তামিমের শতকে সিরিজ জয়ের পুঁজি ২৭৯
সৌম্যকে নিয়ে তামিম যখন ক্রিজের দিকে হাঁটতে থাকেন, মিরপুরের প্রেসবক্সে তখন ফিসফাস। হয়তো গোটা দেশেও। রানের জন্য হন্যে হয়ে ঘোরা সৌম্যর জন্য তবু অনেকে শুভাশিস রেখেছিলেন। সৌম্য কিন্তু প্রতিদান দিতে পারেননি। ইনিংসের বয়স শৈশবে থাকতেই ‘নিজেকে’ বলি দেন। সাব্বিরকে নিয়ে সঙ্গী তামিম শেষ পর্যন্ত ২৭৯ রানের স্কোর গড়তে ভূমিকা রাখেন।
এদিন ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে মিরওয়াইস আশরাফের টোপে পড়েন সৌম্য। শরীরের অনেক বাইরে বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন। চোখ ছিল বলের ওপর। কিন্তু পা নেননি। ফল যা হওয়ার তাই। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। শাহজাদের ‘নির্ভুল’ হাত সৌম্যর ‘ভুল’শট ধরতে এতটুকু দেরি করেনি। সৌম্যর রানখরা চলছে সেই এশিয়া কাপ থেকে। ওই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান ছিল ৪৮। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই অবস্থা। সর্বোচ্চা রান ২১। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগও বাজেভাবে শেষ করেন। এই সিরিজে প্রথম ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন। দ্বিতীয় ম্যাচে ২০। আজ থেমেছেন ১১তে।
সৌম্য ফেরার পর সাব্বিরকে আজ ওয়ানডাউনে নামিয়ে দেয়া হয়। বৃথা যায়নি ব্যাটিং লাইনআপের এই পরিবর্তন। তামিমমের সঙ্গে শতাধিক রানের জুটি গড়ে দলকে ১৬৩ রানে রেখে বিদায় নেন।
৩৯তম ওভারে রহমত শাহকে আক্রমণ করে খেলতে থাকেন। চোখ ধাঁধানো ছয় হাঁকান। চতুর্থ বলেও ডাউন দ্য ট্রাকে এসে বড় শটে গিয়েছিলেন। কিন্তু ‘এজ’ হয়ে বল চলে যায় শর্ট থার্ডম্যানে দাঁড়ানো নওরাজ মঙ্গলের হাতে। ৭৯ বলে ৬৫ রানে থামেন হার্ড হিটার।
জুটি ভাঙলেও তামিম সমানতালে চালিয়ে যান। শতকে পৌঁছান ১১০তম বলে। দৌলত জাদরানের লাফিয়ে ওঠা বল জায়গায় ফেলে সাকিবের সঙ্গে দ্রুত জায়গা বদল করে সপ্তম ওয়ানডে শতকের আনন্দে মাতেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে সাতটি শতক হাঁকানোর নজির গড়লেন তামিম। এর আগে ৬টি শতক নিয়ে সাকিবের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন। চারটি শতক নিয়ে মুশফিক তৃতীয়। তামিমের অর্ধশতক আছে ৩৩টি। প্রথম ম্যাচে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯ হাজার রানের মালিক হন। ওই দিন থেমেছিলেন ৮০ রানে। পরের ম্যাচে ২০ রানে কাটা পড়েন।
তামিম আজ থামেন ১১৮ রানে। ৩৯তম ওভারে রুম করে ডাউন দ্য ট্রাকে এসে নবীর চতুর্থ ডেলিভারি হাফভালি বানান। তুলে দেন অফসাইডে। টাইমিংয়ে গড়মিল হওয়ার কারণে ডিপকাভারে দ্বদাশ ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামা নাভিদুলের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন। খেলেই বুঝেছিলেন পার হবে না। তাই তড়িঘড়ি করে সাজঘরের পথ ধরেন। দলকে রেখে যান ২১২ রানে।
তামিম ফিরে যাওয়ার পরই রানের চাকা ধীর হয়ে যায়। দ্রুত ফিরে যান সাকিব, মুশফিক, মোসাদ্দেক।
মুশফিকের সঙ্গে সাকিব বেশ পরিকল্পনা করে ব্যাট করছিলেন। খোলস ছাড়তে সময় নেন। কিন্তু থিতু হতে পারেননি। ৪৩তম ওভারের প্রথম বলে দৌলত জাদরান তাকে বোকা বানান। তার দারুণ এক আউট সুইঙ্গার জাগায় দাঁড়িয়ে লেট করতে গিয়ে কানায় লাগান। উইকেটরক্ষক শাহজাদ অনায়াসে তা ধরে ফেলেন। ৩৫ বলে ১৭ রান নিয়ে শেষ হয় সাকিবের ইনিংস। মুশফিক পরের ওভারের প্রথম বলে রশীদ খানের গুগলিতে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন। প্রথম ম্যাচেও এই রশীদ খানের বলে বোল্ড হয়েছিলেন। এদিন গুগলি অবশ্য আঁচ করতে পারেন। বলের জন্য সময়ও নেন। কিন্তু লাইন মিস করে পায়ে লাগান। তর্জনী উঁচু করেন আম্পায়ার। এই ওভারে মোসাদ্দেককেও ফেরান রশীদ। মোসাদ্দেক এসেই চার মেরেছিলেন। কিন্তু এক বল বাদে ঘুর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে ক্ষণিকের জন্য ‘পপিং ক্রিজ’ ছেড়ে যথাসময়ে ফিরতে পারেননি। স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরতে হয় মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামা এই তরুণকে। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৪৫ রানের পাশপাশি দুই উইকেট নিয়ে নজর কেড়েছিলেন।
এরপর ৩৪ বছর বয়সী মোশাররফ আট বছর পর মাঠে নেমে তালগোল পাকান। বল ব্যাটেই নিতে পারছিলেন না। মোশাররফ এখন ওয়ানডের পঞ্চম বেশি বয়সী খেলোয়াড়। মোশাররফ আউট হয়ে ‘স্বস্তি’ আনেন বাংলাদেশ সমর্থকদের মাঝে। স্কোর বড় করার আশায় মাঠে নামেন কাপ্তান মাশরাফি। একবার নিশ্চিত রান আউটের হাত থেকে বাঁচেন তিনি। ব্যক্তিগত ২ রানে যখন মাঠ ছাড়েন, দলীয় স্কোর তখন ২৭০। শফিউলকে নিয়ে রিয়াদ (২৫) শেষ পর্যন্ত ২৭৯তে থামেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন