তাসকিনকে নিয়ে মুখ খুললেন শাহাদাত
শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের উইকেট অনেকটা একই রকম এবং তা বেশ স্পিন সহায়ক। কিন্তু দুই দলের ১৬ টেস্টের বোলিং পরিসংখ্যান তুলে ধরছে ভিন্ন চিত্র। লঙ্কার বিপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলে ২৪ উইকেট নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীব। এমনকি কুমার সাঙ্গাকারা, দিলশানদের মাটিতে ৬ টেস্টে ১১ উইকেট নিয়ে তিনিই সেরা। অবশ্য তার পরই স্পিনার সাকিব আল হাসানের অবস্থান।
শাহাদাতের এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে থাকা পেসারদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের দলের বিপক্ষে গল স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টেস্ট সিরিজ। এরপর কলম্বোর পিসারা ওভালে বাংলাদেশের শততম টেস্ট। মুশফিকুর রহীম বাহিনীর অন্যতম সদস্য পাঁচ পেসার। দুই টেস্টে অবশ্য এত পেসার খেলানোর সম্ভাবনা নেই। তাহলে গল ও পিসারাতে কারা দলের পেস আক্রমণ সামলাতে পারেন!
কেমন হতে পারে তাদের পারফরম্যান্স? শ্রীলঙ্কার টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা থেকে দৈনিক মানবজমিনকে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কাতে পেসাররা ভালো করবে এটা আমি আশা করি। তবে কেবল সেখানে নয়, টেস্টে ভালো করতে হলে অবশ্য আক্রমণাত্মক বোলিং করতে হবে। যেমন ইয়র্কার মারা, ঘন ঘন বাউন্সার মারা, ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখা। টেস্টে আসলে পেসারদের সফল তখনই বলা হয় যখন তারা উইকেট বের করে দিতে পারে। কারণ এখানে উইকেট বের করতে না পারলেতো ব্যাটসম্যানের সুযোগ থাকে এক দুই দিন ব্যাট করার। এই দলে এমন বোলার আমি শুধু তাসকিন আহমেদকেই দেখছি।
শ্রীলঙ্কাতে শাহাদাত সর্বশেষ খেলেন ২০১৩ সালে গল টেস্টে। তবে ম্যাচের দুই ইনিংসে পেয়েছিলেন মাত্র ১টি উইকেট। তবে ২০০৫ সালে নিজের প্রথম ম্যাচে শাহাদাত ছিলেন দুর্দান্ত। পিসারা ওভালে প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট নেন আর দ্বিতীয় ম্যাচে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। এবার এই দুই ভেন্যুতেই টেস্ট খেলবে মুশফিক বাহিনী। যেখানে খেলার দারুণ অভিজ্ঞতা আছে শাহাদাতের। গলের উইকেট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি শেষ গলে খেলেছি ২০১৩ সালে। সেখানে তখন যে উইকেট দেখেছি তা একেবারে ফ্লাট ছিল। পেসারদের জন্য কিছুই ছিল না উইকেটে। তবে এখানে পেসাররা ভালো করতে পারবে না তা নয়।
আমাদেরতো স্টেইন, মিচেল স্টার্কের মতো বোলার নেই। তারাতো গতি, সুইং সব ঠিক রেখে বল করে লাইন ও লেন্থে। তবে এখানে তাসকিন সফল হতে পারে। কারণ ওর কিন্তু জোরের উপর বল করার ক্ষমতা আছে। গলের উইকেটের পেসাররা মার খেলেও যদি লাইন লেন্থ ঠিক রেখে বল করতে পারে তাহলে সফল হবে। তবে কৌশলও অবলম্বন করতে হবে। আর এখানে পেসারদের কাজ হবে স্পিনারদের সাপোর্ট দেয়া। সাকিব আছে, মিরাজ আছে, তার সঙ্গে পেসাররা যদি কিছু উইকেট বের করে দিতে পারে তাহলে আমি বলবো গতবারের মতো এবারও আমরা গলে ভালো করবো।’
