয়েছে, তাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া যেতো। কিন্তু সংস্কারের যে কী করা হচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। কথা ছাড়া আর কিছুই জানতে পারছি না।”
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)-এর হিসাব অনুযায়ী, ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গণপিটুনিতে অন্তত ১১৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৭৪ জন। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বুধবারের অফিসার্স অ্যাড্রেসে মব ভায়োলেন্স নিয়ে কথা বলেছেন।
কাজের সীমা লঙ্ঘন এবং স্বার্থ হাসিলের অভিযোগ
অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় জটিলতা তৈরি করেছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য “মানবিক করিডর” প্রসঙ্গ। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়ার উদ্যোগও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, “করিডোর বা ত্রাণ প্যাসেজ যা-ই বলেন না কেন এই সরকারের সেটা নিয়ে কাজ করার কোনো ম্যান্ডেটই নেই। তারপরও যদি দরকার হতো, তাহলে যেহেতু সংসদ নেই তাই সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে সরকার আলোচনা করতে পারতো। পাকিস্তান ও ভারতের সাম্প্রতিক সংঘাতের সময়ও আমরা দুই দেশকে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে দেখেছি। করিডোর প্রশ্নে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান তাই সঠিকভাবেই তার অবস্থান নিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর নিয়েও প্রশ্ন আছে। ওই বন্দরের পাশেই আমাদের ঈশাখাঁন নৌঘাঁটি। আর আমাদের বন্দরের সবকিছুই তো আমরা করেছি। এখন বিদেশিদের কেন প্রয়োজন সে বিষয়েও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা যেতো। সেটা না করে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ইউনূস সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”
এই সময়ে দুই ছাত্র উপদেষ্টার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানকে নিয়ে। নানা ধরনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমেরও পদত্যাগ চায় দলটি। দুই ছাত্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ- তারা অন্তর্বর্তী সরকারে থেকে এনসিপির হয়ে কাজ করছে, সরকারকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে। বিএনপি মনে করে, ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে বসতে না দেওয়ার পেছনে এই দুই উপদেষ্টার হাত আছে।
অর্থনীতির প্রভাব
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট (বিওপি)-র পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস জুলাই থেকে মার্চে এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ)-এর নিট প্রবাহ ছিল ৮৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ ছিল ১১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসেবে চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে এফডিআইয়ের নিট প্রবাহ কমেছে ২৬%।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উইকলি সিলেকটেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটর্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস জুলাই থেকে মার্চে মূলধনি যন্ত্র আমদানির ঋণপত্র নিষ্পত্তি বা আমদানি বাবদ অর্থ পরিশোধ হয়েছে ১৫২ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছিল ২১৩ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের। অর্থাৎ, মূলধনি যন্ত্র আমদানি কমেছে ২৮.৬৮%। এটা অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ কমার হিসাব দেয়।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, “শুধুমাত্র প্রবাসী আয় আর রিজার্ভ ছাড়া অর্থনীতির আর কোনো সূচক ইতিবাচক নয়। বিনিয়োগ সম্মেলন করার কোনো ফল আসেনি। উল্টো বিদেশি বিনিয়োগ ২৫% কমেছে। দেশি বিনিয়োগও কমেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এবারই বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৩.৩%। বাংলাদেশে যতই সংকট থাকুক, ৫%-এর নিচে কখনোই প্রবৃদ্ধি হয়নি। ফলে অর্থনীতিতে কোনো সুখবর নেই। আর এই সরকার যেভাবে চালাচ্ছে, সেখানে সুখবর পাওয়া কঠিন।
‘চাপ আরও বাড়বে’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে বলেন, “সরকার অনেগুলো এজেন্ডা হাতে নিয়েছে, যেগুলো তাদের কাজ নয়। তাদের কাজ প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন করা। কিন্তু সরকার দৃশ্যমান কিছু করছে না। সরকার একটি দল ও কিছু লোকের সরকারে পরিণত হচ্ছে। ফলে নানা ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে। সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। সরকারের উচিত হবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া। তাহলে সংকট কেটে যাবে।”
তার কথা, “সরকারে দুই ছাত্র উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে সরে যেতে হবে। তারা সংকট তৈরি করছেন। দেশের অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি নেই। জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করিডোরসহ আরও অনেক ইস্যু আছে, যে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ম্যান্ডেট এই সরকারের নেই। সরকার ২০০ লোকের কথায় কাজ করবে?”
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তার এখতিয়ারের বাইরে বেশকিছু কাজ করেছেন। তার মধ্যে কিছু কাজে তিনি সফল হয়েছেন। যেমন, তার গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পেরেছেন, যা মানুষের মধ্যে খারাপ ধারণা তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়া থেকে শুরু করে নিজের শাস্তি মওকুফ, টাকা মওকুফ- এগুলোতে সফল হয়েছেন। কেউ যখন দীর্ঘ মেয়াদে থাকার টার্গেট নেয়, তখন নিজের ও গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখে। সেটাই হচ্ছে।”
তবে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা চান একটা সংস্কারের পর নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। কিন্তু মৌলিক সংস্কার না করে যেকোনো ধরনের একটি নির্বাচন দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের যে উদ্দেশ্য তা সফল হবে না। কিন্তু বিএনপি চাইছে তাকে যেনতেন ধরনের একটা নির্বাচনে বাধ্য করতে।”
তার দাবি, “প্রধান উপদেষ্টা এনসিপির প্রতি কোনো পক্ষপাতিত্ব করছেন না। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, এর কারণ হলো, তিনি গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়াদের একজন। আর এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের সরকার। প্রধান উপদেষ্টা তো অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপি দুইজন ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইছে। তাদের বলা হচ্ছে এনসিপিপন্থি। আমরাও তাই বিএনপিপন্থি তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছি। আর আমরা মনে করি, উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করা দরকার। কারণ, আইন, অর্থনীতি ও শিক্ষাখাতে নানা সমস্যা হচ্ছে। আমরা কোনো অগ্রগতি দেখছি না।”
এদিকে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে নাহিদ ইসলাম যে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন, সেই কথার ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়নাা হাসান শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান।
তিনি বলেন, “তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা নিজেই জানাবেন।” এর পাশাপাশি রেজওয়ানা আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা একটি সময় দিয়েছেন- ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার এক দিনও এদিক-সেদিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
তবে তিনি দাবি করেন, তারা শুধু নির্বাচন করার জন্যই দায়িত্ব নেননি, তাদের তিনটা কঠিন দায়িত্ব। এর একটি সংস্কার, অন্যটি বিচার, আরেকটি নির্বাচন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সীমান্তে উত্তেজনা: বাংলদেশের প্রতিবাদ সত্ত্বেও পুশ-ইন অব্যাহত
“বাংলাদেশি” ট্যাগ দিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবেবিস্তারিত পড়ুন

বানরেরাও অপহরণ করে!
উত্তর আমেরিকার দেশ পানামার ছোট্ট একটি দ্বীপে প্রাণীজগতের অদ্ভূত একবিস্তারিত পড়ুন

ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুবমান গিল
আলোচনায় ছিল অনেকের নাম। তবে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন যিনি,বিস্তারিত পড়ুন