তাঁরা জওয়ানের স্ত্রী
সন্দেশে আতে হ্যায়/ হামে তড়পাতে হ্যায়/ চিঠঠি আতি হ্যায় তো, পুছে যাতি হ্যায় , ঘর কব আওগে..লিখো কব আওগে..তুম বিন এ ঘর শুনা শুনা হ্যায়…
‘বর্ডার’ ছবির এ গানে পর্দায় দেখা গিয়েছিল জওয়ানদের৷ কিন্তু গানের কথা জুড়ে ছিল সেই জওয়ানদের স্ত্রীদের কথা-তাঁদের মনখারাপ, শূন্যতার কথা৷ এ শূন্যতা, মনখারাপের কথা শুধু সিনেমার পর্দায় নয়, আছে বাস্তবেও৷ সাধারণ সংসারীর জীবন থেকে তাঁদের জীবন যে অনেকখানিই আলাদা তা যেমন জানেন জওয়ানরা, তেমনই জানেন তাঁদের স্ত্রীরাও৷ স্বামী আর নাও ফিরতে পারেন, এ সত্য জেনেও তাঁরা সমর্থন করেন তাঁদের স্বামীর পেশাকে৷ মনের জোর দেন তাঁদের৷ পর্দায় নয়, বাস্তবেই জওয়ানদের স্ত্রীরা তাঁদের কথায় বুঝিয়ে দিলেন ঠিক কোন মানসিকতায় গড়া তাঁরা৷ এই দুনিয়া থেকেও তাঁরা এক স্বতন্ত্র দুনিয়ার অধিবাসী৷
সঙ্গীতা ব্রজবাসী যেমন জানিয়েছেন, ‘‘ তাঁর স্বামী যে দেশের জওয়ানের ইউনিফর্ম পরেন সেই ভেবেই তিনি গর্বিত৷ পরিবারের এই সেন্টিমেন্ট তিনি নিজেও ভাগ করে নেন৷’’ যাঁরা স্বামীর সঙ্গে বাইরে যাওয়ার সুযোগ পান তাঁরা এক বড় পরিবারের অংশ হয়ে যান৷ স্বামীর সিনিয়ররাই যেন তাঁদের শ্বশুরবাড়ির লোক হয়ে দাঁড়ায়৷ দীপ্তি শাহের মনে পড়ে এক জওয়ান তাঁর সঙ্গে কেমন মজা করেছিলেন৷
স্টেশন থেকে তাঁকে কোয়ার্টারে আনার জন্য মজা করে টাকাও চেয়েছিলেন৷ আসলে আলাদা পরিবার নয়, সকলের পরিবার মিলে একটা পরিবারই হয়ে ওঠে৷ দাদা-বৌদি, ভাই-বোনের মতোই গড়ে ওঠে নতুন সম্পর্ক৷ সেনাকে স্বামী হিসেবে বরণ করে নেওয়ার পরই এক একজন পালটে ফেলেন নিজের মানসিকতা, নিজেকে তৈরি করেন তাঁদের মতো করে৷ তাঁরা জানেন, ভবিষ্যতে কী হবে কেউ জানে না, তাই যে কটা মুহূর্ত পাওয়া যায় সেটুকুকেই নিজেদের মতো উপভোগ করেন তাঁরা৷ সে কথা জানিয়ে শ্রদ্ধা আইয়ার বলেন, ‘‘ আর্মি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে৷
কী পাব না তার জন্য না ছুটে,যা আছে সামনে তাই নিয়ে থাকতে শিখিয়েছে৷’’ নিমা অলংগ তাই নিজেদের বলেছেন, ‘আমরা ককটেল আর এলিগ্যান্সের ককটেল’৷ তবে একদিনেই যে এই নারীরা সবকিছু মেনে নিতে শিখেছেন, পরিস্থিতিকে গ্রহণ করতে শিখেছেন তা নয়৷ মধু আঢ্য তাই বলেন, ‘‘ আমাদের স্বামীরা আমাদের মোটিভেট করেন৷ আমারা আরও ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি প্রতি মুহূর্তে৷’’ কেউ কেউ আবার অন্য পেসার সঙ্গেও যুক্ত৷তবে সবার আগে তাঁরা আর্মির স্ত্রী৷ সুবর্ণা দেশপাণ্ডে বলেন, ‘‘ আমি হোমিওপ্যাথ ডাক্তার৷ শিক্ষিকাও৷
কিন্তু আমি ফুল টাইম আর্মি ওয়াইফ৷’’কিন্তু যদি কোনও দুঃসংবাদ আসে, তখন কীভাবে নিজেদের সংবরণ করেন তাঁরা? রীনা মুথানা জানান, ‘‘এক সকালে হঠাৎই তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর আসে৷ দরজা খুলতেই দেখলাম আমার পরিচিতরা সকলে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছেন৷ কারও কিছু বলার প্রয়োজনই ছিল না৷ এই ব্যবহারটাই ছিল আমার কাছে সান্ত্বনা৷’’ ২০ মাসের মেয়ের জন্য নিজেকে শক্ত করেছিলেন তিনি৷ একই অভিজ্ঞতা জ্যোতি দেবীরও৷ তাঁর স্বামী মাইন বিস্ফোরণে যখন প্রাণ হারান তখন তাঁর মেয়ের বয়স মাত্র এক মাস৷ জ্যোতিকে তবু বাবার বাড়ি ফিরে যেতে হয়নি, সকলের সমর্থনে শ্বশুরবাড়িতে থেকেই নিজের মেয়েকে বড় করে তুলছেন তিনি৷
কারওর স্বামী ফিরে আসেননি৷ কেউ জানেন না স্বামী বেরিয়ে ফিরে আসবেন কি না৷ তবু পরজন্মে জওয়ানের স্ত্রী হতে তাঁরা সানন্দে রাজি৷ হ্যাঁ, তাঁরাই জওয়ানদের স্ত্রী, এই সময়ের মহিয়ষী৷
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন