তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় এ বার্তা পাঠানো হচ্ছে। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দলীয় প্রধানের এ বার্তা তৃণমূলে পৌঁছে দেবেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নেতারা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গাইবান্ধায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং কুষ্টিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় অনেকটাই চাপের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ। এ ধরনের ঘটনায় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি দলের মৌলিক নীতিও ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হচ্ছে।

দলের একাধিক সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জানান, স্থানীয় রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ঘায়েল করতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়গুলোকে পুঁজি করছেন তৃণমূল নেতারা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারে প্রবীণ নেতাদের ওপরও হমলা হচ্ছে। এসব ঘটনা এড়াতেই কারো ব্যক্তিগত ‘বিতর্কিত’ কর্মের দায় নেবে না দল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও ঝিনাইদহের শৈলকুপার ঘটনা তৃণমূলে নেতাদের ব্যক্তি স্বার্থের বহিঃপ্রকাশ। এ ঘটনায় নেত্রী ক্ষুব্ধ। গারো সম্প্রদায়ের ওপর প্রশাসনের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনাও সরকারকে চাপে ফেলেছে। তাই কোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের দায় দল নেবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এদিকে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লী পরিদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। পরিদর্শন শেষে দলীয় প্রধানের কাছে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

জানা গেছে, সারাদেশে আকষ্মিকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা ঘটনার অধিকাংশতেই স্থানীয় নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা ইতোমধ্যেই স্থানীয় নেতাদের সতর্কবাণী দিয়ে রেখেছেন। ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, কড়া নির্দেশনা আছে। এ ধরনের ঘটনায় দলীয় লোক জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি সরকারও আইনগত ব্যবস্থা নেবে। সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে কেউ যেন ফায়দা লুটতে না পারে সেজন্য তৃণমূলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।