তারকা ‘সিঙ্গেল মাদার’ মাতৃত্বের একক সংগ্রামের অনবদ্য রূপের গল্প !
সিঙ্গেল মাদার’ শব্দটির সামাজিক প্রচলন আমাদের দেশে আজো কম। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, এই পরিচয় বহন করে যে অনন্য মা তার সন্তানের ভবিষ্যত্ গড়ার সংগ্রামের গল্প বুনছেন তাদের সংখ্যা কি কম? কিংবা কতদিন ধরে এমন পরিচয়ের, এমন সংগ্রামের গল্প তৈরি হচ্ছে? সেই সামাজিক বা পরিবারিক সংগ্রামের ভেতর দিয়ে যে নারী তার অসীম মাতৃত্বকে আরো গর্বেত করছে। আমাদের সমাজে যদি কেউ সিঙ্গেল মাদার হয়ে থাকেন তাহলে তাকে নিয়ে শুরু হয় নানান গুঞ্জন, নানা কথা… তাদের মুখোমুখি হতে হয় সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার।তারপরও অনেক মা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এককভাবে তাদের সন্তানকে বড় করে তুলছেন।
মাতৃত্বের এই একক সংগ্রামের অনবদ্য রূপের গল্পগুলোও তাই ভিন্ন চোখে আঁকে এ সমাজ। তা হোক শোবিজের মস্ত তারকা কিংবা ঐ পাড়ার খ্যাতির আলোর বাইরের এক সাধারণ নারী। মা তো ‘মা-ই।’ মা যে শুধুই মা, অতুলনীয়া।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ‘সিঙ্গেল মাদার’ সে খবর আমরা সবাই জানি। সে কীভাবে সন্তান পালন করে সে বার্তা আমরা হলিউড মূল্লুক থেকেই পাই। আমাদের দেশেও রয়েছেন এমন অনেক তারকা। যারা ‘সিঙ্গেল’ থেকেই সন্তান পালন করছে। আমরা কয়জন জানি দেশের শোবিজের সিঙ্গেল মাদারদের খবর। অনেক তারকার সংসার ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু সন্তান আগলে রেখেছে পরম মমতায়। ‘সিঙ্গেল মাদার’ পরিচয় বহন করে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার সংগ্রামের গল্প বুনছেন। সামাজিক বা পরিবারিক সংগ্রামের ভেতর দিয়ে মাতৃত্বকে আরও গর্বিত করেছেন।
ববিতা
ছেলে অনিক ইসলামের বয়স যখন মাত্র তিন বছর, তখনই অর্থাৎ ১৯৯৩ সালের ১০ জানুয়ারি ববিতার স্বামী অনিকের বাবা ইফতেখারুল আলম মারা যান। এর পর থেকে ববিতা তার একমাত্র ছেলে অনিককে নিয়েই আছেন। অনিককে মানুষ করাই ছিল তার একমাত্র স্বপ্ন। একদিকে অভিনয়, অন্যদিকে সংসার-সন্তান সামলানো-সবই তিনি করেছেন। কীভাবে এটি সম্ভব হয়েছে? জানতে চাইলে ববিতা বলেন, ‘অনিক যখন ছোট, তখন ঢাকার বাইরে কোনো শুটিং করতাম না। এফডিসি বা ঢাকার মধ্যে যে কাজগুলো হয়েছে, সেগুলো করেছি। ধীরে ধীরে ও বড় হয়েছে। তখন বাইরে কাজ করতাম। কিন্তু সারাক্ষণ ছেলের খবর নিয়েছি। খেয়েছে কি না, স্কুল থেকে ফিরে বিশ্রাম নিয়েছে কি না, স্কুলের পড়া ঠিকমতো হলো কি না, সব; এমনকি বাসায় কোনো শিক্ষকের কাছে পড়বে, সেটিও আমি ঠিক করতাম। আমার ছেলেও ভীষণ ভালো। অতটুকু বয়স থেকেই এত বোঝে আমাকে। ও লেখাপড়ায় বেশ ভালো। উচ্চতর শিক্ষাটা কানাডা থেকে নিয়েছে। আমি বারো মাস ওর সঙ্গে কানাডা না থাকতে পারলেও ওর জন্মদিন সহ বিশেষ দিনগুলোতে ওর কাছে থাকার চেষ্টা করি’
জাকিয়া বারী মম
নাট্য নির্মাতা এজাজ মুন্নার সঙ্গে সংসার পাঠ চুকিয়েছেন অনেক আগেই। পিতা মুন্না নতুন করে সংসার শুরু করলেও ছেলেকে আগলে রেখে সিঙ্গেল হয়ে আছেন মম। ছেলে উদ্ভাসের বয়স সাত। পড়াশুনাও শুরু করেছে। মম বলেন ‘আমার বাচ্চাটা আহ্লাদের কৌটা হয়েছে। খুব বুঝদার। আমি শুটিংয়ে থাকলেও ওর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করি। আর ছুটির দিন হলে তো কথাই নেই। ছেলেকে নিয়েই থাকি সারাক্ষন। এই যে ঈদ গেল। আমি কোথাও বের হইনি। আমার সন্তানকেই সময় দিয়েছি। ঈদের পরে বের হলেও সন্তান সঙ্গে ছিলো। এই যে আমি এত এত শুটিং করছি। এটা শুধু সন্তানের জন্যই। আমার সন্তানকে আমার ছাড়া আর কে দেখবে। ওর ভবিষ্যতের জন্যই আমার যত কষ্ট। আমি আমার সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই।
বাঁধন
২০১০ সালে বিয়ে করেছিলেন লাক্স সুন্দরী বাঁধন। বিয়ের চার বছরের মাথায় সংসারের ইতি হয়। স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাসায় ওঠেন। এখন তার মেয়ে মিশেল আমানী সায়রাকে নিয়েই পৃথিবী। মেয়ের বয়স সাড়ে পাঁচ বছর। পড়াশুনা করছে সানবিমস স্কুলে। তিনি বলেন ‘ আমিই ওর বাবা আমিই মা। আমার পরিচয়েই ও বড় হবে। আর একটা কথা ,অভিনয়শিল্পীরা সন্তানকে সময় দিতে পারেন না বলে যে ধারণা আছে তা আসলে ঠিক নয়। ও যখন ছোট ছিলো তখন অভিনয় করতাম না। সারাক্ষন বাসায় ওকে সময় দিতাম। এখন ও অনেকটা বড় হয়েছে। ওকে একটু কম সময় দিলেও হয়। আর আমার মা-বাবা আমাকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট হেল্প করে। তারাই ওর দেখভাল করে। আমি শুটিং না থাকলে ওকে সময় দেই। আমাদের মা মেয়ের ভীষন বন্ধুত্ব। আমি ওর না। ও আমার গার্জিয়ান বলা চলে। আমার মন খারাপ হলে গলা ধরে এসে আমাকে বুঝায়। আমি মনে করি না ওর আমার ছাড়া অন্য কারো পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে। ‘
সোহানা সাবা
নির্মাত মুরাদ পারভেজ ও সোহানা সাবা প্রেম করে বিয়ে করেন। সে সংসার টিকলো না। ছেলে স্বরবর্ণর জন্মের ১৭ মাস পরেই তারা আলাদা হয়ে গিয়েছেন। ছেলে মায়ের সঙ্গেই থাকছেন। সাবার সন্তান পালনের ক্ষেত্রে তাঁর মায়ের অবদানও বেশ। যখন শুটিং কাজে ব্যস্ত থাকলে নানীর সঙ্গে সময় পার করে স্বরবর্ণ।
সারিকা
গত বছরের নভেম্বরেই স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় সারিকার। ২০১৪ সালের আগস্টে ব্যবসায়ী মাহিম করিমের সঙ্গে বিয়ে সেরেছিলেন সারিকা। বিয়ের এক বছরের মাথায় সারিকার কোলজুড়ে আসে এক কন্যাসন্তান। মেয়ের নাম রেখেছেন শাহরিশ আন্নাহ। ডিভোর্সের পর সন্তানকে নিয়েই তার পৃথিবী সাজিয়েছেন। অভিনয়ে নিয়মিত হলেও সন্তানকে যথেষ্ট সময় দেন সারিকা।
সালমা
এ বছরের শুরুর দিকে সাত বছরের সংসারের ইতি টানেন কন্ঠশিল্পী সালমা। বর্তমানে সালমা তার মেয়ে স্নেহাকে নিয়ে নিজের পরিবারের সঙ্গে মোহাম্মদপুরে আছেন।এভাবেই বাকি জীবনটা কাটতে চান সালমা। তিনি বলেন ‘ আমাদের দুজনেরই সন্তান স্নেহা। ও আমার কাছে থাকে। এমন নয় যে ও তার বাবার কাছে যেতে পারবে না। কিন্তু আমারও তো একটা পরিচয় আছে এ সমাজে। আমি আমার মেয়েকে একা্ও মানুষ করতে পারবো। ডিভোর্সের পর আমি আরো গোছালো হয়েছি। এখন প্রতিটা কাজ গুছিয়ে করি। এখন যেমন গান করতে না সমস্যা হয় । তেমনি সন্তান পালন করতেও বেগ পেতে হয় না। পাশাপাশি তো আমার পড়াশুনাও চালিয়ে যাচ্ছি।’
শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি
তিন্নি-হিল্লোল প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন ২০০৬ সালে। দীর্ঘ পাঁচ বছর সংসার করার পর তাঁদের সংসার ভেঙ্গে যায়। তাঁদের ঘর আলো করে এসেছিলো মেয়ে ওয়ারিশা। কিন্তু তাকে নিয়েই নতুন জীবন শুরু করেছিলো তিন্নি। সে জীবন ছিলো ভয়ঙ্কর। মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকে মুক্তি নিয়ে নতুন সংসার গড়েন। সেখানেও এক কন্যা সন্তানের জননী হন। কিন্তু সে সংসারও টিকেনি। ফলশ্রুতিতে দুই মেয়েকে নিয়ে আবার একা হয়ে পড়েন তিন্নি। তবে এবার মেয়েদের প্রতি যত্নবান হয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন