ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কঃ ট্রাম্পের পদক্ষেপ নিয়ে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার প্রাথমিক বক্তৃৃতা-বিবৃতিতে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক নিয়েও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের প্রতিটি পদক্ষেপ সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করবে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপর বিভিন্ন পর্যায়ে তার নীতি সম্পর্কে কিছু কিছু আলোকপাত করছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ সম্পন্ন হলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।
নির্বাচনী প্রচারে এই ধনকুবের নানা উগ্র কথাবার্তা বললেও তখন সেটাকে স্রেফ ভোটের কৌশল বলেই অনেকে মনে করেছিলেন। কিন্তু শপথ নেয়ার পর তার প্রথম বক্তৃতায় তিনি ওইসব প্রতিশ্রুতি পালনে বদ্ধপরিকর বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা অনেকের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে।
জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, ট্রাম্পের বক্তৃতার পর একটা অনিশ্চয়তা ও অস্বস্তি লক্ষণীয়। বাণিজ্য নিয়ে তিনি যে ধরনের মন্তব্য করেছেন, তাতে আশার সঞ্চার করে না। জলবায়ু পরিবর্তনের তহবিল নিয়েও একই অবস্থা।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ট্রাম্প কী ধরনের পলিসি গ্রহণ করেন তা দেখার জন্য। বিশেষ করে এশিয়ার ক্ষেত্রে তার নীতি সবচেয়ে বেশি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের নীতি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, দৃশ্যত ট্রাম্পের পদক্ষেপে বাংলাদেশের ওপর কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। ট্রাম্প শপথের পর তার বক্তৃতায় স্পষ্ট করে বলেছেন, কট্টর ইসলামি সন্ত্রাসীদের তিনি পৃথিবী থেকে নির্মূল করবেন। এভাবে বারাক ওবামা কখনও বলেননি। ওবামা সন্ত্রাস দমনের কথা বলেছেন। কিন্তু ট্রাম্পের ভাষায়, ‘কট্টর ইসলামি সন্ত্রাসী’ শব্দ ব্যবহার করায় বিষয়টির ব্যাখ্যা কিভাবে করা হবে সেটাও গভীর মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। তার এই ঘোষণা বাস্তবায়ন কৌশলের প্রতিও ঢাকার নজর থাকবে।
বাংলাদেশ মনে করে, সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নেই। সন্ত্রাসীর পরিচয় সন্ত্রাসী। ফলে এই জায়গায় ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে মতপার্থক্য হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন এ ক্ষেত্রে সামরিক পদক্ষেপ নেয় কিনা সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয়েছেন ‘ম্যাড ডগ’ খ্যাত সাবেক জেনারেল মেট্রিক্স। এমন উগ্র ব্যক্তিকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়ায় ‘উগ্র ইসলামি সন্ত্রাস’ দমনে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা মোটেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্পর্কের ধরনে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা সেটিও বিবেচ্য। ফলে বিষয়টি নিবিড় নজরে থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে একজন ব্যবসায়ী হওয়ায় তার বাণিজ্যনীতি সবার নজরে থাকবে। তার আমেরিকা ফার্স্ট নীতির মূল স্লোগান হল- আমেরিকার পণ্য ক্রয় করো, আমেরিকার জনগণকে চাকুরি দাও। এর কারণে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা সেদিকেও নজর রাখবে ঢাকা।
যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী ব্রান্ড ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’ বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের সোর্সিং করে থাকে। এ ছাড়া ট্রাম্পের আমলে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
ট্রাম্প জলবায়ু তহবিলসহ অনেক তহবিল বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেছেন। এটা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি সম্পর্কে বলেছেন, বাংলাদেশ এ নিয়ে খুব বেশি শংকিত নয়। বিদেশীরা জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বললেও এই খাতে বিদেশী তহবিল তেমন আসেনি। বাংলাদেশ নিজের তৈরি করা জলবায়ু তহবিলের অর্থ দিয়ে তা মোকাবেলা করে থাকে।
অভিবাসন ইস্যুতে অভাবনীয় কঠোর নীতি গ্রহণ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। বিশেষ করে মেক্সিকোসহ অনেক দেশের অভিবাসীদের জন্য খুবই সতর্কবার্তা রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী অভিবাসীরা কতটা শান্তিতে থাকতে পারবেন তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা।বিস্তারিত পড়ুন
আইসিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন, ধারণ করা যাবে বিচার প্রক্রিয়ার অডিও-ভিডিও
‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনবিস্তারিত পড়ুন