তামিমের আক্ষেপ মুমিনুলের জন্য
ফতুল্লা: ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভালো শুরু করেও ৩০ রানে থেমে গেছেন বাম-হাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক। ইতিহাস গড়ার জন্য তার সামনে ছিল দ্বিতীয় ইনিংস। কিন্তু ফতুল্লা টেস্টের যে হাল, তাতে আগামীকাল রবিবার শেষ দিনে স্বাগতিকরা তাদের প্রথম ইনিংসই খেলতে পারবে কিনা সন্দেহ। ফলে ইতিহাস গড়ার খুব কাছে থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে মুমিনুল হককে। ভারতের বিপক্ষে এই টেস্টে অর্ধশতক করতে পারলেই টানা ১২ টেস্টে অর্ধশতকের রেকর্ডটি গড়া হয়ে যেত তার। উঠতেন রেকর্ড বইয়ের চূড়ায়, বসতেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের পাশে। কিন্তু সেটা আর হলো না!
দারুণ খেলতে থাকা মুমিনুল স্বভাববিরুদ্ধভাবে ডাউন দ্য উইকেটে এসে হরভজন সিংকে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন উমেশ যাদবের হাতে। মুমিনুলের রেকর্ডটি না হওয়াতে আফসোস হচ্ছে দলের ওপেনার ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম বলেন, ‘অনেক বড় একটা রেকর্ডের সামনে ছিল মুমিনুল। রেকর্ডটা হলে মুমিনুল এবং দেশের জন্য ভালো হতো। ও (মুমিনুল) কখনো রেকর্ড নিয়ে মাথা ঘামায় না। তবে টিমমেট হিসেবে খারাপ লাগছে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টেস্টে অর্ধশতক করে ভারতের কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারকে পেছনে ফেলেন মুমিনুল। টানা ১১ টেস্টে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার ভিভ রিচার্ডস, ভারতীয় ব্যাটসম্যান বীরেন্দর শেবাগ ও গৌতম গম্ভীরের পাশে বসেন তিনি।
২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে খেলা টানা ১১ ম্যাচের যে কোনো এক ইনিংসে পঞ্চাশ বা তারও চেয়ে বেশি রান করেন মুমিনুল। আর ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ১২ ম্যাচে অর্ধশতক করে রেকর্ড গড়েন ডি ভিলিয়ার্স।
শনিবার ফতুল্লায় ১৯ রান করে আউট হন তামিম ইকবাল। তিনি নিজেও এদিন অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হয়েছেন। দেশের হয়ে এখন তিনি টেস্ট ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের মালিক।
এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘অবশ্যই টেস্ট ক্রিকেটকেই আমি এগিয়ে রাখব। টেস্ট যে কোনো কন্ডিশনেই কঠিন। এজন্যই এর নাম টেস্ট দেওয়া হয়েছে। টেস্টের রানগুলোকেই আমি এগিয়ে রাখব।’
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ১০,০০০ রান করা খুব কঠিন। আরো বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলা উচিত আমাদের। শুধু আমার জন্যই নয়, যে কোনো টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানের জন্যই ১০,০০০ রান করা কঠিন বিষয়।’
সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন ৫০ টেস্টে করেছিলেন ৩,০২৬ রান। তবে তামিম ইকবাল ১০ টেস্ট কম খেলেই তাকে টপকে গিয়েছেন। ৪০ ম্যাচে তামিম করেছেন ৩,০৩৯ রান।
এক প্রশ্নের উত্তরে তামিম বলেছেন, ’১০,০০০ রান করা যে কোনো ব্যাটনম্যানেরই স্বপ্ন থাকে। তবে এজন্য সেই পরিমাণ ম্যাচও খেলতে হবে। গত ৮-৯ বছরে আমি ৪০টির মতো ম্যাচ খেলেছি। অন্য দেশগুলো ৪-৫ বছরে ৪০টির মতো ম্যাচ খেলে। এভাবে বছরে ৩-৪ টেস্ট ম্যাচ খেললে আমার জন্য বিষয়টি কঠিন হয়ে যাবে।’
তিনি জানান, ‘সামনের ম্যাচগুলোতে আমার গড় যদি ৫০ করেও রাখি, তবুও কিন্তু ১০,০০০ রান করা সম্ভব নয়। এটা নির্ভর করবে বছরে কমপক্ষে ৭-৮ টেস্ট ম্যাচ খেলার ওপর। সেই সঙ্গে আমার ফর্ম, ফিটনেসের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করবে। যদি এটা অর্জন করতে পারি তাহলে তা আমার জন্য গ্রেট, বাংলাদেশের জন্যও।’
তামিমের ইনিংস শেষে ড্রেসিংরুমে গিয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হাবিবুল বাশার সুমন। এ প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘সুমন ভাই ড্রেসিংরুমে এসেছিলেন আমাকে অভিনন্দন জানাতে। এটা আমার জন্য ভিন্ন রকমের অনুভূতি ছিল।’
নিজের রেকর্ড ভাঙা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, ‘আমি মনে করি না এই রেকর্ডটা খুব বেশি দিন থাকবে। মুমিনুলের গড় দেখেন, ও যেভাবে রান করছে, আমি নিশ্চিত ৩,০০০ রান যত ম্যাচে আমি করেছি; কমপক্ষে ৫-৬ ম্যাচে আগেই মুমিনুল এটা করে ফেলবে। এছাড়া তরুণদের মধ্যে অন্য কেউ এটা করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো ১১ ম্যাচ আগে সুমন ভাইয়ের রেকর্ডটা ভেঙেছি। আমার রেকর্ডটি আরো ৭ ম্যাচ আগেই কেউ না কেউ ভাঙবে।’
ফতুল্লা টেস্টের শেষ দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে তামিম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, প্রথম ১-২ ঘণ্টা গুরুত্বপূর্ণ। ওই সময় আমরা যদি কোনো উইকেট না হারিয়ে একটা জুটি গড়ে তুলতে পারি, ম্যাচটি ড্রয়ের দিকেই এগিয়ে যাবে। ক্রিকেটে সবই সম্ভব। যে কোনো কিছুই হতে পারে, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন