থমকে আছে জজ মোতাহারের ‘দুর্নীতির’ অনুসন্ধান

মুদ্রা পাচার মামলায় তারেক রহমানকে বেকসুর খালাসের রায় দিয়ে দেশ ত্যাগ করা বিচারক মোতাহার হোসেনের ‘দুর্নীতির’ অনুসন্ধানে কোনো অগ্রগতি নেই।
দুই বছর আগে এই তদন্ত শুরু হলেও কোনো ফল দেখাতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলছেন, অনুসন্ধান এখনও ‘চলছে’।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মোতাহার হোসেন। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করেন তিনি। তবে এখন তিনি কোথায় আছেন- সে বিষয়ে হালনাগাদ কোনো তথ্যও নেই দুদক কর্মকর্তাদের কাছে।
ঘুষ হিসেবে আদায়ের ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিলেন মোতাহার হোসেন।
রায়ে মামলার অন্য আসামি গিয়াসউদ্দিন মামুনকে ৭ বছরের জেল ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেন তিনি।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহার হোসেন অবসরে যাওয়ার আগে এই রায় দিয়েই গোপনে দেশ ছাড়লে তাকে নিয়ে সন্দেহ করতে থাকেন অনেকে।
পরে এই মামলার আপিলে বিশেষ জজ মোতাহারের রায় উল্টে যায়। হাই কোর্ট মামুনের সাজা বহাল রাখার পাশাপাশি পলাতক তারেককেও ৭ বছর কারাদণ্ড দেয়, সেই সঙ্গে জরিমানা করে ২০ কোটি টাকা।
ওই রায়ের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নিম্ন আদালতে বিচারককে প্রভাবিত করে খালাস পেয়েছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক।
এদিকে তার আগে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে জজ মোতাহার এই রায় দিয়েছেন বলে সংবাদপত্রে খবর ছাপা হলে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঢাকার আদাবর এলাকায় মোতাহারের একটি বাড়ি, বসুন্ধরায় একটি প্লট এবং নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার হাটদোল গ্রামে নামে-বেনামে ৫০ বিঘা জমি থাকার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
বিদেশে সম্পত্তির মধ্যে মালয়েশিয়ায় একটি বাড়ি এবং মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাজ্যের একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ থাকার তথ্যও জানতে পারে দুদক।
বিশদ জানতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি থেকে বিদেশে চিঠি পাঠানোর তৎপরতা শুরু করে দুদক।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর মাধ্যমে প্রথমে ইন্টারপোলে চিঠি পাঠানো হয়। পরে ইন্টারপোল দুদকের ওই চিঠি মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, আমিরাত ও যুক্তরাজ্যে পাঠায়।
চিঠিতে এই বিচারকের উপস্থিতি ও ওই সব দেশে তার অর্থ সম্পদ আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই বিষয়ে জানতে সুইজারল্যান্ডের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়।
অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের কাছে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে বলে জানান দুদকের এক কর্মকর্তা।
দুদকের কার্যবিধি অনুযায়ী যে কোনো অভিযোগ প্রথমে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়; অনুসন্ধানে মামলা করার মতো উপাদান পাওয়া গেলে মামলা করা হয়। এরপর তদন্ত করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় আদালতে।
মোতাহারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান শুরুর দুই বছর গড়ালেও কোনো মামলা হয়নি।
দুদকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “তথ্য জানতে চেয়ে যে চিঠিগুলো বিদেশে পাঠানো হয়েছিল, সেগুলোর উত্তর এখনও আসেনি। এ কারণে অনুসন্ধানের গতিও মন্থর। উত্তর এলেই অনুসন্ধান গতি পাবে।”
এই চিঠিগুলোর উত্তর কবে নাগাদ আসতে পারে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর কেউ দিতে পারেননি।
সোমবার যোগাযোগ করা হলে দুদক সচিব আবু মোস্তফা কামাল বলেন, “জানানোর মতো উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য আপাতত আমাদের হাতে নেই।
“তবে আমাদের অনুসন্ধান চলছে। উল্লেখযোগ্য কোনো কিছু ঘটলে সবাই জানতে পারবেন।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন