দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে জটিলতার মুখে ইসি
বাংলাদেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল থাকলেও কেবল নিবন্ধিত ৪০টিই সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।
আইন সংশোধনের পর আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শুধু এই দলগুলোকেই অংশ নিতে সুযোগ দেওয়ার পক্ষপাতি নির্বাচন কমিশন।
তাতে অনেক দলই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ হারাবে, যার মধ্যে কেউ কেউ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
যদি তারা আদালতে যান, তাহলে নতুন করে জটিলতার মধ্যে পড়তে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
এমনিতেই নভেম্বরে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হলে তার আগে বিধিমালা সংশোধন করতে হবে, যা নিয়ে চাপে রয়েছে ইসি।
দলীয় ভিত্তিতে হলে প্রার্থী মনোনয়ন কে দেবে, তাও এখনও স্পষ্ট করতে পারছে না ইসি।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে করতে আইন সংশোধনের প্রস্তাব সোমবারই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়।
পৌরসভা নির্বাচনে কাছাকাছি বলে অধ্যাদেশ জারি করে পৌরসভা নির্বাচন সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা হবে, যা পরে সংসদে উঠবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন আইন সংসদের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সংশোধন করা হবে।
এই আইন সংশোধন হলে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন নিয়ে নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গলের মতো প্রতীক নিয়ে প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে নামার সুযোগ পাবে।
এতদিন ধরে যোগ্য যে কেউ এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারলেও আইন সংশোধনের পর দলীয় প্রার্থীর বাইরে কারও ভোট করতে হলে সংসদ নির্বাচনের মতো কয়েকটি শর্ত পূরণে করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে।
ইসি বলছে, পৌরসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া হবে না। অর্থাৎ দলীয়ভাবে ওই ৪০টি দলই কেবল নির্বাচন করতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ মঙ্গলবার বলেন, “দলভিত্তিক স্থানীয় নির্বাচনের আইনটি পাস হলে নিবন্ধিত দলগুলোই নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থী দেবে। অন্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে।
“পৌর নির্বাচনের সময় রয়েছে আর দেড় মাস। এ সময়ের মধ্যে নতুন কোনো দলকে নিবন্ধন দেওয়ার ব্যাপারে আমরা চিন্তা করছি না।”
সম্প্রতি নিবন্ধন চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিএনডিপি। দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ না পেলে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, “অন্তত ২০টি পৌরসভায় প্রার্থী দেওয়ার আশা আমাদের। আমরা এখন নিবন্ধন পেলে নিজস্ব প্রতীক ডিশ এন্টেনায় (প্রস্তাবিত) প্রার্থী দিতে পারব।
“পৌর নির্বাচনের আগে নিবন্ধন না পেলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে, প্রয়োজনে আদালতের শরণাপন্ন হব।”
একই মনোভাব দেখান আরও কয়েকটি দলের নেতা, যাদের ইসিতে নিবন্ধন না থাকলেও পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ রয়েছে।
পৌরসভার আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ আগামী সপ্তাহের মধ্যে চাইছে ইসি। নির্বাচন পরিচালনাকারী এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, অধ্যাদেশটি যত দ্রুত হাতে পাবেন তারা, তত দ্রুত বিধিমালা সংশোধনে হাত দিতে পারবেন তারা।
নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ মনে করেন, সংসদ নির্বাচনের জন্য যাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে সংশোধিত স্থানীয় সরকার আইনেও তাদের অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হবে। সেই সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সংসদে যেমন আগ্রহীদের নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন তালিকা দেওয়ার বিধি রয়েছে, তা স্থানীয় নির্বাচনেও প্রযোজ্য হবে।
“সংসদের মতো স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়েও নিবন্ধনের বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা থাকবে। এজন্য সংশোধিত আইনটি আমাদের হাতে পেতে হবে, সেখানে যেভাবে বলা হবে, সেভাবে করব আমরা।”
সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নে তিন বছরের সদস্য পদ থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রার্থী ঘোষণা করা হয় দল থেকে।
পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে কিংবা কাউন্সিলর পর পদে দলীয় প্রার্থী কে মনোনয়ন দেবে- কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা কমিটি, পৌর কমিটি, কাউন্সিলরের ক্ষেত্রে কি ওয়ার্ড কমিটি; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
স্থানীয় নির্বাচনে মন্ত্রী, সাংসদ ও সমমর্যাদার ব্যক্তির প্রচারে অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এখন কী হবে, তাও ভাবতে হচ্ছে ইসিকে।
এসব বিষয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সংসদ নির্বাচনের আদলেই সব কিছু বিবেচনা করছেন তারা।
“আরপিও-তে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা, কোন পর্যায়ের নেতারা প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, নির্বাচনী আচরণ বিধিমালাও সঙ্গতিপূর্ণ রেখে সব কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। আইনের সংশোধন এলেই বিধিমালায় যুক্ত সব জানানো হবে। আগে আইন হোক, তারপর দেখা যাবে।”বিডি নিউজ২৪
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীবিস্তারিত পড়ুন
হাইকোর্টে ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত
হাইকোর্ট বিভাগে ১২ জন বিচারপতিকে আপাতত প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেওয়াবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁকা গ্রাফিতি হেঁটে দেখলেন ড. ইউনূস
জুলাই ও আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়বিস্তারিত পড়ুন