তেতো করলা খাদ্যগুনে মোটেই তেতো নয়!
প্রায় সারাবছর বাজারে তেতো স্বাদের সবজি করলার প্রাপ্তি মেলে। ভাজি, ভর্তা বা ঝোলে করলার কদর বেশ। তেতোর কারণে অনেকে আবার খেতেও চায় না। তবে স্বাদের চেয়ে ওষুধের গুণই করলাকে সবার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান অঞ্চলের আদিবাসীরা বহু বছর ধরেই করলাকে ডায়াবেটিস, পেটের গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, জন্ডিস ইত্যাদিতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এশিয়া অঞ্চলে হাজার বছর ধরে এটি ওষুধের গুণেভরা সবজি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় রয়েছে খাদ্যশক্তি ১৭ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেটস ৩.৭০ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম, ফাইবার ২.৮০ গ্রাম, ফোলেট ৭২ মাইক্রো গ্রাম, নিয়াসিন ০.৪০০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৪৭১ আইইউ, ভিটামিন সি ৮৪ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৫ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ২৯৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৭ মিলিগ্রাম।
পুষ্টিগুণের বিবেচনায় করলা অনেক সমৃদ্ধ। বড় ধরনের রোগ সারাতে করলায় লুকিয়ে আছে অসাধারণ গুণ। নিচে রইল তেতো করলার গুণ সম্পর্কে।
- করলা অ্যাডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাকটিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ নামক এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোতে সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে শরীরের কোষের গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়াও বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে।
- করলায় আছে যথেষ্ট লৌহ, ভিটামিন এ, সি এবং আঁশ। এন্টি অক্সিডেন্ট-ভিটামিন এ এবং সি বার্ধক্য বিলম্বিত করে। এছাড়া করলায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা সৃষ্টিকারী লুটিন এবং ক্যানসার প্রতিরোধকারী লাইকোপিন। করলায় আছে ‘ই কোলাই’ নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে জীবাণুনাশী ক্ষমতা।
- করলা রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগ্লিসারাইড বা টিজি কমায় আর বাড়ায় ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল। এতে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন করলা গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং প্রতিরোধ হয় রক্তনালিতে চর্বি জমার কারণে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা।
- খাবারে অরুচি দেখা দিলে, অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগার প্রবণতা বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে এক চা চামচ করে ফলের রস সকাল ও বিকেলে খেলে খাবারে রুচি বাড়বে।
- ম্যালেরিয়ায় করলা পাতার রস খেলে খুব উপকার মেলে। এছাড়া ম্যালেরিয়ার রোগীকে দিনে তিনটে করলার পাতা ও সাড়ে তিনটি আস্ত গোলমরিচ এক সঙ্গে থেঁতো করে নিয়ম করে ৭ দিন খাওয়ালে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। করলার পাতার রস খেলে জ্বর সেরে যায়। এছাড়া শিশুদের শরীর থেকে কৃমিও দূর হয়।
- দেহ থেকে বাতব্যথা তাড়াতে চার চা-চামচ করলা বা উচ্ছে পাতার রস একটু গরম করে দেড় চা চামচ বিশুদ্ধ গাওয়া ঘি মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খেতে হবে। এভাবে কিছুদিন খেলে সুস্থ হবেন সহজেই।
- শরীর কামড়ানি, জল পিপাসা বেড়ে যাওয়া, বমিভাব হওয়া থেকে মুক্তি পেতে উচ্ছে বা করলার পাতার রস উপকারী। এক চা চামচ করলা পাতর রস একটু গরম করে অথবা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার করে খেলে উপকার পাওয়া যায়৷
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন
জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন