দিল্লি ধর্ষণ মামলার দোষী কিশোরের মুক্তি নিয়ে বিতর্ক
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে তিন বছর আগেকার চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষী এক কিশোরের আসন্ন মুক্তি নিয়ে প্রবল আইনি ও সামাজিক জটিলতা তৈরি হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নির্ভয়া নামে পরিচিত ওই ধর্ষিতা-র বাবা-মা দাবি তুলেছেন অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে যেন কারাগারেই আটক রাখা হয়।
বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও একই দাবি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, তবে আদালত আজ তাদের রায় মুলতুবি রেখেছে।
কিন্তু আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ওই কিশোরকে তিন বছরের বেশি জেলে আটকে রাখা সম্ভব নয়, উচিতও নয়।
২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির রাজপথে নির্ভয়া নামে পরিচিত যে তরুণীর গণধর্ষণ সারা পৃথিবীতে আলোড়ন ফেলেছিল – সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত একজনের তিন বছরের সাজার মেয়াদ ফুরোচ্ছে এ সপ্তাহেই।
ওই ঘটনার সময় তার বয়স আঠারোর কম হওয়ায় তার বিচার হয়েছে জুভেনাইল আদালতে, আর সেখানে সর্বোচ্চ সাজাও মাত্র তিন বছরের। এখন ওই কিশোরের মুক্তির আগে সরকারকে এক জটিল সমস্যায় ফেলে দিয়েছেন নির্ভয়ার বাবা-মা।
নির্ভয়ার বাবা বলছেন, ‘প্রশ্নটা নাবালক বা প্রাপ্তবয়স্কর নয়। প্রশ্ন হল, ও যে ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ করেছে তাতে সে বাইরে এলে সমাজে ওই বয়সীদের ওপর কী প্রভাব পড়বে সরকার কি তা ভেবে দেখেছে? আমরা তো শুনেছি, সংশোধনাগারের ভেতরেও সে জেহাদি আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।’
পাশাপাশি নির্ভয়ার মা-ও বলেছেন, তাদের বিশ্বাস হাইকোর্ট শেষ পর্যন্ত ওই কিশোরের মুক্তি আটকে দেবে।
এই দাবিতে নির্ভয়া-র বাবা-মার পাশে দাঁড়িয়ে হাইকোর্টে একটি রিটও করেছেন বিজেপি নেতা ও আইনজীবী সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
তাঁর বক্তব্য, দোষী সাব্যস্ত ছ’জনের মধ্যে সবচেয়ে নৃশংস ভূমিকা ছিল এই কিশোরেরই – সেই নির্ভয়ার যৌনাঙ্গ দিয়ে লোহার রড ঢুকিয়ে তার শরীরের অন্ত্র ও নানা অংশ বের করে দিয়েছিল – ফলে এত তাড়াতাড়ি সে ছাড়া পাবে এটা কিছুতেই মানা যায় না।
মি স্বামীর কথায়, ‘এ তো এক পশু – একে রাখা উচিত চিড়িয়াখানায়। নাবালকদের জন্য দেশে যে আইন আছে তার মুশকিল হল সেটা বানানো হয়েছে সাইকেল চুরি বা বেকারি থেকে কেক চুরির জন্য – এরকম ঘৃণ্য ধর্ষণের জন্য নয়। আইনে বলা নেই তিন বছরেও না শুধরোলে এই অপরাধীদের নিয়ে কী করা হবে। আমি চাইব সরকার যেন একে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে ফের জেলে পোরে।’
অভিনেত্রী এমপি জয়া বচ্চন থেকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী মানেকা গান্ধী অনেকেই এই কিশোরের আশু মুক্তির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন – কিন্তু সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও সরকারের ওই কিশোরকে মুক্তি দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই বলেই আইনি বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
দিল্লিতে নাবালকদের পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করে প্রয়াস, তার অধিকর্তা বিশ্বজিৎ ঘোষাল মনে করেন একজন নাবালক যত বড় অপরাধই করুক – সমাজে তাদের ফিরিয়ে আনা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই।
নির্ভয়ার ধর্ষণকারী ওই কিশোরকে মুক্তির পর কোনও এনজিও-র তত্ত্বাবধানে রাখা যায় কি না, সরকার সে প্রস্তাবও বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। বিশ্বজিৎ ঘোষাল অবশ্য মনে করেন এই যুবককে নতুন পরিচয় দিয়ে বাঁচতে সাহায্য করা উচিত।
এই ধর্ষণকারীর মুক্তি নিয়ে ভারতে জনমত যে এখন থেকেই দুভাগ হয়ে গেছে সে ইঙ্গিত খুবই পরিষ্কার।
এখন দিল্লি হাইকোর্ট শেষ মুহুর্তে হস্তক্ষেপ না-করলে এ সপ্তাহেই সে জেল থেকে বেরিয়ে আসবে – আর উসকে দেবে সেই পুরনো বিতর্ক, একজন নৃশংস ধর্ষণকারী আদৌ নাবালক হতে পারে কি
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন