ঢাকায় এক দিনে ৪ জনকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানী ঢাকায় এক দিনে চারজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুজনকে ধর্ষণের অভিযোগে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত অপর দুইজন সম্পর্কে আপন ভাই।
বুধবার (১৪ আগস্ট) পৃথক স্থানে এসব ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, সাঈদ আরাফাত শরীফ (২০) ও সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯), আলামিন ভুইয়া (৪২) ও নুরুল আমিন (৩৫)। এদের মধ্যে আলামিন ভূঁইয়া ও নুরুল আমিন সহোদর।
পরিবারের অভিযোগ, এই দুই ভাইকে ফ্ল্যাট কেনাবেচা নিয়ে বিরোধেরে জেরে হত্যা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সাঈদ আরাফাত শরীফ ও সাইদুল ইসলাম ইয়াসিনকে ধর্ষণের অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা দুজন গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন বলে জানা গেছে।
বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দুই তরুণকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সাইদকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্কাউট সদস্য সম্রাট শেখ সাংবাদিকদের জানান, মারধরের শিকার ওই দুজনকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজন মিলে যাত্রাবাড়ী থানায় দিয়ে যায়। তখন জানা যায়, সায়দাবাদ এলাকায় কোনো একটি হোটেলে তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। অবস্থার অবনতি দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার জানান, ইয়াসিন ১৫ দিন ধরে সেচ্ছাসেবক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছিল। মঙ্গলবার সকালে সে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর বউবাজারের বাসা থেকে বের হন। এরপর বহুবার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তার। বুধবার ভোর ৪টার দিকেও মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। তখনও তিনি সুস্থ স্বাভাবিক আছেন বলে জানান মাকে। এরপর সকালে কেউ একজন তার মাকে ফোন করে জানান, তার ছেলের অবস্থা ভালো না, দ্রুত যাত্রাবাড়ী থানায় আসতে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় গিয়ে ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান।
তিনি বলেন, “থানা থেকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নেয়ার সময় আমার ছেলে কথা বলতে পারছিল। বলছিল, ওদেরকে মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়েছে। ওরা কোনো অপরাধ করেনি।”
ইয়াসিন একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন বলে জানা গেছে।
নিহত সাইদের বাবার নাম কবির হোসেন ও মা মরিয়ম। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কদমিরচর গ্রামে। বর্তমানে যাত্রাবাড়ীর টনি টাওয়ার এলাকায় থাকতেন।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, “যাত্রাবাড়ী থেকে গণধোলাইয়ের শিকার দুই যুবককে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়েছিল। পরে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আমরা জানতে পেরেছি ধর্ষণের অভিযোগে এই দুইজনকে গণধোলাই দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, বুধবার সকালে ওয়ারী হাটখোলা এলাকায় ফ্ল্যাট কেনাবেচা নিয়ে বিরোধে আলামিন ভূঁইয়াকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এর কয়েক ঘণ্টা পর তার ভাই নুরুল আমিনকেও হত্যা করা হয়।
তারা ওয়ারীর একেএম শাহা লেন এলাকার মৃত শামসুদ্দিনের ছেলে আলামিন।
আলামিন ভূঁইয়ার স্ত্রী মুনমুন বলেন, “দেড় বছর আগে রিপন নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলাম আমরা। ফ্ল্যাট রেডি হলেও তা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছিল না। এসব নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জেরে রিপন তার লোকজন নিয়ে আমার স্বামীকে হত্যা করে।”
বাচ্চু মিয়া বলেন, “আলামিন ভূঁইয়ার স্বজনরা গুরুত্বর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।”
এর কয়েক ঘণ্টা পরই আলামিনের ভাই নুরুল আমিনকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার শ্যালক জোবায়ের হোসেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
নুরুল আমিন ডেমরা স্টাফ কোয়াটার বাঁশেরপুল এলাকায় তার পরিবার নিয়ে থাকেন। তিনি রাইড শেয়ারিংয়ের চালক ছিলেন।
জোবায়ের হোসেন বলেন, “আজ সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন নুরুল আমিন। দুপুরে সংবাদ পেয়ে হাটখোলা এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।”
পরিবারের অভিযোগ, একই ব্যাক্তিদের মারধরে তারা দুই ভাই নিহত হয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধানমন্ডি ৩২-এ প্রদীপ প্রজ্বলন, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলা
আমাদের কন্ঠস্বর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সব ধরনের হত্যারবিস্তারিত পড়ুন
সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টি
ঢাকায় অফিস শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে নামা ঝুম বৃষ্টিতে নগরবাসীবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর আত্মহত্যা
রাজধানীর বনানী ও ভাটারায় পৃথক ঘটনায় দুই নারীর ঝুলন্ত মরদেহবিস্তারিত পড়ুন