দুই গৃহবধূকে ধর্ষণ : দুই সোর্স আটক
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি ডাকাতি মামলায় রিমান্ডে থাকা আসামিকে নির্যাতনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার দুই স্ত্রীকে পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) এবং দুই সোর্সের ধর্ষণের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের দুই সোর্স নজরুল ও শুভকে আটক করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে বুধবার বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইও-১) মামুনুর রশিদ মন্ডল।
একটি ডাকাতি মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার ইকবালকে গত ২৯ আগস্ট গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩১ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে মামলায় গ্রেফতারকৃত ইকবালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনের পর তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কারাগারে নেয়া হয়। ওইদিন রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই আতাউর রহমান ও তার দুই সোর্স আসামিকে মারধরের ভয় দেখিয়ে তার দুই স্ত্রীর কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দুই স্ত্রী ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই শর্ত জুড়ে দিয়ে দুই স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
ওই দুই নারী ও তাদের আইনজীবী বিষয়টি স্বীকার করলেও পুলিশের ভয়ে ও চাপে রয়েছেন। তবে অভিযুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করলেও হাসপাতালের ডাক্তার জানিয়েছেন, দুজন নারী এই ধরনের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রিমান্ডে থাকা ব্যক্তিকে আদালতে পাঠানো হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এ সময় ধর্ষণের শিকার দুই স্ত্রীকে আদালতপাড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
তারা জানান, আইনজীবী মজিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সুপারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিলের কাগজপত্র তৈরি করে রাখলেও পুলিশের ভয়ে জমা দিতে সাহস পাননি তারা। বিকেলে দুই স্ত্রীকে তাদের শ্বশুর নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তবে সেখানকার চিকিৎসক মামলা ও জিডি করা ছাড়া এ ধরনের কোনো ঘটনায় পরীক্ষা করাতে অনীহা প্রকাশ করেন।
জানতে চাইলে এসআই আতাউর রহমান জানান, ঘটনাটি মিথ্যে। আমার সঙ্গে কারো কোনো কথা কিংবা লেনদেনের আলাপ হয়নি। তবে নজরুল ও শুভ নামের যে দুই সোর্স আছে তারা আমি ছাড়া আরো পুলিশ কর্মকর্তার সোর্স হিসেবে কাজ করেন।
এদিকে আইনজীবি মজিবুর রহমান জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে তার চেম্বারে আসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম ও এসআই ওমর ফারুক। পরে তারা ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে দুই স্ত্রীকে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে যান।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ সোর্স নজরুল ওরফে তোতলা নজরুল ও শুভ এখন থানায় আটক রয়েছেন। তবে কি কারণে তাদেরকে আটক রাখা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানেন না তিনি।
জেলা সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানান, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে পরে কথা বলবেন।
জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিষয়টি জানা যাবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন