তিন বছর সময় চেয়ে বিজিএমইএ’র রিভিউ
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ’র ১৮ তলা অবৈধ ভবন ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আপিল বিভাগের রায় স্থগিত করে বহুতল ভবনটি ভাঙার জন্য তিন বছরের সময় চাওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ৮ নভেম্বর বিজিএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।
তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিভিউ দাখিল করা হয়েছে।
রিভিউতে কি কি চাওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সব পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা আইনজীবীদের বলেছি। তারা আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও জানান, আগামী ১৭ ডিসেম্বর বোর্ড মিটিংয়ে সবাই মিলে আলোচনা করার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো।
আদালত সূত্রে জানা গেছ, শুধু ভবন ভাঙা ঠেকাতে নয় রিভিউ পিটিশনে ভবন ভাঙার জন্য তিন বছর সময় প্রার্থনা করা হয়েছে। রিভিউতে বলা হচ্ছে, তৈরি পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
রফতানি আয়ের ৮০ ভাগই এ খাত থেকে আসছে। এ অবস্থায় ভবনটি ভাঙার নির্দেশ সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। রিভিউতে বলা হয়েছে, ভবনটি সরানোর জন্য কমপক্ষে তিন বছর সময় যাতে দেয়া হয়, সেই আবেদনও জানানো হয়েছে। তারা আশা করছেন, সর্বোচ্চ আদালত সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমাদের আবেদন মঞ্জুর করবেন।
হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভূমির মালিকানা স্বত্ব না থাকা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও জলাধার আইন ভঙ্গ করায় বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ওই দিন বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে এই ভবন ভাঙতে নির্দেশ দেয়া হয়।
রায়ে বলা হয়, আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষের। আইন অনুযায়ী রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি (সার্টিফাইড কপি) হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনার আবেদন) করার নিয়ম। ওই নিয়ম অনুযায়ী তারা সময়ের মধ্যেই রিভিউ করেছেন।
রায়ে বলা হয়, ভবন ভাঙার সব ব্যয়ভার বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে। এছাড়া এই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধের বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই ভবনের জায়গাসহ রাজধানীর কারওয়ানবাজারের বেগুনবাড়ি-হাতিরঝিল প্রকল্প মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে হবে বলে আদালত রায়ে বলেন।
গত ২ মে আপিল বিভাগ বিজিএমইএ’র লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, এছাড়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন এই মামলায় হাইকোর্টে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োজিত অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
রায়ে আদালত বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্পের সৌন্দর্যকে বিনষ্ট করতে অবৈধভাবে এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল এক রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে বিজিএমই ভবন ভাঙার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের বিচারপতি এএইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
২০১১ সালে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আপিল বিভাগে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৫ এপ্রিল চেম্বার আদালত হাইকোর্টের ওই রায়ের ওপর প্রথমে ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেন। এরপর কয়েকবার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরে ১৯ মার্চ হাইকোর্ট ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করেন।
হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএ’র সভাপতি ২০১৩ সালের ২১ মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন