শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

‘দরজা খোলো, আমি মারা যাচ্ছি’

নাম তার ফিরোজা। সাত বছর বয়সী এই কন্যাশিশুটিকে আজ অনেকদিন হলো উত্তপ্ত লোহা দিয়ে পেটানো কিংবা অন্ধকার করে আটকে রাখার মতো অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে না। একটি শিশু অধিকার সংস্থা অনেক চেষ্টার ফলে তাকে গুজরানওয়ালার কাঙ্গিওয়ালা নামক স্থানের নিকটবর্তী একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। এরপর থেকে ফিরোজা ওই সংস্থার কাছেই আছে। ফিরোজা হলো সেই অনেক কন্যাশিশুর মধ্যে একজন যাকে অবহেলা করা সম্ভব হয়নি। উল্টো সমাজের আরও অনেক সুবিধাবঞ্চিত কন্যাশিশুর মুখপাত্র হয়ে দেখা দিয়েছে ফিরোজা।

কানাডা নিবাসী সমাজকর্মী মুর্তজা হায়দার ফিরোজার করুণ আর্তনাদ অবহেলা করতে পারেননি। তাই নিজের চেষ্টায় যতটুকু সম্ভব তাই করেছেন ফিরোজার জন্য। তিনি ওই বাচ্চা মেয়েটির জীবনের ওই নিষ্ঠুর অধ্যায় নিয়ে লিখেছেন পাকিস্তানের বিখ্যাত দ্য ডন পত্রিকায়। ওই পত্রিকায় ফিরোজার ঘটনা প্রকাশ পাবার পর বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন আসা শুরু হয় বাচ্চাটিকে উদ্ধার প্রশ্নে। এমনকি এক পর্যায়ে ফোন করেন রাওয়ালপিন্ডির শিশু অধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা মিস. কুবরা মালিক। তিনি মুর্তজাকে এই বলে আশ্বাস দিলেন যে, ওই শিশুটিকে উদ্ধার করা হবে। কিন্তু কিভাবে উদ্ধার হলো ফিরোজা?

পেশোয়ার রোডের পার্শ্ববর্তী একটি অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো ফিরোজা। প্রতিবেশিরা সবাই বহুবার তাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে দেখেছেন। অনেকে এমনও দেখেছেন, যে পরিবারটি ফিরোজাকে আশ্রয় দিয়েছিল সেই পরিবারের সদস্যরা অমানুষিক কায়দায় তাকে অত্যাচার করছে। কেউই বাচ্চাটিকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেনি। প্রতিবেশিরা ভেবেছিল ওর নাম রশিদা এবং বয়স ১২ বছর। কিন্তু তারা জানতো না, এই ভাগ্যপিড়ীত মেয়েটিকে সাহায্যের জন্য তারা কার কাছে সাহায্য চাইবে। কারণ স্থানীয় নিরীহ মানুষগুলো পুলিশকে যতটা ভয় পায় তার চেয়েও স্থানীয় হাঙ্গামাবাজদের বেশি ভয় পায়।

মুর্তজার জবানিতে, ‘আমি ওই মেয়েটির নাম জানতাম না, অথবা সে দেখতে কেমন তাও জানতাম না। আমি যা জানতাম তা হলো, রওয়ালপিন্ডি ক্যান্টনমেন্টের পাশেই একটি অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাড়িতে একটি মেয়ে অবরুদ্ধ আছে এবং ভয় আর কান্না মেশানো গলায় সে আর্তনাদ করছে। একদিন রাতে দেখতে পেলাম স্থানীয় পুলিশের একটি ছোটো দল ওই বাড়িটির সামনে এসে দাড়ালো কিন্তু তারা বাড়ির ভেতর গেল না। কিন্তু একদিন পরেই মিস. মালিক এবং তার সহকর্মীরা পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িটিতে যান, কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা ফিরোজাকে পেলেন না।’

যখন আমরা অসহায়ের মতো মূল রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলাম তখন আমাদের সহায় হলো এক বয়স্ক নারী। তিনি আমাদের সামনে এসে দাড়ালেন এবং জানালেন যে প্রতিবেশি হিসেবে তিনি সাক্ষী দিতে রাজি আছেন যে তারা ওই মেয়েটিকে অত্যাচার করে। ওই পরিবারটি মেয়েটিকে পাশেই কোনো বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছে সেটাও তিনি জানালেন। ঠিক ওই সময় আরও অনেক প্রতিবেশি রাস্তায় নেমে আসলো। প্রায় প্রতিটি ঘরেই ফিরোজাকে খুঁজে দেখা হলেও, কোথাও তাকে পাওয়া গেল না। মিস. মালিক এবং তার সহকর্মীরা যখন ওই পরিবারটির সদস্যকে চাপ প্রয়োগ করতে শুরু করলো, তখনই জানা যায় ফিরোজাকে তারা গুজরানওয়ালার একটি পরিবারের কাছে রেখে এসেছে।

কয়েক মিনিটের মধ্যেই গুজরানওয়ালা অফিসে খবর চলে গেল এবং সেখানেও একটি সার্চ পার্টি বের হয়ে গেলে মেয়েটিকে খুঁজে বের করতে। শেষমেষ কাঙ্গিওয়ালার কাছে একটি বাড়িতে পাওয়া গেল ফিরোজাকে। অত্যাচারকারী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশ একটি এফআইআর করে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে। পরবর্তীতে পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে যে ফিরোজার বাড়ি আসলে সিন্দু প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে। তার পিতা-মাতা অর্থের বিনিময়ে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল।

পুলিশ এবং সমাজকর্মীদের কাছে ফিরোজা তার জীবনের সকল ঘটনা খুলে বলেন। তার মুখ থেকেই জানা যায় কিভাবে গৃহকর্ত্রী তাকে উত্তপ্ত লোহা দিয়ে পেটাতো এবং শীতল ঘরে আটকে রাখতো। অনেক কান্নাকাটি করে সাহায্য চাইলেও তাকে কেউ সাহায্য করতো না। রাতের পর রাত তার উপর চলতো অকথ্য নির্যাতন। পাকিস্তানে ফিরোজার ঘটনা শুধু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে শিশুশ্রমে তৃতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তান। তাই এরকম একটি দেশে ফিরোজাদের অবস্থা মোটেও যে ভালো হবে না, সেটা সহজেই বলে দেয়া যায়।

শুধু ফিরোজাই নয়, মুর্তজা যে সংস্থাটির দাড়স্থ হয়েছিলেন সেই সংস্থাটি এরকম আরও কয়েকটি কন্যাশিশুকে উদ্ধার করেছে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। এবং এই উদ্ধারকৃত শিশুদের বর্তমানে সরকারের নির্ধারিত নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে, ফিরোজাদের আশ্রয় কি শেষমেষ সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেই হবে? কারণ একটা নির্দিষ্ট বয়সের বাইরেতো ওই কেন্দ্রে থাকা যায় না, তাই যখন ফিরোজারা প্রাপ্তবয়স্ক হবেন তখন তাদের দায়িত্ব কে নেবে। এরকম নানান অনিশ্চয়তার ভেতর দোদুল্যমান জীবন কাটছে অনেক ফিরোজার। যদিও ফিরোজাকে উদ্ধার কাছে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের স্কুলিং কার্যক্রম শুরু করেছে, যেখানে এরকম শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হয় এবং সমাজের একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। হয়তো এমন একদিন আসবে আজকের এই সুবিধাবঞ্চিত ফিরোজারাই আগামীর বিশ্ব গড়বে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সিলেটে মোহসিন আহমেদ চৌধুরীর বাসভবনে হামলা ও ডাকাতি

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আওয়ামী লীগ নেতা মোহসিন আহমেদ চৌধুরীর সিলেট শহরেরবিস্তারিত পড়ুন

রাবিতে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ

রাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বর্তমান ওবিস্তারিত পড়ুন

ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন

  • আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
  • সিলেটের জঙ্গি নেতা আব্দুল বারি ও শামসু জামিনে মুক্ত
  • শামীম ওসমান থাকার গুজবে রিসোর্টের সামনে মানুষের ভিড়, সেনাবাহিনীর তল্লাশি
  • নরসিংদীতে সন্ত্রাসী হামলায় হার্ট এ্যাটাক হয়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
  • ধানমন্ডি ৩২-এ প্রদীপ প্রজ্বলন, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলা
  • ঢাকায় এক দিনে ৪ জনকে পিটিয়ে হত্যা
  • নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
  • কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
  • সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক