তোমরা কিসের ছাত্র?—ছাত্রদলকে খালেদা জিয়া
ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে গিয়ে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের শাসালেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি যে ইলেকশন কমিশনে প্রস্তাব দিয়েছি, তোমরা কি পড়েছ সবাই? সবাই পড় নাই। তাইলে তোমরা কিসের ছাত্র? কেন ছাত্রদল কর বা কেন তোমরা যুবদল করবে? বস্তির ছেলেপেলে এনে দল করতে যাবে না। সংখ্যা আমি দেখতে চাই না। আমি দেখতে চাই ভালো, উপযুক্ত ছেলেপেলে আসে কি না।’
আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল তাদের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ওই সমাবেশের আয়োজন করে। তাতে প্রধান অতিথি ছিলেন খালেদা জিয়া।
বক্তব্যের শুরুতেই ছাত্রদলের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এখন তিনি যখন বিভিন্ন জায়গায় যান, দেখতে পান ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ ইউনিটের নামে ‘উত্তর উত্তর, দক্ষিণ দক্ষিণ’—এভাবে স্লোগান দিতে থাকে। সংগঠনটির সাম্প্রতিক সময়ের স্লোগান নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন বিএনপির চেয়ারপারসন। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা কি বোঝাতে চাও? উত্তর উত্তর, দক্ষিণ দক্ষিণ, এটা কোন স্লোগান হলো? তোমরা ছাত্র নতুন নতুন স্লোগান তৈরি করবে। আগের দিনের ছাত্ররা নিজেরা স্লোগান তৈরি করত, পোস্টার করত। এখন তো তোমাদের পোস্টার করে দিতে হয়। তৈরি করে দেওয়ার পরও সে পোস্টারগুলো ঠিকমতো লাগে না। পড়ে থাকে।’
ছাত্রদের সমস্যা, শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থা, সরকারের দমন-পীড়ন, দুর্নীতি নিয়ে স্লোগান কেন ছাত্রদল দেয় না—সে প্রশ্ন রেখে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তার মানে তোমরা শুধু স্বার্থটা বোঝো।’
খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বিভিন্ন সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে থাকেন, ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’। বিষয়টি উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দয়া করে এসব স্লোগান দেবে না। যখন রাজপথে থাকার দরকার ছিল, তখন ছিলে না।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সুশৃঙ্খল থাকতে হবে। ন্যায় ও সত্যের পথে থাকতে হবে। সরকারের দমন-পীড়ন, দুর্নীতির কথা গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে দিতে হবে। পড়ালেখা করতে হবে। জিয়াউর রহমানের জীবনী পড়তে হবে।’ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমাদের জাগতে হবে, ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না।’
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘তোমরা আমার ছেলেমেয়ে। সেভাবে কাজ করতে হবে। না হলে কষ্ট পাব।’
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সরকারদলীয় সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যা ও খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতার ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই হত্যা বন্ধ করতে হবে। আমি আওয়ামী লীগ-বিএনপি কিছু বুঝি না। খালি বুঝি হত্যা বন্ধ করতে হবে। কোনো দলের লোককে হত্যা করা যাবে না। তারা মানুষ।’
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের বাড়িতে পুলিশ আগুন দিয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, বিএনপির আন্দোলনে যেসব জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো র্যাব-পুলিশ করেছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ তাদের সহযোগিতা করেছে।
খালেদা জিয়া দাবি করেন, বর্তমান সরকার স্বৈরাচারী সরকার। তারা দেশ ও তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে তারা নানা ধরনের আইন করছে। তারা বংশপরম্পরায় ক্ষমতায় থাকতে চায়। তিনি বলেন, বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে সময়মতো। তবে এখন অহেতুক আন্দোলন নিয়ে তিনি কিছু বলতে চান না।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ ছাত্রদলের সাবেক নেতারা বক্তব্য দেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন