বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘হিরো ৪২০’। বাংলাদেশের সৈকত নাসির ও কলকাতার সুজিত মণ্ডলের পরিচালনায় ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ১৯ ফেব্রুয়ারি। ছবিতে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া, কলকাতার ওম ও রিয়া সেন। ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে নুসরাত ফারিয়া আলাপ করেছেন আমাদের সঙ্গে।

প্রশ্ন : ‘হিরো ৪২০’ ছবিতে আপনার চরিত্রের নাম রাই। রাই চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য নাকি আপনার গ্ল্যামার কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল?

উত্তর : একদম তাই। যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা হয়তো এরই মধ্যে বুঝে গেছেন ছবির শুরুতে রাই দেখতে সুন্দর থাকে না। কিন্তু যখনই সে প্রেমে পড়ে, ঠিক তখনই তার চেহারা সুন্দর হয়ে যায়। চরিত্রের প্রয়োজনে শুরুতে আমাকে নন-গ্ল্যামার দেখানো হয়েছে। বিষয়টি আমি খুব উপভোগ করেছি। পুরো চরিত্রের মধ্যে ডুবে ছিলাম।

প্রশ্ন : আপনার কি মনে হয়, এ সময়ের রাইদের মধ্যেও এ রকম ঘটে?

উত্তর : সত্যিই তাই। আমি বিশ্বাস করি, প্রেমে পড়লে মেয়েরা সুন্দর হয়ে যায়।

প্রশ্ন : ‘হিরো ৪২০’ তো প্রেমেরই ছবি। পর্দায় প্রেমের রসায়ন কতটুকু ফুটিয়ে তোলা গেছে?

উত্তর : ছবিতে আমার নায়ক ওম। ওর চরিত্রের নাম কৃষ। বলতে পারেন, অভিনয়ের সময় রাই ও কৃষ ফাটিয়ে প্রেম করেছিল। তাই এটা সম্ভব হয়েছে। তবে অভিনয়ের বাইরে ওম-ফারিয়া শুধু ভালো বন্ধু।

প্রশ্ন : ছবিতে নায়কের কোনো সাহায্য আপনার প্রয়োজন হয়েছিল কি?

উত্তর : বেশ কিছু জায়গায়। একটা ঘটনা বলি, আমার ওয়াটার ফোবিয়া আছে। অন্যদিকে আমি সাঁতারও জানি না। ছবির একটা গানের দৃশ্যে সুইমিংপুলে আমাদের নাচতে হয়েছিল। কিন্তু যখনই আমি নাচতে শুরু করলাম, তখন পানির ভয়ে আমার অবস্থা ভয়াবহ। ক্যামেরায় ভীতি চেহারা ফুটে উঠেছিল। ঠিক তখনই ওম আমাকে হেল্প করেছিল। পুরো গানে পানির ওপরে ও আমাকে ধরে রেখেছিল। এভাবে শুটিং শেষ করা হয়।

প্রশ্ন : ছবিতে রিয়া সেনের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

উত্তর : যখন কোনো নায়িকা শুনবে যে তাঁর বিপরীতে রিয়া সেন কাজ করবেন, তখনই বোধ হয় তিনি নার্ভাস ফিল করবেন। কারণ, রিয়া সেনের পরিবারের রক্তে মিশে রয়েছে অভিনয়। ছবিটিতে আমি প্রধান নায়িকা। তাই প্রথমে ভেবেছিলাম, কীভাবে কী হবে। পরে সবকিছু স্বাভাবিক লেগেছিল। রিয়া সেন যেমন চমৎকার অভিনেত্রী, ঠিক তেমনি একজন ভালো মনের মানুষও। শুধু রিয়া সেন নন, ইউনিটের সবাই আমাকে ছোট বাচ্চার মতো করে আদর করেছেন।

প্রশ্ন : হলে গিয়ে ‘হিরো ৪২০’ ছবিটি কতবার দেখা হয়েছে?

উত্তর : বেশ কয়েকবার। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, একসঙ্গে পুরো আড়াই ঘণ্টার ছবি এখনো দেখা হয়নি। এমনটা হয়েছিল ভয়ে।

প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

উত্তর : দুই বাংলায় ভালোবাসা পাচ্ছি অনেক। কলকাতার দর্শক চাওয়ার থেকে আমাকে বেশি ভালোবাসা দিয়েছেন। আর নিজের দেশের দর্শক-ভক্তের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত ভালোবাসা পেয়ে যাচ্ছি।

প্রশ্ন : ছবিটি দর্শক কেন দেখছেন বলে আপনার মনে হয়?

উত্তর : প্রথমত, ছবিতে চমৎকার একটি প্রেমের গল্প রয়েছে। দ্বিতীয়ত, ঝকঝকে এবং তকতকে একটি ছবি ‘হিরো ৪২০’।

প্রশ্ন : ছবিটিতে আপনার প্রিয় কোনো সংলাপ আছে কি?

উত্তর : আছে তো। ছবিতে আমি ওমকে বারবার একটা সংলাপ দিয়েছি ‘আর একটা মিথ্যা কথা বলবে না’। এই সংলাপটা এখনো আমার মনে গেঁথে আছে।

প্রশ্ন : আচ্ছা ছবিতে কাজ করতে গিয়ে ওমের কোন গুণ আপনাকে মুগ্ধ করেছে, যা আপনার মধ্যে নেই…

উত্তর : ওমের ধৈর্য অনেক, যা আমার নেই। যেকোনো কাজে ওম শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে রাখতে পারেন।

প্রশ্ন : আপনি আর ওম মিলে ২১ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় গিয়েছিলেন। কেমন ছিল সে অভিজ্ঞতা?

উত্তর : অসাধারণ। সবাই আমাদের দেখে এতটাই ভিড় করেছিল যে তখন একটু ভয় লেগেছিল। দর্শক এত ভিড় করবে, এটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। তবে বইমেলায় ঘোরার অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। অনেক দিন পর, মেলায় লেখক ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে আলাপ করেছিলাম কিছুক্ষণ।

প্রশ্ন : বাংলাদেশে কোন লেখকের লেখা আপনাকে মুগ্ধ করে?

উত্তর : হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর লেখা শুভ্র চরিত্রটি আমার প্রিয়।

প্রশ্ন : বর্তমান সময় কীভাবে কাটছে?

উত্তর : ‘হিরো ৪২০’ ছবির জন্য টানা ইন্টারভিউ দিয়ে যাচ্ছি চ্যানেল ও পত্রিকাগুলোতে। আসলে এখনো আমি রাইয়ের মধ্যেই ডুবে আছি।