অন্যদিকে পিসারা ওভালে বাংলাদেশের পেসারদের সম্ভাবনা নিয়ে রাজীব বলেন, ‘আমি এখানে ৪টি টেস্ট খেলেছি। প্রথম ম্যাচ থেকেই আমি এখানকার উইকেটে যা দেখেছি তা হলো প্রথমদিন এখানে পেসাররা সফল হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে পিচ ফ্লাট হয়ে যায়। শেষ দিকে স্পিনাররাই ভালো করে। যেমন প্রথম আমি বোলিং করেছি ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে। পেয়েছি ২ উইকেট। আর দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাট করতে নেমেছিল। প্রথম দিন আমি ও রাসেল উইকেটের সুবিধা নিয়ে ৪টি করে উইকেট নিয়েছিলাম। আমি এখানে শেষ খেলি ২০০৭ সালে। অনেক বছর হয়ে গেছে সব কিছু ঠিক থাকলে এখানে আগে বল করলে পেসাররা সুবিধা করতে পারবে বলেই বিশ্বাস করি।’
দলের পাঁচ পেসারের মধ্যে দুই টেস্টেতো আর সবার খেলার সুযোগ নেই। বিশেষ করে শাহাদাত মনে করেন গলে দুই জনের বেশি পেসার নিয়ে খেলা হবে বোকামি। তাহলে কারা হতে পারেন সেই দুই পেসার? শাহাদাত বলেন, ‘আমি প্রথমেই এগিয়ে রাখবো তাসকিনকে। এরই মধ্যে ও দারুণ করতে শুরু করেছে। যদি ও যেভাবে বল করে সেটি করতে পারে তাহলে প্রথম পছন্দ তাসকিন। এরপর মোস্তাফিজ যদি ফিট থাকে তাহলে তাকে খেলানো যেতে পারে। তবে আমি তার চেয়েও এগিয়ে রাখবো রাব্বি ও রুবেলকে। রাব্বি কম ম্যাচ খেললেও ভালো বল করছে। আর রুবেলকে খেলালে তার অভিজ্ঞতা দিয়ে ভালো করবে।’ যেখানে সবার প্রত্যাশা মোস্তাফিজ ভালো করবে। সেখানে কেন তাকে শাহাদাত এগিয়ে রাখছেন না? তার ব্যাখ্যাতে তিনি বলেন, ‘মোস্তাফিজ খারাপ করবে তা বলছি না। আমিতো ইনজুরি থেকে ফিরে মাঠে নেমে দেখেছি কী অবস্থা থাকে মনের। তাই বলছি ওর কাছে বেশি আশা করা ঠিক হবে না।’
এই সফরে দলে নেই কুমার সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনে, দিলশান, মুরালির মতো লঙ্কার গ্রেট ক্রিকেটাররা। শাহাদাতের মতে তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিলেন যমদূতের মতো। অনেক ম্যাচই বাংলাদেশের মুখ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন তারা। তাই এই গ্রেটদের না থাকাকে আলাদা একটা সুযোগ হিসেবেই দেখছেন তিনি। শাহাদাত বলেন, ‘সাঙ্গাকারা, মুরালিদের বিপক্ষে খেলেছি। এরা এখন দলে নেই। আমি বলবো এমন ক্রিকেটার সহজেই দলে আসে না। মুরালির পর কি তার মতো কোনো বোলার এখনো এসেছে? কত ম্যাচ যে শুধু তারাই জিতিয়ে দিয়েছেন হিসাব নেই।
এবার তারা নেই বলে আমি মনে করি এটি আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ।’ তবে এখনো আতঙ্কের নাম হেরাথ রয়ে গেছেন, যিনি এবার দলনেতাও। তাকে ঠেকানোর বিষয় নিয়ে শাহাদাত বলেন, ‘আমি মনে করি না শুধু হেরাথকে নিয়ে ভাবার কিছু আছে। তামিম, মুশফিকরা ওকে সামলে নিতে পারবে। তবে দলে অনেক নতুন মুখ আছে, তারাও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। আমি বলবো চিন্তা করতে হবে সবাইকে নিয়ে। পরিকল্পনা করতে হবে আর সেটি মাঠে প্রয়োগ করতে হবে। তাহলে আমরা সফল হবো।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন